ঢাবিতে শিক্ষার্থীর ওপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক এলাকায় আইন বিভাগের শিক্ষার্থীর ওপর হামলার প্রতিবাদের মানববন্ধন করেছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা। বুধবার (১৩ মার্চ) অনুষ্ঠিত ‘প্রোডাক্টিভ রমাদান’ শীর্ষক আলোচনা সভায় হামলার ওই ঘটনাকে ‘অ্যাটেম্প টু মার্ডারের’ মতো অপরাধ বলে আখ্যা দিয়েছেন আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল।

বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) হামলা ঘটনার প্রতিবাদে আইন অনুষদের সামনে মানববন্ধন করেন আইন বিভাগের শিক্ষার্থীরা। মানববন্ধনে উপস্থিত থেকে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে তিনি এ কথা বলেন।

মানববন্ধনে আইন বিভাগের শিক্ষক ও সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল বলেন, ‘আজকে আমাদের যে ছেলেদের মারা হচ্ছে, তাদেরকে শিবির ট্যাগ দিয়ে মারা হচ্ছে। এই রাজনীতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন না। যাকে মারবে সেই শিবির!  আমি খবর নিয়েছি, তারা কোনও ধরনের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নয়।  তাদেরকে শিবির করার কারণে মারা হয়নি, মারা হয়েছে ইসলামি মাহফিল করার জন্য। ধর্মচর্চা করার জন্য। বাংলাদেশের মুসলমান যারা আছে, ইসলাম ধর্মের অনুসারী যারা আছে, তারা ধর্মীয় অনুষ্ঠান করতে গিয়ে মার খাবে— এটার জন্য কি আমরা বাংলাদেশে স্বাধীন করেছিলাম?’

এসময় ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘আজকে যারা ছাত্রলীগের নেতা আছে, তাদের সবাই আইন বিভাগের ছাত্র। আমি তোমাদের কাছে শিক্ষক হিসেবে আপিল করছি— তোমরা কি মনে করো যে, নিরীহ ছেলেদের ইসলামী মাহফিল করার জন্য বহিরাগত ছাত্রলীগের গুন্ডারা এসে তাদের রক্তাক্ত করার অধিকার রাখে?  তাদের রক্তাক্ত চেহারা দেখে তোমাদের মনে কি কোনও উদ্বেগ হয় না? তোমাদের কাছে আমি আপিল করলাম— এই গুন্ডাদের অবিলম্বে বহিষ্কার করো।’ 

মানববন্ধনে হামলার শিকার আইন বিভাগের শিক্ষার্থী সাফওয়ান বলেন, ‘আমাদের এই প্রোগ্রামে হামলা হবে ভাবতেও পারিনি। বাংলাদেশের সবচেয়ে নিরাপদ ক্যাম্পাস বলে আমরা যেটাকে মনে করি, সেখানে বহিরাগত ছাত্রলীগ নেতারা এসে আমিসহ আমার সহপাঠীদের ওপর হামলা চালিয়ে রক্তাক্ত করেছে। আমরা জানি ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতা যারা আছেন, তারা আমাদের বিভাগের। তাদের বিভাগের শিক্ষার্থী হয়েও যদি আমাদের এভাবে ন্যাক্কারজনক হামলার শিকার হতে হয়, আর তারা তাদের বিরুদ্ধে কোনও ধরনের প্রদক্ষেপ না নেন, তাহলে আমরা কীভাবে তাদেরকে সিনিয়র ভাই মনে করবো। আমরা এ ধরনের হামলার কঠিন বিচার চাই।’

মানববন্ধন শেষে হামলাকারীদের বিচার দাবি ও শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার দাবিতে আইন অনুষদের ডিনের কাছে  স্মারকলিপি দেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।