পরিবহন মালিক সমিতির হুঁশিয়ারি

বাড়তি ভাড়া নিলে সেই গণপরিবহন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হবে

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি মসিউর রহমান রাঙ্গা বলেছেন, এবারের ঈদযাত্রায় আন্তঃজেলা বা দূরপাল্লায় যদি কোনও পরিবহন বাড়তি ভাড়া নেয়, এবং সেটার প্রমাণ যদি আমরা পাই, তবে সেই পরিবহন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হবে। একইসঙ্গে নেওয়া হবে আইনানুগ পদক্ষেপ। তিনি বলেন, ‘হাইওয়েতে যানজট এড়াতে এবার ঈদযাত্রায় ড্রোনের সহায়তা নিচ্ছি ‘

পবিত্র রমজান ও আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে মহাসড়ক ও সড়কে যাত্রী সাধারণের যাতায়াত নির্বিঘ্ন, নিরাপদ ও যানজটমুক্ত রাখার লক্ষ্যে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় একথা বলেন তিনি।

মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) হাইওয়ে পুলিশের অ্যাডিশনাল আইজিপি মো. শাহাবুদ্দিন খানের সভাপতিত্বে রাজারবাগ পুলিশ অডিটোরিয়ামে এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়।

মসিউর রহমান রাঙ্গা বলেন, ‘এবারের ঈদে সম্ভাব্য কোন কোন এলাকায় যানজট বা ব্লক তৈরি হতে পারে, সেটা চিহ্নিত করা হয়েছে। আমরা এবার হাইওয়েতে ঈদযাত্রায় ড্রোনের সহায়তা নিচ্ছি। ড্রোনের সহায়তায় চিত্র দেখে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিতে পারবো।’

তিনি বলেন, ‘হাইওয়ের অনেক রাস্তা চার লেন হচ্ছে। কোথাও কোথাও হয়ে গেছে। এখন রাস্তায় যদি কোনও যানবাহন তাৎক্ষণিক অকেজো হয়ে পড়ে, তাহলে সেটি এখন সরানো সহজ হবে। ক্রুটিপূর্ণ কোনও যানবাহন যাতে ঈদে সড়কে না নামে, সেটা নিশ্চিত করতে আমরা নির্দেশনা দিয়েছি।’

রাঙ্গা বলেন, ‘আমরা সবাই ভালোভাবে ঈদযাত্রায় যেতে চাই। ভালোভাবে যাবার সুযোগটা আমাদের তৈরি করতে হবে। ঈদে আমরা সবাই একসঙ্গে যেতে চাই, সেটা না করে আমরা ভাগ ভাগ করে, আগে বা পরেও যেতে পারি। তাহলে ৫, ৭ বা ৮ ঘণ্টার মধ্যেই গন্তব্যে যেতে পারবো।

ঈদের দুদিন আগেই যেতে হবে ব্যাপারটা সেরকম না। জনসংখ্যার তুলনায় গণপরিবহন আমাদের অনেক কম। হজের সময় সৌদি আরবে সরকার বাস হায়ার করে। ঈদে আমাদের এখানে সে ধরনের কোনও ব্যবস্থা নেই। তাই আপনি আরও আগে বা ঈদের পরও যেতে পারেন। আমরা আশ্বস্ত করছি ঈদযাত্রা স্বস্তির হবে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা লক্ষ্য করি, কিছু লক্কর-ঝক্কর বাস যেগুলো সারা বছর সিরিয়াল পায় না, ঈদের সময় এগুলো রাস্তায় নেমে পড়ে। আমরাও ধরতে পারি না, পুলিশও বুঝতে পারে না— কোত্থেকে এগুলো রাস্তায় আসে। এগুলো রিজার্ভ হিসেবে চলে। গার্মেন্টস শ্রমিকরা নিয়ে যান। যে রাস্তায় আমাদের ছোট বাসও চলে না, সেখানে দেখি, বিআরটিসির ডাবল ডেকার বাস ঢুকে পড়েছে। আমরা এখনও মহাসড়ক থেকে নছিমন, করিমন, ভটভটি সরাতে পারিনি। এটাও একটা বাধা আমাদের।’

‘ঈদে প্রতিবছরই বাড়তি ভাড়ার অভিযোগ আসে। প্রমাণও মেলে। কিন্তু কার্যকর কোনও উদ্যোগ নিতে দেখা যায় না’, এমন প্রশ্নে রাঙ্গা বলেন, ‘অনেক পরিবহনই ঈদের সময় অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করে। যেসব বাস কোম্পানি সুনামের সঙ্গে কাজ করছে, তাদের কোনও বাস যদি ভাড়া বেশি নেয়, তাহলে আমাদের জানাবেন, ব্যবস্থা নেবো। প্রয়োজনে স্পটে উপস্থিত হবো। অভিযোগ পেলেই আমরা সেখানে যাবো। কোন কোন জায়গায় কারা বাড়তি ভাড়া নিচ্ছে, সেটা আমরা শনাক্ত করবো।’

বাড়তি ভাড়া নেওয়ার সুনির্দিষ্ট প্রমাণ পেলে কী ব্যবস্থা নেবেন, জানতে চাইলে রাঙা বলেন, ‘আমরা সুনির্দিষ্ট তথ্য-প্রমাণ পেলে সেই পরিবহনের চলাচল বন্ধ করে দেবো। আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবো।’

মহাখালী বাস টার্মিনালের সামনে সড়কের তিনটি লেনেই অবৈধ পার্কিংয়ের দখলে। এর বড় প্রভাব পড়ে সড়কে গাড়ি চলাচলে। সেটা সমাধান না হলে ঈদযাত্রার বড় অংশ সময় যাবে ঢাকাতেই। এ ব্যাপারে মসিউর রহমান রাঙ্গা বলেন, ‘রাস্তা লক বা ব্লক করে দাঁড়ানোর কোনও অধিকার আমাদের নেই। যারা অবৈধভাবে পার্কিং করবেন সড়কে, আর যান চলাচল বিঘ্নিত করবেন, তাদের বিরুদ্ধে ট্রাফিক পুলিশ আইনানুগ পদক্ষেপ নেবে। তাতে আমাদের কোনও সমস্যা নেই।’