আবেগের বশে চালককে দায়ী করা যৌক্তিক নয়: শাজাহান খান 

সাবেক নৌপরিবহন মন্ত্রী ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি শাজাহান খান বলেছেন, ‘পরিবহন খাত সুশৃঙ্খল করতে এবং সড়ককে নিরাপদ করে গড়ে তুলতে সমন্বিত পদক্ষেপ জরুরি। শ্রমিক, মালিক, বিআরটিএ এবং হাইওয়ে পুলিশ সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। শুধু আবেগের বশে চালকের দায়ী করা যৌক্তিক নয়। আবেগ ও বাস্তবতা মিলিয়ে আমরা কাজ করবো।’

রবিবার (১৩ আগস্ট) জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে ‘সড়ক দুর্ঘটনায় চালকের দায় কতটুকু?’ শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন। বৈঠকের আয়োজন করে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন। 

বৈঠকে সভাপতির বক্তব্যে সড়ক আইনকে ‘ত্রুটিপূর্ণ’ দাবি করে শাজাহান খান বলেন, ‘সড়ক আইনে অনেক অসামঞ্জস্যপূর্ণ বিষয় রয়েছে। আইনে জরিমানার অংক অনেক বেশি। আমরা ৩৪টি সংশোধনী দিয়েছি। এ নিয়ে সড়ক পরিবহন মন্ত্রী একটা কমিটি করেছেন। তারা ৩২টি সংশোধনীতে একমত। তবে দুই বছর হয়ে গেলেও কোন সংশোধনী আনা হয়নি।’

তিনি আরও বলেন, ‘শ্রমিক ফেডারেশন চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে। আমরা উদ্যোগ নেওয়ার পর এখন আর গাড়ি বন্ধ হয় না। যৌক্তিভাবে দাবি তুলে ধরা হয়। ফেডারেশনের সুপারিশে ৮৬ সালে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) এবং ২০০৫ সালে হাইওয়ে পুলিশ গঠিত হয়েছে। হাইওয়েতে এখন অপরাধ শূন্যের কোঠায়। যে কোনও সরকার ফেডারেশনকে সহযোগিতা করলে দুর্ঘটনা কমবে।’

গোলটেবিল আলোচনায় অংশ নিয়ে বিআরটিএর চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ মজুমদার বলেন, ‘সড়ক দুর্ঘটনা হলে চালক দায়ী, এটা জনগণের দৃষ্টিভঙ্গি। দুর্ঘটনার পেছনে একটি বৈজ্ঞানিক কারণ থাকে। বৈজ্ঞানিক কারণটি চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নিলেই দুর্ঘটনার প্রতিকার সম্ভব। সরকার এজন্য দুর্ঘটনার তদন্ত কমিটিতে বিশেষজ্ঞদের যুক্ত করেছে। দুর্ঘটনা প্রতিরোধ আইন মেনে চলা জরুরি। আইন মানলে সড়ক দুর্ঘটনা শূন্যের কোঠায় চলে যাবে।’

বুয়েটের এক্সিডেন্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক কাজী সাইফুন নেওয়াজ বলেন, ‘সড়ক দুর্ঘটমা একক কোনও কারণে ঘটে না। একজন নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে দুর্ঘটনার পেছনে দায়ী করার মাধ্যমে দুর্ঘটনা কমানো সম্ভব নয়। দুর্ঘটনার পেছনে একটি অবকাঠামো গত ত্রুটি থাকে। এটি চিহ্নিত করে যথাসময়ে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।’

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেনের সাধারণ সম্পাদক ওসমান আলীর সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন হাইওয়ে পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক মো. শাহাবুদ্দিন খান, শ্রমিক ফ্রন্টের সভাপতি রাজেকুজ্জামান রতন, রোড ট্রান্সপোর্ট ইঞ্জুরি প্রিভেনশনের পরিচালক সেলিম মাহমুদ চৌধুরীসহ পরিবহন বিশেষজ্ঞ ও শ্রমিক সংগঠনের নেতারা।