বিদেশে পাঠানোর নাম করে কুমিল্লার বিভিন্ন গ্রামের ১৯ জনের কাছ থেকে ৭৩ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়া প্রতারকচক্রের মূলহোতা বশির দেওয়ানকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। ডিবি জানায়, বিদেশ নেওয়ার কথা বলে বিভিন্ন সময় দফায় দফায় তাদের কাছ থেকে মোট ৭৩ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে চক্রটি।
সম্প্রতি বশিরকে গ্রেফতার করার পর মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর মিন্টো রোডে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার ও গোয়েন্দাপ্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
হারুন অর রশীদ বলেন, বেশ কিছুদিন আগে একজন ইউটিউবার একটি ভিডিওতে জানায়, একজন আদম ব্যবসায়ী জর্জিয়া পাঠানোর নাম করে ৭৩ লাখ টাকা নিয়েছে। এখন সে টাকাও দেয় না, জর্জিয়াও পাঠায় না। এরপর বিষয়টি নিয়ে ডিএমপির পল্টন থানায় একটি মামলা দায়ের করেন একজন ভুক্তভোগী। পরবর্তীতে আমাদের গোয়েন্দা টিম মামলাটির ছায়াতদন্ত শুরু করে। পরে এই আদম ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতার বশিরকে জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে ডিবির ওই কর্মকর্তা বলেন, সে ১৯ জনের কাছ থেকে ৭৩ লাখ টাকা নিয়েছে। এখন তাকে রিমান্ডে নিয়ে সে টাকাগুলো কোথায় রেখেছে অথবা তাদেরকে আদৌ বিদেশে নেবে কিনা, বা তার সাথে কে বা কারা প্রতারণা করেছে সেটা আমরা খুঁজে বের করে আইনগত ব্যবস্থা নেবো। যে ১৯ জন ভিক্টিম আছে তাদের টাকাগুলো যেন ফেরত পায় আমরা সেই ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
তিনি বলেন, ভুক্তভোগীরা জানান, পরিচিত একজনের মাধ্যমে প্রতারক বশিরের সঙ্গে তাদের পরিচয় হয়। এরপর বশির বিদেশে পাঠানোর কথা বলে তাদের প্রত্যেকের কাছ থেকে কয়েক দফায় টাকা নেয়। সেই সঙ্গে আসামি ভুক্তভোগীদের বিশ্বস্ততা অর্জন করতে তার ভাড়া বাসায় ভুক্তভোগীদের নিয়ে যায় এবং সেটি তার শ্বশুরের বাসা বলে জানায়। সর্বশেষ ফ্লাইটের কথা বলে তাদের কাছ থেকে আরও টাকা নেয়। এরপর তাদেরকে ঢাকায় এনে ফোন বন্ধ করে বাসা ছেড়ে পালিয়ে যায়। এরপর থেকে প্রতারক বশিরের সন্ধান না পেয়ে একটি মাধ্যম দিয়ে ইউটিউবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন ভুক্তভোগীরা। ইউটিউবার এই বিষয়টি নিয়ে একটি ভিডিও তৈরি করেন এবং তাদের পল্টন থানায় একটি মামলা করার পরামর্শ দেন। পরে তারা মামলা করলে সেই মামলার সূত্র ধরে আসামিকে গ্রেফতার করা হয়।