‘পিতার সব স্বপ্ন বাস্তবায়ন করে চলছেন তার সুযোগ্য কন্যা’

শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, পিতার সব স্বপ্ন বাস্তবায়ন করে চলছেন তার সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অন্য সব খাতের মতোই পিতার মতোই শিক্ষার ক্ষেত্রেও পিতার দর্শন ও ভাবনার প্রতিফলন ঘটাচ্ছেন কন্যা। পিতার মতো তিনিও বিশ্বাস করেন দেশের ভবিষ্যৎ ছাত্রসমাজের ওপর নির্ভর করে।

রবিবার (২৯ অক্টোবর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে প্রাক্তন শিক্ষার্থী মো. বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সম্মানসূচক ডিগ্রি 'ডক্টর অব লজ' প্রদানের জন্য আয়োজিত বিশেষ সমাবর্তনে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

দীপু মনি বলেন, আজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য একটি বিশেষ। ১৯২০ সালে টুঙ্গিপাড়ায় জন্ম নিয়েছিলেন এক অনন্য শিশু। এই শিশু বেঁচেছিলেন মাত্র ৫৫ বছর। ৫৫ বছর বয়সে তার জীবন কেড়ে নেওয়া হয়। তিনি বিভিন্ন চড়াই-উতরাই পেরিয়ে, কারাবরণ করে জাতিকে দিয়েছেন আলোর দিশা। এই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মার্চ মাসে ছাত্রদের বরখাস্ত করে। সেখানে তালিকায় এক নম্বরে ছিল শেখ মুজিবুর রহমান, আর পাঁচ নম্বরে ছিল আবু ওয়ালিদ, আমার পিতার নাম। আশ্চর্যজনকভাবে ২০ বছর পর এই বহিষ্কৃত ছাত্রটি বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন।

তিনি আরও বলেন, পিতার মতো তিনিও বিশ্বাস করেন দেশের ভবিষ্যৎ ছাত্রসমাজের ওপর নির্ভর করে। অসীম সাহসী রাষ্ট্রনায়ক পিতার আদর্শকে ধারণ করে এগিয়ে চলছেন কন্যা। যিনি পিতার মতোই সাদাকে সাদা, কালোকে কালো বলতে পারেন। আজ সেই পিতাকে ডক্টর অব লজ প্রদান করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ধন্য, ধন্য বাংলাদেশ।

এ সময় তিনি বঙ্গবন্ধুকন্যার পাশে থেকে উন্নয়ন-অগ্রযাত্রার পথ অব্যাহত রাখতে সবার প্রতি আহ্বান জানান।

সভাপতির বক্তব্যে দেওয়ার সময় প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, শিক্ষার্থীদের আবাসন সমস্যা প্রকট। এ জন্য নানা অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটছে, শিক্ষার্থীদের জীবনমানে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের সম্প্রসারণের কাজ দ্রুতই শেষ হবে। বঙ্গবন্ধুর নামে এই আবাসিক হলটিতে মাত্র ৩৫০টি আসন ছিল, এর নির্মাণকাজ শেষ হলে সেখানে আমরা চার হাজার ছাত্রের আবাসন নিশ্চিত করতে পারবো এবং হলটিও বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম বৃহৎ হলের রূপ পরিগ্রহ করবে।

তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার সম্মোহনী নেতৃত্বে নারীর ক্ষমতায়নের ক্ষেত্রে সমগ্র বিশ্বে অভূতপূর্ব নজির স্থাপন করেছেন। আমরা আগামী দিনে এ বিশ্ববিদ্যালয়ে নারী শিক্ষার্থীদের জন্য তার নামে আধুনিক সুযোগ-সুবিধা-সংবলিত বৃহত্তর পরিসরের দৃষ্টিনন্দন একটি আবাসিক হল প্রতিষ্ঠা করতে চাই; এতে একদিকে যেমন ছাত্রীদের আবাসিক সমস্যার সমাধান হবে, অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রীর এতৎসংশ্লিষ্ট কীর্তি ও অর্জনকেও সম্মান জানানো হবে।

এ সময় তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধুর জ্যেষ্ঠ পুত্র শেখ কামাল ও তার সহধর্মিণী সুলতানা কামাল ছিলেন এই বিশ্ববিদ্যালয়েরই কৃতী শিক্ষার্থী। তারা দুজনই ছিলেন ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও সংগঠক।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রীড়াঙ্গনে তারা নানা ক্ষেত্রে ক্রীড়ানৈপুণ্যও প্রদর্শন করেছেন ঈর্ষণীয়ভাবে উল্লেখ করে ভিসি বলেন, আমাদের এক শিক্ষাকেন্দ্রে ক্রীড়া-সংক্রান্ত সুযোগ-সুবিধার অপ্রতুলতা রয়েছে। আমি মনে করি, শেখ কামাল ও সুলতানা কামালের অমর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তাদের নামে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খোয় মাঠে একটি আধুনিক ক্রীড়া কমপ্লেক্স নির্মাণ করা উচিত।

উল্লেখ্য, বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টারপ্লানের আলোকে অগ্রাধিকারভিত্তিতে কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি, টিএসসি, মেডিকেল সেন্টার, কেন্দ্রীয় মসজিদ, বিশ্ববিদ্যালয় প্রেস, নারী শিক্ষার্থীদের জন্য 'জয় বাংলা হল' নির্মাণসহ অনান স্থাপনার সম্প্রসারণ ও সংস্কারের বিভিন্ন প্রকল্প অনুমোদনের জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। প্রণীত প্রকল্পগুলো সুষ্ঠু বাস্তবায়নে আমরা প্রধানমন্ত্রীর সানুগ্রহ সহযোগিতা বিশেষভাবে কামনা করি।

এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল, ট্রেজারার অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ।