X
শনিবার, ০৩ মে ২০২৫
১৯ বৈশাখ ১৪৩২

শান্তি চুক্তি হলেও পাহাড়ে এখনও আস্থা তৈরি হয়নি

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
১১ মে ২০২৪, ১৭:৩৭আপডেট : ১১ মে ২০২৪, ১৭:৩৭

পার্বত্য শান্তি চুক্তি হলেও পাহাড়ে এখনও আস্থা তৈরি হয়নি বলে মনে করেন দেশের বিশিষ্টজনরা। যখন সীমান্ত এলাকায় মিয়ানমারে নানা বিদ্রোহী জনগোষ্ঠীর উত্থান ও সংঘর্ষ চলছে, এমন সময় কুকি-চিনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড উদ্বেগ সৃষ্টি করে। এটি কেবল অভ্যন্তরীণ সমস্যার কারণে নয়, বাইরে থেকেও এর কোনও পৃষ্ঠপোষকতা আছে কি না, তা যাচাই করা দরকার মনে করেন তারা।

শনিবার (১১ মে) রাজধানীর বনানীতে, ‘অশান্ত পাহাড়ি জনপদ: সহিংসতা বনাম সম্প্রীতি’ শীর্ষক সম্পাদকদের শীর্ষ সংগঠন এডিটরস গিল্ডের এক গোলটেবিল আলোচনায় এসব কথা বলেন বিশিষ্টজনরা।

বান্দরবান জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক থানাজামা লুসাই বলেন, সম্প্রতি যে ঘটনা ঘটেছে বান্দরবানে, এ রকম সহিংসতা আমরা এর আগে দেখিনি। বান্দরবানে যতগুলো গোষ্ঠী আছে, তার মধ্যে কুকিও নাই, চিনও নাই। তাহলে কী কারণে তারা এই সংগঠন করলো? আমার বোধগম্য নয়। নাথান বম যে আড়ালে থেকে এই কাজ করবে আমরা কখনও ভাবিনি। তাদের উদ্দেশ্য কী, সেটা বম বলতে পারবে। আমরা স্থানীয় পাহাড়ি জনগোষ্ঠী এটা নিয়ে ভাবি না। আমরা চাই পাহাড়ে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বিরাজমান থাক।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের লেখক, গবেষক ও শিক্ষক অধ্যাপক ড. মাহফুজ পারভেজ বলেন, তাদের আচরণের মধ্যে হটকারি ব্যাপার আছে, তা স্পষ্ট হলো। তারা যদি রাজনৈতিক লক্ষ্য নিয়ে এগোত, তাহলে জনসংহতি সমিতির আলোচনা উপেক্ষা করে অস্ত্রের দিকে যেতো না। তাদের জন্য ভালো হতো আলোচনা চালিয়ে যাওয়া এবং তারা যদি চাপ দিতে চায়, সেটাও রাখা। পাশের মিয়ানমারের নানা দিকে বিদ্রোহ ছড়িয়ে পড়েছিল। ঠিক এই ধরনের একটি অবস্থায় বাংলাদেশের মতো এ রকম উন্নয়নশীল দেশে নানা সমস্যা চাপিয়ে দেওয়া হয় বাইরে থেকে। আমি এই ঘটনাকে স্থানীয় আঙ্গিকে না দেখার পক্ষে। আমাদের দেখতে হবে, বাইরে থেকে কোনও কিছু করা হচ্ছে কি না।

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ও নিরাপদ বিশেষজ্ঞ ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, পার্বত্য এলাকায় কুকি সম্প্রদায় আছে। তবে তারা সংখ্যায় খুবই কম। তাদের কেউ খিষ্ট্রান ধর্মে পরিবর্তন হয়ে বম জনগোষ্ঠীর অংশ হয়েছে। তবে তাদের অভিযোগের জায়গাটা শুরু হয়েছে স্থানীয় অন্যান্য বড় জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে। কুকিরা মনে করে, শান্তিচুক্তি হয়েছে চাকমা ও অন্যান্য বড় পাহাড়ি গোষ্ঠী ও সরকারের মধ্যে। এই চুক্তি থেকে আমরা কিছু পাইনি। অন্যান্য বড় গোষ্ঠীগুলো আমাদের দাবিয়ে রেখেছে। সেখান থেকে এটা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে গিয়েছে। এখন তারা মনে করতে পারে যে দেশের সীমান্ত ও সীমান্তের বাইরে যে কয়েকটি স্থানে কুকিরা রয়েছে, তারা একত্র হয়ে চিন সীমান্তঘেঁষা একটা খ্রিষ্টান স্টেট তৈরি করা।

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক আব্দুল মান্নান বলেন, আমাদের শুধু দেশের অভ্যন্তরীণ কুকি-চিন নিয়ে কথা বললে হবে না। ভারতের মতো জায়গায় কুকিরা আলাদাভাবে নিজেদের অবস্থান তৈরি করে রেখেছে। তবে শান্তিচুক্তিতে পাহাড়িদের একাংশের সমর্থন ছিল না, তা দেখা গেছে শান্তিচুক্তির দিনই। এদের মধ্যে বিভিন্ন কারণে আস্থার একটা ঘাটতি ছিল।

গিল্ডের প্রেসিডিয়াম সদস্য ভোরের কাগজ সম্পাদক শ্যামল দত্তের সঞ্চালনায় বৈঠককে আরও বক্তব্য দেন ইতিহাসবিদ ও রয়্যাল ইউনিভার্সিটি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মেজবাহ কামাল, মারমা রাজকুমার সুইচিং প্রু, কক্সবাজার সিটি কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক কে টি অং, মিয়ানমারে নিযুক্ত সাবেক কনস্যুলেট প্রধান ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর (অব.) মো. এমদাদুল ইসলাম ও খাগড়াছড়ির পানছড়ি সকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ সমীর দত্ত চাকমা।

/জেডএ/এনএআর/
সম্পর্কিত
হারিয়ে যাওয়া ভাষাগুলো পুনরুদ্ধার করতে হবে: পার্বত্য উপদেষ্টা
মানবিক করিডোরের জন্য যেসব শর্ত দিয়েছে সরকার
সময়ের আলো গোলটেবিল বৈঠকপ্রশিক্ষণে অনীহার কারণে সঠিকভাবে হজ পালিত হয় না
সর্বশেষ খবর
‘কর্মীদের আর্থিক নিরাপত্তা ছাড়া গণমাধ্যম স্বাধীন হবে না’
মুক্ত গণমাধ্যম দিবস‘কর্মীদের আর্থিক নিরাপত্তা ছাড়া গণমাধ্যম স্বাধীন হবে না’
খিলগাঁওয়ে পৃথক ঘটনায় দুই শিশুর মৃত্যু
খিলগাঁওয়ে পৃথক ঘটনায় দুই শিশুর মৃত্যু
রাজধানীতে মোটরসাইকেল ধাক্কায় পথচারী নিহত, আহত স্বামী-স্ত্রী
রাজধানীতে মোটরসাইকেল ধাক্কায় পথচারী নিহত, আহত স্বামী-স্ত্রী
পুকুরে গোসল করাকে কেন্দ্র করে দুই দল গ্রামবাসীর সংঘর্ষে আহত ২০
পুকুরে গোসল করাকে কেন্দ্র করে দুই দল গ্রামবাসীর সংঘর্ষে আহত ২০
সর্বাধিক পঠিত
সাবেক এমপি ও বিএনপি নেতার ওপর দিনে সশস্ত্র হামলা, রাতে বাড়িতে আগুন
সাবেক এমপি ও বিএনপি নেতার ওপর দিনে সশস্ত্র হামলা, রাতে বাড়িতে আগুন
আগে রওনা দিয়েও এড়ানো গেলো না ‘নোটাম’, শাহজালালের ফ্লাইট গেলো ওসমানীতে
আগে রওনা দিয়েও এড়ানো গেলো না ‘নোটাম’, শাহজালালের ফ্লাইট গেলো ওসমানীতে
দুই বাংলাদেশিকে ধরে নিয়ে গেছে বিএসএফ, প্রতিবাদে দুই ভারতীয় আটক
দুই বাংলাদেশিকে ধরে নিয়ে গেছে বিএসএফ, প্রতিবাদে দুই ভারতীয় আটক
‘স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনায় ফার্মাসিস্ট যুক্ত করার কথা ভাবছে সরকার’
‘স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনায় ফার্মাসিস্ট যুক্ত করার কথা ভাবছে সরকার’
শৃঙ্খলা ফেরাতে রাস্তায় নামলেন ওসি
শৃঙ্খলা ফেরাতে রাস্তায় নামলেন ওসি