মাদক গডফাদারদের ১৭৮ কোটি টাকার সম্পদ জব্দ

মাদক ব্যবসায় গডফাদারদের অবৈধভাবে অর্জিত ১৭৮ কোটি ৪৪ লাখ টাকার সম্পদ জব্দ করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। বুধবার (১৭ এপ্রিল) দুপুরে সিআইডি সদর দফতরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান সিআইডি প্রধান মোহাম্মদ আলী মিয়া।

তিনি বলেন, সিআইডি এখন পর্যন্ত ৩৫টি মাদক সংক্রান্ত মানি লন্ডারিং মামলার তদন্ত করছে। এর মধ্যে ১০টি মামলার তদন্তে প্রকৃত গডফাদারদের আইনের আওতায় নিয়ে এসেছে। তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, মাদকের অর্থে কেনা বাড়ি-গাড়ি-জমি ক্রোক করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত মাদক মামলায় ১২২ জন আসামিকে গ্রেফতার করেছে সিআইডি, এর মধ্যে এজাহারনামীয় ৬৭ জন। এসব মামলায় গডফাদারদের গ্রেফতার করা হয়েছে। কিছু মামলার চার্জশিট দেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ১০টি মামলার মধ্যে তিনটি মামলায় গডফাদারদের ৯.১৪ একর জমি ও দুটি বাড়ি জব্দ করা হয়েছে, যার মূল্য ৮ কোটি ১১ লাখ টাকা। মাদক সংক্রান্ত মানি লন্ডারিংয়ের বিভিন্ন মামলায় ব্যাংকে গচ্ছিত ১ কোটি ২৩ লাখ ২৩ হাজার ৪২৫ টাকা ফ্রিজ করা হয়েছে। আরও ৩৫.১৭৩ একর জমি, ১২টি বাড়ি ও একটি গাড়ি ক্রোকের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। যার মূল্য ৩৬ কোটি ৮২ লাখ টাকা।

সিআইডি প্রধান বলেন, মাদক মামলার তদন্তে সাধারণত সেবনকারী বা বাহক পর্যন্ত তদন্ত করেই চার্জশিট দেওয়া হয়। এর পেছনে গডফাদাররা ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে গেছে। কিন্তু গডফাদারদের আরও আগে আইনের আওতায় আনতে পারলে মাদকের এত ব্যাপকতা হতো না। সিআইডি এই প্রথম গডফাদারদের গ্রেফতার ও তাদের সম্পদ ক্রোকের কাজে হাত দিয়েছে।

এক প্রশ্নের জবাবে মোহাম্মদ আলী মিয়া বলেন, সম্পদ ক্রোকের বিষয়ে আমরা আদালতে উপস্থাপন করি, আদালত সন্তুষ্ট হয়ে ক্রোকের নির্দেশ দেন। পরে ক্রোক করে আদালতেই জমা দেওয়া হয়।

গডফাদারদের পরিচয়ের বিষয়ে তিনি বলেন, তারা এতদিন ধরাছোঁয়ার বাইরে ছিল। তারা প্রকৃতপক্ষে পেশাগতভাবে মাদক ব্যবসায়ী। তাদের আর কোনও পরিচয় নেই।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে সিআইডি প্রধান বলেন, মাদক সংশ্লিষ্টতায় সাধারণত প্রথমে বাহক বা সেবনকারীকে ধরা হয়। তারপর তদন্ত কর্মকর্তা এর পেছনে কারা আছেন সে পর্যন্ত যেতেন না। সিআইডি ভিন্ন আঙ্গিকে পেছনের ব্যক্তিদের খোঁজ নেওয়া শুরু করে। তারা কোথায় যোগাযোগ করছে, তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট তল্লাশি করা হচ্ছে। সন্দেহজনক লেনদেন পেলে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তারা মাদক ব্যবসার কথা স্বীকার করছে। যেহেতু গডফাদারদের গায়ে হাত পড়েছে, তারা গ্রেফতার হচ্ছে, সম্পত্তিও ক্রোক হচ্ছে। তাই আমি মনে করি অন্য গডফাদাররাও নিরুৎসাহিত হবে। আমি বিশ্বাস করি অন্য গডফাদাররা মাদক ব্যবসা ছেড়ে দেবে।