বিমানবন্দরে রোহিঙ্গা নারী ও কিশোরের পেট থেকে ৬২৭৫ পিস ইয়াবা উদ্ধার

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দুই রোহিঙ্গা নারী ও এক শিশুর পেট থেকে ইয়াবা উদ্ধার করেছে বিমানবন্দর আর্মড পুলিশ। এ ঘটনায় গ্রেফতার হয়েছে একই পরিবারের চার সদস্য। বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর) সন্ধ্যায় তাদের আটক করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা হলেন, আলী আহমদ (২৮), আছিয়া বেগম (২৫), জোহুরা বেগম (৩০) ও মো. রুবেল (১৫)। দুই নারীর সঙ্গে দুটি দুগ্ধপোষ্য শিশু ছিল।

জানা গেছে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টায় নভোএয়ারের ফ্লাইটে কক্সবাজার থেকে ঢাকায় আসে একটি পরিবার। দুই শিশু ও এক কিশোরসহ ৬ সদস্যের এই পরিবারকে এপিবিএন এর গোয়েন্দা দলের সন্দেহ হলে নজরদারিতে রাখা হয়।এসময় তাদের আটক করে এয়ারপোর্ট এপিবিএন অফিসে নিয়ে আসা হয়। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তারা ইয়াবা বহন বা কোনোধরনের অপরাধে জড়িত থাকার কথা সম্পূর্ণ অস্বীকার করেন। নিজেদের তারা বাংলাদেশি হিসেবে পরিচয় দেয়। পরবর্তী সময়ে তাদের পেটের এক্স-রে করা হয়। কিশোর মো. রুবেল (১৫), তার ফুফু আছিয়া বেগম (২৫) এবং তার চাচী জোহুরা বেগমের (৩০) পাকস্থলীতে অস্বাভাবিক বস্তুর উপস্থিতি নিশ্চিত হয় পুলিশ। আছিয়া বেগমের সঙ্গে ৭ মাস বয়সী ও জহুরা বেগমের সঙ্গে ১০ মাস বয়সী দুই দুগ্ধপোষ্য শিশু ছিল।

বিমানবন্দর আর্মড পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জিয়াউল হক বলেন, এই পরিবারটি ইয়াবা পাচারের সাথে জড়িত আছে। এই সন্দেহ যাচাই করতে পরিবারের ৪ সদস্যকে বিমানবন্দরের সংলগ্ন উত্তরার একটি প্যাথলজি সেন্টারে পরীক্ষা করার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। এসময় ডাক্তারি পরীক্ষায় ৩ জনের পেটে অস্বাভাবিক বস্তুর উপস্থিতি সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়। এরপর তারা আরো জোরদার জিজ্ঞাসাবাদের মুখে স্বীকার করেন যে তারা পাকস্থলীতে ইয়াবা বহন করছেন। ইয়াবা বহনের ব্যাপারে স্বীকারোক্তি দেয়ার পর তাদের জাতীয়তা নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তারা নিজেদের রোহিঙ্গা বলেও স্বীকার করেন।

জিয়াউল হক আরও জানান, এই পরিবার ইয়াবা বহনের মূল পরিকল্পনাকারী ছিলেন আছিয়া বেগমের স্বামী আলী আহমদ (২৮)। যদিও সে নিজের পেটে ইয়াবা বহন করেনি। জাতীয়তা এবং ইয়াবা বহনের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর রাতেই তাদের ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে যায় বিমানবন্দর আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের একটি দল। সেখানে ৩ রোহিঙ্গা নাগরিকের পাকস্থলী থেকে ডাক্তারের তত্ত্বাবধায়নে মোট ১৩০টি ইয়াবার প্যাকেট উদ্ধার করা হয়। এইসব ইয়াবার প্যাকেট থেকে ইয়াবা গননা করে সেখানে মোট ৬২৭৫ পিস ইয়াবা পাওয়া যায়। কিশোর মো. রুবেলের পাকস্থলীতে ৪০ প্যাকেটে মোট ১ হাজার ৯৩০ পিস, আছিয়ার পাকস্থলীতে ৫২ প্যাকেটে মোট ২ হাজার ৫১১ পিস এবং জহুরা বেগমের পাকস্থলীতে ৩৮ প্যাকেটে ১ হাজার ৮৩৪ পিস ইয়াবা পাওয়া যায়।

অভিযুক্ত সবাই মিয়ানমারের রোহিঙ্গা নাগরিক। তারা কক্সবাজার টেকনাফের লেদা ক্যাম্পের অধিবাসী। তাদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে বিমানবন্দর থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।