ডিএনএ পরীক্ষা ও আদালতের নির্দেশ ছাড়া অভিশ্রুতি বা বৃষ্টির লাশ হস্তান্তর নয়

ডিএনএ পরীক্ষা ও আদালতের নির্দেশ ছাড়া সাংবাদিক অভিশ্রুতি শাস্ত্রী বা বৃষ্টি খাতুনের লাশ হস্তান্তর করা হবে না বলে জানিয়েছে পুলিশ। গত ‍বৃহস্পতিবার (২৯ মার্চ) রাতে রাজধানীর বেইলি রোডে গ্রিন কোজি ভবনের আগুনে অন্যদের সঙ্গে মারা যান তিনি।

বৃষ্টি খাতুন বা অভিশ্রুতি শাস্ত্রীর বিষয়ে রমনা থানার এসআই হাবিবুর রহমান জানান, শুক্রবার (১ মার্চ) বৃষ্টির বাবা সবুজ শেখ কুষ্টিয়া থেকে হাসপাতালে এসে দাবি করেন— বৃষ্টি তার মেয়ে। পরে রমনা কালি মন্দিরের সভাপতি উৎপল সাহা রমনা থানায় লিখিতভাবে দাবি করেন— মেয়েটি সনাতন ধর্মের, তার নাম অভিশ্রুতি শাস্ত্রী। তার বাড়ি ভারতে। শাস্ত্রী বিভিন্ন সময় কালিমন্দিরে এসে পূজা করতো। ফলে ডিএনএ’র মাধ্যমে তার পরিচয় শনাক্ত করা প্রয়োজন। এ কারণে বৃষ্টির মরদেহ তার বাবার কাছে হস্তান্তর করা সম্ভব হয়নি।

এসআই হাবিবুর রহমান বলেন, মর্গে তার ময়নাতদন্ত ও ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। তার পরিচয় নিয়ে ধোঁয়াশা থাকায় ডিএনএ পরীক্ষা ও আদালতের নির্দেশ ছাড়া লাশ হস্তান্তর করা হবে না।

কুষ্টিয়ার বৃষ্টি খাতুন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এবং তার চাকরিস্থলে অভিশ্রুতি শাস্ত্রী নামে পরিচিত ছিলেন। তবে তার জন্মনিবন্ধন সনদ, জাতীয় পরিচয়পত্র এবং চাকরির জন্মবৃত্তান্তে নামের ক্ষেত্রে কোনোটিতে বৃষ্টি খাতুন, আবার কোনোটিতে অভিশ্রুতি শাস্ত্রী নাম দেওয়া আছে। এসব নথিতে বাবার নামের জায়গায় শাবলুল আলম এবং মায়ের নাম বিউটি বেগম লেখা। তবে চাকরির জন্মবৃত্তান্তে মায়ের নাম অপর্ণা শাস্ত্রী লেখা ছিল বলে জানা গেছে। অনলাইন পোর্টাল দ্য রিপোর্ট ডট লাইভের সাবেক সাংবাদিক অভিশ্রুতি শাস্ত্রীর মৃত্যুর পর লাশ হস্তান্তরের প্রক্রিয়ায় পরিচয় সংক্রান্ত এ জটিলতা সামনে আসে।

অভিশ্রুতি শাস্ত্রী বা বৃষ্টি খাতুনের আত্মীয় হারুন অর রশীদ সাংবাদিকদের বলেন, নিহত অভিশ্রুতি তার ফুফাতো বোনের মেয়ে। শুক্রবার (১ মার্চ) রাত পর্যন্ত কথা ছিল— বৃষ্টি খাতুনের লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। পরে পুলিশ তাদের জানায়, ডিএনএ পরীক্ষা ছাড়া লাশ হস্তান্তর করা হবে না। বৃষ্টির বাবা সবুজ শেখ লাশ নেওয়ার জন্য শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে বসে আছেন। এই ইনস্টিটিউটের মর্গেই রাখা হয়েছে বৃষ্টির লাশ। তিনি বলেন, ডিএনএ পরীক্ষা হলে হবে। এতে তাদের কোনও আপত্তি নেই।

উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) রাতে ওই ভবনে আগুনের ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ৪৬ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। মৃতদের মধ্যে ২০ জন পুরুষ, ১৮ জন নারী এবং আট জন শিশু‌। নিহতদের মধ্যে ৪০ জনের পরিচয় শনাক্ত করা গেছে। তাদের ৩৮ জনের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। মর্গে রয়েছে দুজনের লাশ। ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে বাকি ছয় জনের পরিচয় জানার চেষ্টা চলছে।