রেস্তোরাঁয় বিচ্ছিন্নভাবে কোনও অভিযান হবে না

ভোক্তা অধিদফতর ঢাকার রেস্তোরাঁগুলোতে আজ রবিবার (৩১ মার্চ) থেকে সমন্বিতভাবে অভিযান চালাবে। কেউ বিচ্ছিন্নভাবে অভিযানে যাবে না বলে জানিয়েছেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের মহাপরিচালক (ডিজি) এ এইচ এম সফিকুজ্জামান। তিনি বলেন, ‘স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে ভোক্তা ও ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে অ্যাপ-নির্ভর আধুনিক মনিটরিং সিস্টেম চালু করতে হবে। সরকারের মন্ত্রণালয় ও সংস্থাগুলোর সমন্বয়হীনতার কারণে প্রচলিত আইনি কাঠামোতে বৈধভাবে রেস্টুরেন্ট ব্যবসা করা খুবই কষ্টকর।’

রবিবার (৩১ মার্চ) রাজধানীর কাওরান বাজারে জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের প্রধান কার্যালয়ে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।

সভাপতির বক্তব্যে ভোক্তার ডিজি বলেন, ‘এতগুলো মন্ত্রণালয়, প্রায় ৮-৯টা মন্ত্রণালয় এবং ১৪-১৫টা অধিদফতর। কিন্তু রেস্তোরাঁ মালিকদের একক কোনও অভিভাবক, কিংবা ওয়ান স্টপ সার্ভিস পাওয়ার কোনও জায়গা নেই। এটি দেখভালের দায়িত্ব বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের। রেস্তোরাঁ কীভাবে চলবে— এ বিষয়ে তাদের গাইডলাইন ও আইন আছে।’

তিনি বলেন, ‘রেস্তোরাঁ করতে গেলে জেলা প্রশাসনের কাছ থেকে দুটি অনুমতি নিতে হয়। আবার সিটি করপোরেশনের ট্রেড লাইসেন্সও নিতে হয়। এখন সিটি করপোরেশন দেখতে চায় জেলা প্রশাসনের অনুমতি, আবার জেলা প্রশাসন দেখতে চায় সিটি করপোরেশনের অনুমতি। সমস্যা হচ্ছে একেকটি আইন হয়েছে কিন্তু সেটি বাস্তবায়ন করা খুবই কঠিন।’

প্রচলিত আইনের কাঠামোতে বৈধভাবে রেস্টুরেন্ট পরিচালনা করা খুবই কষ্টকর জানিয়ে তিনি বলেন, ‘রাস্তার পাশের রেস্টুরেন্ট বাদ দিয়েও ৫-৬ হাজার রেস্টুরেন্ট আছে। এখন সবকিছু মেনে ওনারা বৈধভাবে রেস্টুরেন্ট ব্যবসা পরিচালনা করতে পারেনি, সেই সাপোর্টটাও সরকারি সংস্থাগুলো থেকে পাওয়া যায়নি। ফলে একটি বিশ্রী অবস্থা তৈরি হয়েছে।’

ভোক্তার ডিজি বলেন, ‘রেস্টুরেন্ট ব্যবসা ব্যাপকভাবে বিস্তৃতি লাভ করেছে। এখানে প্রচুর মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। এটি একটি সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান। সেখানে সমস্যাও আছে। সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে আমরা যেন এ খাতকে সুন্দরভাবে গড়তে পারি, সে চেষ্টা করতে হবে। আমরা সে লক্ষ্যেই কাজ করছি।’

সভায় অধিদফতরের পরিচালক (কার্যক্রম ও গবেষণাগার) ফকির মুহাম্মদ মুনাওয়ার হোসেন বলেন, ‘বেইলি রোডের ঘটনার মতো হৃদয় বিদারক ঘটনা যেন আর না ঘটে, সে লক্ষ্যে পূর্ব থেকেই প্রস্তুতি নেওয়া প্রয়োজন।’  তিনি সম্মিলিতভাবে পরিচালিত অভিযান রেস্তোঁরাগুলোতে বিদ্যমান সমস্যা নিরসনে সহায়ক হবে বলে জানান।

এ সময় সভায় সমন্বিতভাবে অভিযান পরিচালনার পক্ষে সরকারি সংস্থাগুলো মত দেয়।

বাংলাদেশ রেঁস্তোরা মালিক সমিতির মহাসচিব ইমরান হাসান রেস্তোঁরার সমস্যা চিহ্নিত করে তার সমাধানের লক্ষ্যে পদক্ষেপ গ্রহণের কথা বলেন। এছাড়া সম্মিলিত অভিযানের ক্ষেত্রে এফবিসিসিআইয়ের প্রতিনিধি, বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির প্রতিনিধি, একজন খাদ্য বিশেষজ্ঞ এবং গণমাধ্যমকর্মীদের অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব করেন তিনি।

সভায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (ডিসি) মো. আবু ইউসুফ, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাহবুব হাসান, এফবিসিসিআই এর পরিচালক মো. নিয়াজ আলী চিশতি, ঢাকা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার আঁখি শেখ, বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের উপ-পরিচালক মো. আব্দুস সোবহান, বিএসটিআই-এর উপ-পরিচালক মো. রিয়াজুল হক ও কনজ্যুমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) প্রতিনিধি ড. মঞ্জুর-ই-খোদা তরফদার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।