বিদেশি এয়ারলাইনের মুনাফা ছাড়ের বিষয়ে কাজ করছি: বিমানমন্ত্রী

ডলার সংকটের কারণে দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশ থেকে মুনাফা নেওয়ার বিষয়ে জটিলতার মধ্যে রয়েছে বিদেশি এয়ারলাইনগুলো। এ বিষয়ে  বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়সহ সরকারি বিভিন্ন সংস্থার শরণাপন্ন হয়েছে বিদেশি এয়ারলাইনগুলো। তাদের সমস্যা সমাধান প্রসঙ্গে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী মুহাম্মদ ফারুক খান বলেছেন, রেমিট্যান্সের কিছু অংশ ছাড় করা হয়েছে। এর পরিমাণ যেন আরও বাড়ানো হয় সে ব্যাপারে আমরা কাজ অব্যাহত রেখেছি।

রবিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর আগারগাঁওয়ের পর্যটন ভবনে বাংলাদেশ থেকে পরিচালিত দেশি-বিদেশি এয়ারলাইন্সের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠককালে তিনি একথা কথা বলেন।

বাংলাদেশের এভিয়েশন শিল্পকে স্মার্ট, দক্ষ এবং সেবামূলক শিল্প হিসেবে গড়ে তোলার কাজ চলছে জানিয়ে মুহাম্মদ ফারুক খান বলেন, ‘বিদেশি এয়ারলাইন্সগুলোর মুনাফা ছাড়ের ব্যাপারে আমরা বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে কাজ করছি। এরমধ্যেই রেমিট্যান্সের কিছু অংশ ছাড় করা হয়েছে। এর পরিমাণ যেন আরও বাড়ানো হয়— সে ব্যাপারে আমরা কাজ অব্যাহত রেখেছি। এছাড়াও এভিয়েশন শিল্পের বিভিন্ন বিষয়ে করের হার নিয়ে এবং এয়ারলাইন্সের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি যাতে দ্রুত ও সহজে কাস্টমস থেকে ছাড় পায়, সেই বিষয়ে আমরা জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সঙ্গে কথা বলবো।’

বিমানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের এভিয়েশন শিল্পকে স্মার্ট শিল্প হিসেবে গড়ে তোলার জন্য দেশের সব বিমানবন্দরের অবকাঠামোগত উন্নয়ন, নিরাপত্তা ব্যবস্থার উন্নয়নের পাশাপাশি দক্ষ জনবল তৈরির ওপর গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া, উড়োজাহাজের নিরাপদ উড্ডয়ন ও অবতরণ নিশ্চিতে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের আইএলএস সিস্টেম ক্যাটাগরি-১ থেকে ক্যাটাগরি-২ তে উন্নীত করা হচ্ছে। সিলেট, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার বিমানবন্দরে আইএলএস সিস্টেম স্থাপন করার কাজ সম্পন্ন হয়েছে। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দ্বিতীয় রানওয়ে নির্মাণের সম্ভাব্যতা যাচাই সম্পন্ন হয়েছে। খুব দ্রুতই এ বিষয়ে পরবর্তী কার্যক্রম শুরু করা হবে।’

মন্ত্রী বলেন, ‘গ্রাউন্ড হ্যান্ডেলিং সেবা আগের চেয়ে উন্নত হয়েছে। এই সেবাকে আরও উন্নত করে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করার জন্য বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে। গত এক বছরে বিমান বাংলাদেশ এক হাজার কোটি টাকার গ্রাউন্ড হ্যান্ডেলিং যন্ত্রপাতি কিনেছে। জনবলের ঘাটতি পূরণের জন্য নিয়মিত নিয়োগ কার্যক্রম চালু রাখার পাশাপাশি তাদের উপযুক্ত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। আশা করি, অবকাঠামোগত সীমাবদ্ধতার কারণে এখন যেটুকু সমস্যা হয়, থার্ড টার্মিনাল চালু হওয়ার পর তা আর থাকবে না।’

তিনি  আরও বলেন, ‘সব এয়ারলাইনই বাণিজ্যিক মুনাফা অর্জনের জন্য কাজ করে। কিন্তু একইসঙ্গে তাদের যাত্রীদের সর্বোচ্চ সেবা নিশ্চিত করতে হবে। কোনও যাত্রী যাতে অহেতুক হয়রানির শিকার না হয়, সেই ব্যাপারে সচেষ্ট থাকতে হবে। আমার বিশ্বাস, আমরা সবাই একত্রে কাজ করলে বাংলাদেশ থেকে সব এয়ারলাইনই আরও সহজে, নিরাপদে এবং দক্ষভাবে ফ্লাইট পরিচালনা করতে পারবে। যাত্রীদের আরও উন্নত সেবা প্রদানে সক্ষম হবে। বাংলাদেশকে একটি অন্যতম প্রধান এভিয়েশন হাবে রূপান্তরের যে লক্ষ্য নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে আমরা কাজ করছি, তা পূরণ করা সহজ হবে।’

বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন— বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোকাম্মেল হোসেন, বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মো. মফিদুর রহমান, বেসামরিক পরিবহন পর্যটন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. আশরাফ আলী ফারুক, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শফিউল আজিমসহ  দেশি-বিদেশি এয়ারলাইন্সের প্রতিনিধিরা।