বাংলাদেশ ব্যাংকে ‘শরিয়াহ ব্যাংকিং বিভাগ’ প্রতিষ্ঠার দাবিতে আইনি নোটিশ

বাংলাদেশে শরিয়াভিত্তিক ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর যথাযথ তদারকি ও নিয়ন্ত্রণের দাবিতে বাংলাদেশ ব্যাংকে পৃথক ‘শরিয়াহ ব্যাংকিং বিভাগ’ প্রতিষ্ঠার দাবিতে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে। মঙ্গলবার (১৯ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকে এ নোটিশ পাঠান সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. মাহমুদুল হাসান।

নোটিশে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংক হলো বাংলাদেশের একমাত্র কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বাংলাদেশের প্রচলিত আইন ‘দ্য বাংলাদেশ ব্যাংক অর্ডার, ১৯৭২’ অনুযায়ী এই বাংলাদেশ ব্যাংক প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ওই আইনের ধারা ৭এ (এফ) অনুযায়ী বাংলাদেশ ব্যাংকের অন্যতম প্রধান কাজ হলো সব ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণ ও তদারকি করা। বাংলাদেশে দুই ধরনের ধরনের ব্যাংকিং ব্যাবস্থা প্রচলিত আছে। যেমন- সুদভিত্তিক কনভেনশনাল ব্যাংকিং, আর অপরটি হলো ইসলামি শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকিং।

বিভিন্ন সংবাদপত্রের সূত্র দিয়ে নোটিশে আরও বলা হয়, বাংলাদেশে ১০টি পূর্ণাঙ্গ ইসলামি শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংক রয়েছে। এছাড়া ১১টি প্রচলিত বাণিজ্যিক ব্যাংকের ২৩টি ইসলামি ব্যাংকিং শাখা এবং ১৩টি প্রচলিত বাণিজ্যিক ব্যাংকের ৫১১টি ইসলামি ব্যাংকিং উইন্ডো ইসলামি শরিয়াহভিত্তিক আর্থিক পরিষেবা দিয়ে থাকে।

নোটিশে আরও বলা হয়েছে, বাংলাদেশের জনগণ ও ব্যাংকিং বিশেষজ্ঞদের বিস্তর অভিযোগ আছে, বাংলাদেশে প্রচলিত ইসলামি শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহ যথার্থভাবে ইসলামি শরিয়াহ অনুসরণ করছে না। তারা মূলত বাংলাদেশের আপামর মুসলিম জনগোষ্ঠীর ধর্মীয় অনুভূতি নিয়ে ব্যবসা করছে। কিন্তু এগুলোর তদারকির জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের কোনও শরিয়াহ ব্যাংকিং বিভাগ নেই । এছাড়া শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহের প্রোডাক্টগুলো যাচাই-বাছাই করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের কোনও ‘শরিয়াহ বোর্ড’ও নেই। ফলে বাংলাদেশ ব্যাংক এদেশের শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহের নিয়ন্ত্রণ ও তদারকিরতে কোনও রকম ভূমিকা রাখতে পারছে না এবং বাংলাদেশ ব্যাংক তার আইনি কর্তব্য পালনে ব্যর্থ হয়েছে।

নোটিশ পাওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকে পৃথক ‘শরিয়াহ ব্যাংকিং বিভাগ’ প্রতিষ্ঠা করার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি নিজস্ব ‘শরীয়াহ বোর্ড’ গঠন করতে হবে। অন্যথায় এ বিষয়ে নির্দেশনা চেয়ে বাংলাদেশ সংবিধানের ১০২ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী হাইকোর্টে রিট মামলা দায়ের করা হবে বলেও জানানো হয়।