ড. ইউনূসের পদত্যাগের দাবি গ্রামীণ কমিউনিকেশন্সের শ্রমিকদের

গ্রামীণ কমিউনিকেশন্সের এক হাজার শ্রমিককে চুক্তির অজুহাতে চাকরিচ্যুত করায় কোম্পানিটির চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পদত্যাগের দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগী শ্রমিকরা। 
 
বুধবার (১৮ অক্টোবর) জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে গ্রামীণ কমিউনিকেশন্সের শ্রমিক-কর্মচারীদের বকেয়া মজুরি আদায়, চাকরিচ্যুতি বন্ধ করা ও চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পদত্যাগের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন ও প্রতিবাদ সভায় এসব এ দাবি জানান তারা।
 
সভায় লিখিত বক্তব্যে শ্রমিক প্রতিনিধি রেজাউল করিম বলেন, আমাদের চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ ইউনূস বাংলাদেশের দারিদ্র্য ও বেকারত্বের সুযোগ ব্যবহার করে দক্ষ শ্রমিকদের বিভিন্ন কায়দায় নিয়োগ করেন। অনিয়মতান্ত্রিকভাবে গ্রামীণ ব্যাংকের ভেতর প্রতিষ্ঠান সৃষ্টি করে বাংলাদেশ শ্রম আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে শ্রমিকদের শোষণ, নির্যাতন, নিপীড়ন অত্যাচার করে চলেছেন এবং শ্রমিকদের আর্থিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করছেন।
 
তিনি আরও বলেন,  গ্রামীণ ব্যাংক আমাদের আইটি হিসাব খাতের কাজ করার বিনিময়ে সার্ভিস বিল দিয়ে থাকে। সেখান থেকে আমাদের হাজারো শ্রমিকের বেতন ভাতাদি প্রদান করা হয়। এই প্রক্রিয়াটাকে তারা ‘চুক্তি চুক্তি খেলা’র মাধ্যমে শ্রমিকদের দাস বানিয়ে রেখে মান্দাতার আমলের দাসপ্রথাকে অব্যহত রেখেছেন। এই চুক্তি চুক্তি খেলা গ্রামীণ ব্যাংক ও আমাদের প্রতিষ্ঠানে ২৬ বছর ধরে চলে আসছে।
 
আজ সেই চুক্তির অজুহাতে আমাদের এক হাজার শ্রমিকদের চাকরিচ্যুতি করেছেন। আমরা হতবাক হলাম যে, এত বছর এই চুক্তি চলতে থাকলেও হঠাৎ কেন গ্রামীণ ব্যাংক আমাদের সঙ্গে চুক্তি বাতিল করে এবং এক হাজার আইটিতে দক্ষ শ্রমিককে চাকরিচ্যুতির ম্যাধ্যমে আমাদের জীবন বিপন্ন করলো। আমরা বিভিন্ন সূত্র থেকে জানলাম, গ্রামীণ ব্যাংক বলেছে যে, ড. ইউনূস যেখানে আছে সে প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কোনও সম্পর্ক রাখা যাবে না। তাহলে দাঁড়ালো এই যে, ড. ইউনূস প্রতিষ্ঠানের চেয়াম্যান থাকলে এক  হাজার  শ্রমিকের জীবন বিপণ্ন হবে। তাই আজ আমরা ড. ইউনূসের পদত্যাগের দাবি জানাতে বাধ্য হলাম।
 
তিনি আরও বলেন,  আমরা আমাদের প্রতিষ্ঠানের কাছে গত ১৬ অক্টোবর সব শ্রমিক ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রধান কার্যালয়ের সামনে দাবি আদায়ের লক্ষ্যে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করি। ফলে তারা আমাদের সারা দেশে কর্মরত শ্রমিকদের বিভিন্নভাবে হুমকি-ধমকি ও বিভিন্ন প্রকার নির্যাতন অব্যাহত রেখেছেন।আমরা আজ সারা দেশে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি পালনের ঘোষণা দিচ্ছি। 
 
গ্রামীণ কমিউনিকেশন্সের শ্রমিক-কর্মচারী জোটের সভাপতি মো. জাহিদ মোল্লার সভাপতিত্বে এ সময় সংবাদ সম্মেলন ও প্রতিবাদ সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন— ইউনি গ্লোবাল ইউনিয়নের (বাংলাদেশ লিয়াজোঁ কাউন্সিল) সভাপতি মো. আমজাদ আলী খান, উত্তরা ব্যাংকের সিবিএ নেতা আব্দুল মোতালেবসহ গ্রামীণ কমিউনিকেশন্সের শ্রমিকরা।