নাসার খ্যাতিমান প্রকৌশলী ড. জাহিদুল মারা গেছেন

যুক্তরাষ্ট্রে রকেট ডিজাইন ও উন্নয়নে (নাসার জেট প্রোপালশন ল্যাবরেটরি-জেপিএল) দীর্ঘ তিন দশক ধরে নিয়োজিত খ্যাতিমান প্রকৌশলী ও প্রযুক্তিবিদ ড. জাহিদুল হাসান মুশফিকুর রহমান মারা গেছেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।

সোমবার (১৬ অক্টোবর) লস এঞ্জেলেসের সিডার সাইনাই হাসপাতালে ড. রহমান শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন।

নাসার প্রখ্যাত বিজ্ঞানীদের সঙ্গে পৃথিবীর সীমা ভেদ করে গ্রহ থেকে গ্রহান্তরে মহাযাত্রা, জানা ও জানানোর প্রচেষ্টায় গবেষণা ও অগ্রসরে ড. জাহিদুল রহমানের ছিল উল্লেখযোগ্য অবদান।

২০২০ সালের ৩০ জুলাই নাসার উদ্যোগে পৃথিবী থেকে মঙ্গল গ্রহে উৎক্ষেপণ করা হয় রোভার মহাযান। অভিযানের লক্ষ্যে রোভার মহাযানের শৈলী ও নির্মাণে নিয়োজিত দক্ষ দলের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ছিলেন ড. জাহিদ। প্রায় ২৩ কোটি মাইল পাড়ি দেওয়ার পর তা মঙ্গল গ্রহে সফলভাবে অবতরণ করে ২০২১ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি। তখন থেকে রোভার যান মঙ্গল গ্রহের ছবিসহ বিভিন্ন তথ্য নিয়মিত পাঠাচ্ছে। মহাশূন্য বিজয়ের ক্ষেত্রে এটি একটি মাইলফলক হিসেবে ধরা হয়।

ড. জাহিদুল রহমান বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) থেকে প্রথম শ্রেণি অর্জন করেন। পরে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন স্টেট ইউনিভার্সিটি থেকে পিএইডি অর্জন করে টেক্সাসের এ অ্যান্ড এম ইউনিভার্সিটিতে পোস্ট ডক্টরাল ফেলো হিসেবে অগ্রসর গবেষণায় নিয়োজিত হন।

নাসার জেপিএলে তার চিন্তাধারার স্পষ্টতা, বিশ্লেষণ, বিভিন্ন জটিল সমস্যা সমাধানে সুচিন্তিত দিকনির্দেশনা, পরামর্শ, কর্মপদ্ধতি ও সবার সঙ্গে সহযোগী মনোভাবাপন্ন ও ফলপ্রসূ প্রচেষ্টার কারণে সুখ্যাতি ও স্বীকৃতি অর্জন করেন তিনি।

ড. জাহিদুল রহমানের আদি বাড়ি রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলায়। তিনি যশোরে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা আবদুর রহমান উনিশ শতকের বিশের দশকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান অনুষদে এমএসসিতে একমাত্র মুসলমান ছাত্র ছিলেন।

ড. জাহিদ তার বাবার ধীশক্তি ও গাণিতিক মেধার প্রস্ফুরণ করতে পেরেছিলেন। তিনি সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির কোষাধ্যক্ষ এইচ এন আশিকুর রহমানের ভাই। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী রুমানা রহমান, এক ছেলে, এক মেয়ে ও অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।