‘বর্তমান সরকারের মেয়াদেই ভূমি অপরাধ আইন প্রণয়নের চেষ্টা চলছে’

ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেছেন, বর্তমান সরকারের মেয়াদেই ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন প্রণয়নের চেষ্টা হচ্ছে। এই আইনের খসড়া পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে যাচাই করে শিগগিরই সংসদে পাঠানো হবে। এই আইন প্রণীত হলে মানুষ অনেক কষ্ট থেকে বাঁচবে এবং ভূমি সেক্টরে আসবে পরিচ্ছন্নতা।

শনিবার (২৭ মে) চট্টগ্রামের জিমনেশিয়াম হলে ‘ভূমিসেবা সপ্তাহ ২০২৩’ উপলক্ষে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয় ও চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের  যৌথভাবে আয়োজিত ভূমি বিষয়ক এক জনসচেতনতামূলক সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

ভূমি মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই অনুষ্ঠানে চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার ড. মো. আমিনুর রহমান, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ,চট্টগ্রাম মহানগর ইউনিট কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মোজাফফর আহমদ এবং বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ চট্টগ্রাম জেলা ইউনিটের ভারপ্রাপ্ত কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা এ কে এম সরোয়ার কামাল বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

এ সময় ভূমিমন্ত্রী বলেন, ‘ভূমি মন্ত্রণালয় সরকারের একটি কর্মসম্পাদনকারী দক্ষ মন্ত্রণালয়। জনগণকে সেবা প্রদানে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষিত ডিজিটাল বাংলাদেশের শতভাগ সফল ব্যবহারকারী এই মন্ত্রণালয়। আমাদের মৌলিক সেবাগুলোর প্রায় সবগুলো টেকসই করে ডিজিটাইজ করা হয়েছে। গত ১৪ এপ্রিল থেকে কার্যকর শতভাগ ক্যাশলেস ভূমি উন্নয়ন কর সিস্টেমের মাধ্যমে গত ৪৩ দিনে সরকারের রাজস্ব আদায় হয়েছে ৩৫০ কোটি টাকা, যা বছরে ২০০০ কোটি টাকা হবে বলে আমরা আশা করছি।’

একইসঙ্গে চলমান ভূমি অধিগ্রহণে ক্ষতিগ্রস্ত প্রকৃত জমির মালিকদের দুর্দশা নিয়ে ক্রমবর্ধমান অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ভূমিমন্ত্রী এ বিষয়টি দ্রুত সমাধানের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ প্রদান করেন।

বাংলাদেশের জন্মে মুক্তিযোদ্ধাদের অপরিহার্য ভূমিকার কথা বর্ণনা করে মন্ত্রী বলেন, ‘এমনও এক সময় দেশে এসেছিল যখন একজন রাজাকারের গাড়িতে পতাকা উড়েছিল এবং একই সময় একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার হাতে হাতকড়া পড়ানো হয়েছিল। এই দুঃখজনক ঘটনা দেশ ও জাতির জন্য ছিল এক লজ্জাজনক অধ্যায়।’

সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে সাড়া দিয়ে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে দেশ স্বাধীন হয়েছে।’

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আজকের জনসচেতনতামূলক অনুষ্ঠান স্থলে বেশ কয়েকজন ভূমিসেবা গ্রহীতা স্মার্ট ভূমিসেবা গ্রহণে তাদের অভিজ্ঞতার কথা বলেছেন। অনুষ্ঠানে স্মার্ট ভূমিসেবার ওপরে একটি ডকুমেন্টারি উপস্থাপনা করেন চট্টগ্রামের বোয়ালখালীর সহকারী কমিশনার (ভূমি) আলাউদ্দিন। 

অনুষ্ঠান শেষে ভূমিমন্ত্রী প্রত্যাশী সংস্থার অনুকূলে অধিগৃহীত জমির খতিয়ান ও ভূমি অধিগ্রহণে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে ক্ষতিপূরণের চেক হস্তান্তর করেন এবং  অনুষ্ঠান প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত ভূমিসেবা প্রদর্শন স্টল পরিদর্শন করেন।

এ সময় ভূমিসেবা গ্রহীতা, চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্তরের ভূমি কর্মকর্তা, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, রাজনীতিবিদ, গণমাধ্যমের প্রতিনিধি এবং বিভিন্ন অংশীজনসহ বিভিন্ন পেশার ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত, গত ২২ মে থেকে শুরু হওয়া ‘ভূমিসেবা সপ্তাহ ২০২৩’  কাল রবিবার (২৮ মে) শেষ হবে।