দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় পিছপা হবে না বিজিবি: মহাপরিচালক

বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী বলেছেন, দেশের সার্বভৌমত্ব, অখণ্ডতা ও নিরাপত্তা রক্ষায় কখনও পিছপা হবে না বিজিবি। তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের স্বাধীন সার্বভৌম অখণ্ড বাংলাদেশ দিয়ে গেছেন। সেই দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, অখণ্ডতা ও নিরাপত্তা ও সীমান্ত রক্ষার পাশাপাশি সীমান্তের জনগণের নিরাপত্তায় বিজিবি বদ্ধপরিকর।

বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে কক্সবাজারের ইনানীতে নৌবাহিনীর জেটিঘাটে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিজিপি) সদস্যসহ ৩৩০ জন মিয়ানমার নাগরিককে বিজিপির কাছে হস্তান্তরের সময় এসব কথা বলেন তিনি।

বিজিবির জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরীফুল ইসলাম জানান, বৃহস্পতিবার সকালে বিজিবির কক্সবাজার রিজিয়নের সার্বিক তত্ত্বাবধানে বিজিবি বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া ৩০২ জন বিজিপি সদস্য, ৪ জন বিজিপি পরিবারের সদস্য, দুজন সেনাসদস্য, ১৮ জন ইমিগ্রেশন সদস্য এবং চার জন বেসামরিক নাগরিকসহ ৩৩০ জন মিয়ানমার নাগরিককে বিজিপির কাছে হস্তান্তর করে। এ সময় বাংলাদেশে নিযুক্ত মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত আং কেউয়া মো উপস্থিত ছিলেন।

বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী বলেন, সীমান্তে বিজিবির টহল ও জনবল বাড়ানো হয়েছে। সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে থেকে বিজিবি সীমান্তের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে। বর্তমানে সীমান্ত পরিস্থিতি বিজিবির নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তবে পরিস্থিতি যা-ই হোক, দেশের সার্বভৌমত্ব, অখণ্ডতা ও নিরাপত্তা রক্ষায় কখনও পিছপা হবে না বিজিবি।

সীমান্ত দিয়ে আর একজন মিয়ানমার নাগরিককেও বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করতে দেওয়া হবে না জানিয়ে তিনি বলেন, বিজিবি মহাপরিচালক স্থানীয় প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি, সুশীল সমাজ, সাংবাদিক ও সীমান্তবর্তী জনগণকে সঙ্গে নিয়ে যেকোনও পরিস্থিতি মোকাবিলার কথা বলেন তিনি।

বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া বিজিপি সদস্যদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসন কার্যক্রম সফলভাবে শেষ হওয়ায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড, কক্সবাজার জেলা প্রশাসন, জেলা পুলিশ এবং সংশ্লিষ্ট সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার সবাইকে ধন্যবাদ জানান তিনি।

গত ১১ ফেব্রুয়ারি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিজিপিসহ ৩৩০ জন সদস্যকে মিয়ানমারের প্রত্যাবাসনের জন্য বিজিবিকে নির্দেশনা দেওয়া হয়। এ প্রেক্ষিতে বিজিবির রামু সেক্টরের সেক্টর কমান্ডার কর্নেল মেহেদী হোসাইন কবীরের নেতৃত্বে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি, কক্সবাজার ব্যাটালিয়নের (৩৪ বিজিবি) অধিনায়ক, টেকনাফ ব্যাটালিয়নের (২ বিজিবি) অধিনায়ক এবং কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের সমন্বয়ে সাত সদস্যবিশিষ্ট একটি হস্তান্তর কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটি মিয়ানমারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃকপক্ষের সঙ্গে দ্রুত যোগাযোগ ও সমন্বয় করে বাংলাদেশে আশ্রয় গ্রহণকারী বিজিপিসহ অন্য সদস্যদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনের সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে।

বৃহস্পতিবার সকালে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডের জাহাজে করে মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর পুলিশ কর্নেল মেও থুরা নওংয়ের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট বিজিপি প্রতিনিধি দল কক্সবাজারের ইনানীর নৌবাহিনীর জেটিঘাটে আসে এবং বিজিবির কাছ থেকে আশ্রয়গ্রহণকারী ৩৩০ জনকে নিয়ে যায়।