সরকার সাংবাদিকদের সুরক্ষায় বদ্ধপরিকর: তথ্য প্রতিমন্ত্রী

তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত বলেছেন, সরকার পেশাদার সাংবাদিকদের সুরক্ষায় বদ্ধপরিকর। ভ্রাম্যমাণ আদালতে দৈনিক দেশ রূপান্তরের শেরপুর জেলার নকলা উপজেলা সংবাদদাতা শফিউর রহমান রানাকে কারাদণ্ডের ঘটনা অনুসন্ধান শেষে প্রধান তথ্য কমিশনার বিষয়টি তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রীকে অবহিত করলে তিনি এ কথা বলেন।

সোমবার (১৮ মার্চ) সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রীকে তার দফতরে বিষয়টি অবহিত করেন প্রধান তথ্য কমিশনার ড. আবদুল মালেক। তথ্য কমিশনার শহীদুল আলম ঝিনুক ও তথ্য কমিশনার মাসুদা ভাট্টি এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

তথ্য মন্ত্রণালয় থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব জানানো হয়েছে।

প্রধান তথ্য কমিশনারের সঙ্গে আলাপকালে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার গণমাধ্যম ও পেশাদার সাংবাদিকদের সম্পূর্ণ স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে। সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় যেকোনও পেশাদার সাংবাদিককে অনাকাঙ্ক্ষিত হয়রানির বিপক্ষে এবং পেশাদার সাংবাদিকদের সুরক্ষায় বদ্ধপরিকর।’

প্রতিমন্ত্রী এ সময় আরও বলেন, ‘জনগণের তথ্য পাওয়ার অধিকার আছে। সরকারের কাজে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তথ্য অধিকার আইন করেছেন। এ আইনের আওতায় জনগণের তথ্য অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।’ 

তথ্য কমিশনার শহীদুল আলম ঝিনুক অনুসন্ধান প্রতিবেদন ইতোমধ্যে তথ্য কমিশনে দাখিল করেছেন বলে প্রতিমন্ত্রীকে অবহিত করেন প্রধান তথ্য কমিশনার। মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) এ বিষয়ে আইনানুগ কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি। এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট উভয়পক্ষকে তথ্য কমিশনে হাজির হওয়ার জন্য সমন দেওয়া হবে বলেও প্রতিমন্ত্রীকে জানান প্রধান তথ্য কমিশনার। এ সময় তিনি তথ্য কমিশনের সার্বিক কার্যক্রম সম্পর্কেও প্রতিমন্ত্রীকে অবহিত করেন।

এর আগে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে দৈনিক দেশ রূপান্তরের শেরপুর জেলার নকলা উপজেলা প্রতিনিধি শফিউর রহমান রানাকে কারাদণ্ড প্রদানের ঘটনায় ৭ মার্চ একটি জাতীয় দৈনিকের প্রথম পৃষ্ঠায় ‘তথ্য চেয়ে আবেদন করে দেশ রূপান্তরের সাংবাদিক জেলে’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশের প্রেক্ষিতে তথ্য অধিকার আইন, ২০০৯ এর ২৫(৫) ধারা অনুযায়ী — ঘটনাটি তদন্তের জন্য তথ্য কমিশনার শহীদুল আলম ঝিনুককে দায়িত্ব দেয় তথ্য কমিশন।

সাংবাদিককে কারাদণ্ড প্রদানের বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে আমলে নিয়ে তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত এ বিষয়ে প্রধান তথ্য কমিশনার ড. আবদুল মালেকের সঙ্গে কথা বলে ঘটনাটির সুষ্ঠু তদন্তের ওপর জোর দেন। প্রতিমন্ত্রী বিষয়টি নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করেছেন।

 উল্লেখ্য, এর আগে গত ৫ মার্চ শেরপুরের নকলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয়ে তথ্য চাইতে যাওয়া সাংবাদিক শফিউজ্জামান রানাকে আটক করে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ৬ মাসের কারাদণ্ড দিয়ে জেলহাজতে পাঠানো হয়। ঘটনাটি ঘটেছে ওই সাংবাদিকের স্কুলপড়ুয়া ছেলের সামনে।

সরকারি কাজে বাধা, বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি ও অসদাচরণের অভিযোগে ৫ মার্চ নকলা উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. শিহাবুল আরিফ ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে ওই সাংবাদিককে কারাদণ্ড দেন।

আরও পড়ুন:

জামিনে মুক্তি পেলেন ‘তথ্য চাইতে গিয়ে’ কারাদণ্ড পাওয়া সাংবাদিক

‘তথ্য চাওয়ায়’ কারাগারে সাংবাদিক, বিভিন্ন সংগঠনের উদ্বেগ ও মুক্তি দাবি