৫ মাস পর পরিবার পেলো প্রবাসী হানিফের মরদেহ

সৌদি আরবে কাজের উদ্দেশে গিয়ে মারা যান মো. হানিফ। মৃত্যুর পাঁচ মাস পর তার মরদেহ পরিবারের কাছে ফিরেছে। রবিবার (৩ ডিসেম্বর) বিকালে তার মরদেহ বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে দেশে এসে পৌঁছালেও সোমবার (৪ ডিসেম্বর) সকালে পরিবার মরদেহ বুঝে পায়। ব্র্যাক ও এপিবিএন-এর যৌথ সহযোগিতায় বাংলাদেশ দূতাবাসের মাধ্যমে হানিফের মরদেহ দেশে ফেরত আনা হয়েছে।

মো. হানিফ রিক্রুটিং এজেন্সি অপশন ম্যানপাওয়ার ওভারাসিজ (আরএল ১৩৮৪) এর মাধ্যমে সৌদি আরবে কাজের উদ্দেশে যান। তবে পরিবারের দাবি, নির্যাতনের কারণে হানিফের মৃত্যু হয়েছে। নোয়াখালী জেলার বেগমগঞ্জ উপজেলার আব্দুল মোতালেবের ছেলে মো. হানিফ (৩৩)। পরিবার জানায়, তার মরদেহ রবিবার বিকালে দেশে আসলেও বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ এ দিন সন্ধ্যায় এ তথ্য পরিবারকে জানায়। মৃত হানিফের স্ত্রী জানান, পূর্ব প্রস্তুতি না থাকায় সোমবার সকালে বিমানবন্দর থেকে লাশ গ্রহণ গ্রহণ করা হয়।

মো. হানিফের মরদেহ গ্রহণ করছেন তার স্ত্রী এবং পরিবারের সদস্যরাকাজের উদ্দেশে সৌদি আরব গিয়ে গত ১৬ জুন রিয়াদের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান হানিফ। তার মৃত্যুর পর সেখানে বসবাসকারী নিকটাত্মীয়রা মরদেহ দেশে আনার বিষয়ে দায়িত্ব নিতে অপারগতা প্রকাশ করে। ফলে হানিফের লাশ দেশে ফিরিয়ে আনা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়। ‘রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে সৌদি গিয়ে নির্যাতনে যুবকের মৃত্যু, লাশ দেশে আনার আকুতি’ শিরোনামে চলতি বছরের ৩ জুলাই বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচার হলে বিষয়টি বিমানবন্দর আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ানের (এপিবিএন) নজরে আসে। প্রকাশিত খবরের সূত্র ধরে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে ব্র্যাক এবং হানিফের মরদেহ সরকারি খরচে দেশে  আনার বিষয়ে নিশ্চয়তা দেওয়া হয় পরিবারকে।

বাড়ির পথে মো. হানিফের মরদেহমৃত হানিফের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করা হানিফ অভাবের তাড়নায় ছোটবেলা থেকে নির্মাণ শ্রমিকের (রাজমিস্ত্রি) কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। চলতি বছরের ১২ মার্চ সৌদি আরবে যান তিনি। দেশটিতে যাওয়ার পর তাকে রাজমিস্ত্রির কাজ না দিয়ে আভা শহরে ভেড়া চরানোর চাকরি দেওয়া হয়। যে মালিকের অধীন তাকে চাকরি দেওয়া হয়েছিল ওই ব্যক্তি তাকে নানা ধরনের শারীরিক নির্যাতন করতো। বিষয়টি রিক্রুটিং এজেন্সিকে জানানোর পর তিনি যোগাযোগ বন্ধ করে দেন। সেখানে নির্যাতনে অসুস্থ হয়ে পড়লে গত ১৬ জুন রিয়াদের একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় একইদিন স্থানীয় সময় বিকাল ৩টায় হানিফ মারা যান।