বসন্ত ও ভালোবাসার দিনে বইমেলায় মানুষের ঢল

পহেলা ফাল্গুন ও ভালোবাসা দিবসের রেশ ছড়িয়েছে অমর একুশে বইমেলায়। এ দিন স্বরস্বতী পূজা উপলক্ষে সরকারি ছুটির দিন হওয়ায় এবং দুইটি বিশেষ দিবস একসঙ্গে থাকায় মেলায় পাঠক ও দর্শনার্থীদের ভিড় ছিলে উপচে পড়া। মেলার এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তে তাকিয়ে রবীন্দ্রনাথের কবিতার কথাই মাথায় আসে, ‘ঠাঁই নাই, ঠাঁই নাই।’

বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) সরজমিন দেখা যায়, বিকাল থেকেই মেলায় ভিড় ছিল লক্ষণীয়। বিকাল গড়িয়ে সন্ধ্যা হতেই মেলা পরিণত হয় জনসমুদ্রে। যেদিকে চোখ যায় মানুষ আর মানুষ। মেলার প্রবেশমুখগুলোতে ছিল দীর্ঘ লাইন। প্রবেশমুখগুলোতে মানুষের চাপ সামলাতে বেগ পেতে হয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদেরও।

মেলার ভেতরের অবস্থা ছিল আরও করুণ। এক পা এগোলে আরেক পা এগোনো যায় না এমন। প্যাভিলিয়নগুলোর পাশাপাশি স্টলগুলোতেও ভিড় ছিল লক্ষণীয়। তবে প্যাভিলিয়নগুলোতে দর্শনার্থীদের চাপ সামলাতে ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে বিক্রয়কর্মীদের। বিক্রয়কর্মীরা জানান, এমন ভিড় আজই প্রথম এবারের বইমেলায়।

পহেলা ফাল্গুন ও ভালোবাসা দিবসে বইমেলায় উপচে পড়া ভিড়

পাঞ্জেরি পাবলিকেশনের বিক্রয়কর্মী অনামিকা শিকদার বলেন, ‘আজকের মতো ভিড় মেলা শুরুর পর হয়নি। বই দেখিয়ে শেষ করতে পারছিল না। চাপ হলেও উপভোগ করছি এত ভিড়।’

মেলার প্রভাবে আশেপাশের সড়কেও তৈরি হয় দীর্ঘ যানজট। শাহবাগ, মৎসভবন, নীলক্ষেত, পলাশি মোড়, আশেপাশের সব গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে গাড়িগুলোকে অপেক্ষা করতে দেখা যায় দীর্ঘসময়। মেলাগামী মানুষকে এ সময় রিকশা ও বাস থেকে নেমে মেলায় আসতে দেখা যায়।

মেলায় আসা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আহনাফ তাহমিদ ফাইয়াজ বলেন, ‘মৎসভবন থেকে শাহবাগ আসতে প্রায় আধা ঘণ্টা লেগেছে। পরে রিকশা ছেড়ে হেঁটে এসেছি। এখন মেলায় ঢোকার জন্যও যুদ্ধ করতে হচ্ছে।’

মানুষের পদচারণায় মুখরিত ছিল মেলা প্রাঙ্গণ

তবে দর্শনার্থীরা জানান, ভিড় হলেও বসন্ত, ভালোবাসা আর স্বরস্বতী পূজার দিন বইমেলায় এসে উপভোগ করছেন তারা। ঘুরে ঘুরে কিনেছেন বই, কেউ বা তুলেছেন সেলফি। আবার কেউ কেউ মেলা থেকে বের হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় টিএসসি, শহীদ মিনারে দিয়েছেন আড্ডা।

কেরানীগঞ্জ থেকে আসা ইউসুফ ওসমান বলেন, ‘মেলায় ভিড় হবে জেনেই এসেছি। বিশেষ দিন তাই আগেই বন্ধুদের সঙ্গে পরিকল্পনা ছিল মেলায় আসার। সবাই পাঞ্জাবি পরে মেলায় এসেছি, ছবি তুলেছি, বই কিনেছি।’

তবে ভিন্ন প্রতিক্রিয়া জানান উত্তরা থেকে পরিবার নিয়ে আসা মুজাহিদ বিল্লাহ। তিনি বলেন, ‘খুবই বিরক্ত লাগছে এতো ভিড়ে। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে এসেছি, তাদেরও কষ্ট হচ্ছে। এখন কিছু বই কিনেই আবার মেট্রোরেলে করে ফিরে যাবো।’