বিদেশি অবৈধ শ্রমিকদের কারণে দেশের অর্থনীতি ধ্বংস হচ্ছে

বাংলাদেশে কর্মরত বিদেশি অবৈধ নাগরিকরা ট্যাক্স ও ভ্যাট না দিয়ে টাকা পাচার করছে। ফলে বাংলাদেশের অর্থনীতি ক্রমান্বয়ে ধ্বংস হচ্ছে। এতে মানবাধিকার ও জাতীয় নিরাপত্তা হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে।

বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে ‘অবৈধ বিদেশি খেদাও আন্দোলন’ নামে এক সংগঠনের সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক ও বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার এম সরোয়ার হোসেন।

তিনি বলেন, গত দেড় দশক ধরে বাংলাদেশে ১০ লাখের বেশি বিদেশি শ্রমিক অবৈধভাবে কর্মক্ষেত্র দখল করে রেখেছে। এর ফলে দেশের নাগরিকরা যোগ্যতা অনুযায়ী নিয়োগ পাওয়ার অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

যোগ্যতা অনুযায়ী নিয়োগ পাওয়া সাংবিধানিক অধিকার জানিয়ে তিনি বলেন, গত দেড় দশকে বাংলাদেশে বেকার সমস্যা চরম আকার ধারণ করেছে। দেশে বর্তমানে বেকারত্বের হার ১২ শতাংশ, যা এযাবৎকালের সর্বোচ্চ। এ সমস্যা এমন আকার ধারণ করেছে যে দেশের নাগরিকরা কর্ম খুঁজতে গিয়ে বঙ্গোপসাগর ও ভূমধ্যসাগরে মৃত্যুবরণ করছে।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে কর্মরত অবৈধ বিদেশিরা ২০১৭ সাল থেকে প্রতি বছর ১০ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার নিজ দেশে নিয়ে যাচ্ছে। অবৈধ হওয়ায় তারা ট্যাক্স ও ভ্যাট না দিয়ে টাকা পাচার করছে। ফলে দেশের অর্থনীতি ক্রমান্বয়ে ধ্বংস হচ্ছে। এতে মানবাধিকার ও জাতীয় নিরাপত্তা হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে। এরপরও রাষ্ট্র বা সরকার কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না।

আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে সংগঠনটির সভাপতি ও বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ মহসিন রশিদ বলেন, আমরা প্রতিটি রাজনৈতিক দলকে আহ্বান জানাবো। সেটা আওয়ামী লীগ, বিএনপি, ছাত্রলীগ, ছাত্রদল, যুবলীগ, যুবদল—যেই হোক না কেন, সবাইকেই আমরা আহ্বান জানাচ্ছি। যারা আমাদের এজেন্সিগুলোয় কাজ করেন, তাদের একটা বড় দায়িত্ব হচ্ছে এই দেশটাকে রক্ষা করা। বাংলাদেশের জন্য যা করা দরকার, সেটাই আপনাদের করতে হবে। আমি সবাইকে আহ্বান করবো আপনারা এগিয়ে আসেন, আমাদের সঙ্গে যোগ দেন, সহায়তা করেন।

তিনি আরও বলেন, আপনারা দেখছেন যে বিদেশি অনেক নাগরিক এখানে অবৈধভাবে কাজ করে যাচ্ছে। বৈধভাবে যারা কাজ করছেন, তাদের নিয়ে আমাদের কোনও আপত্তি নেই। কিন্তু বিদেশি অবৈধ শ্রমিকের কারণে বাংলাদেশের প্রত্যেক নাগরিকের সমস্যা হচ্ছে। তাই আমরা চাই সরকার এদের দেশে ফেরত পাঠিয়ে আমাদের বেকার সমস্যা দূর করবে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন ন্যাশনাল ডেমক্রেটিক পার্টির চেয়ারম্যান আবু তাহের, গণঅধিকার পরিষদের একাংশের আহ্বায়ক মিয়া মশিউজ্জামান, অ্যাডভোকেট সাজ্জাদ হোসেন, মেজর মোহাম্মদ মিজানুর রহমান (অব.) ও অ্যাডভোকেট মো. আফাজুল হকসহ বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক ব্যক্তিরা।