ফালুর বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দুদকের

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সাবেক রাজনৈতিক উপদেষ্টা মোহাম্মদ মোসাদ্দেক আলী ফালুর বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট (অভিযোগপত্র) দাখিল করেছে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক)।

প্রায় ১৮ কোটি টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও মিথ্যা তথ্য দেওয়ার অভিযোগে বুধবার (১৫ মে) ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতে এ সম্পূরক চার্জশিট দাখিল করেন দুদকের তদন্ত কর্মকর্তা মো. মশিউর রহমান।

এর আগে গত (২৯ এপ্রিল) আদালতে চার্জশিট দাখিলের অনুমোদন দিয়েছিল দুদক।

চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়, দুদকের অধিকতর তদন্তে মোহাম্মদ মোসাদ্দেক আলী ফালুর স্থাবর সম্পদের পরিমাণ ৩৫ কোটি ৭৮ লাখ ১৩ হাজার ৫৩৮ টাকা এবং অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ ১১১ কোটি ৩৩ লাখ ৮১ হাজার ৩০০ টাকা। ২০০৭-০৮ করবর্ষ থেকে ২০১৬-১৭ করবর্ষ পর্যন্ত মোট ব্যয় ২১ কোটি ৫ লাখ ২৯ হাজার টাকাসহ তার মোট সম্পদ পাওয়া যায় ১৬৮ কোটি ১৭ লাখ ২৩ হাজার ৮৩৮ টাকা।

চার্জশিটে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, ২০০৭-০৮ করবর্ষ থেকে ২০১৬-১৭ করবর্ষ পর্যন্ত তার আয় ১০২ কোটি ৩ লাখ ৮৭ হাজার ৬৪৩ টাকা। তার প্রদর্শিত দায় বা ঋণগ্রহণ ৬৫ কোটি ৩৮ লাখ ৭০ হাজার ৭৮০ টাকাসহ মোট আয় ১৬৭ কোটি ৪২ লাখ ৫৮ হাজার ৪২৩ টাকা। আয়ের উৎস দেখান মৎস্য চাষ ও গরুর খামার। সেখান থেকে আয় ৩ কোটি ৫৭ লাখ ২০ হাজার ১০ টাকা। অন্যান্য খাত থেকে তিন লাখ ৭ হাজার ৫৮৩ টাকা। অপ্রদর্শিত আয় ৭৬ কোটি ৪০ লাখ ৮০৫ টাকা। রোজা প্রোপার্টিজ লিমিটেড কোম্পানি থেকে ঋণের বিপরীতে প্রদর্শিত আয় ১৩ কোটি ৫০ লাখ টাকা। মোট ১৭ কোটি ৮৬ লাখ ৬৮ হাজার ৩৯৮ টাকার আয়ের উৎসের ক্ষেত্রে সঠিকভাবে হিসাব বা রেকর্ডপত্র প্রদর্শন করতে সক্ষম হননি মোহাম্মদ মোসাদ্দেক আলী ফালু —যা তার জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ সম্পদ মর্মে তদন্তকালে প্রতীয়মান হয়।

চার্জশিটে মোহাম্মদ মোসাদ্দেক আলীকে (ফালু) সাবেক সংসদ সদস্য হিসেবে উল্লেখ করা হয়। তার পিতার নাম মরহুম আব্দুল মান্নান। চার্জশিটে তিনি বনানীর পুরাতন ডিওএইচএস-এর ৫ নম্বর রোডের ৬৮ নম্বর বাড়িতে বসবাস করেন এবং স্থায়ী ঠিকানা রাজধানীর ৭৯৭ দক্ষিণ শাহজাহানপুর হিসেবে উল্লেখ করা হয়। মোসাদ্দেক আলী ফালুর অর্জিত ১৭ কোটি ৮৬ লাখ ৬৮ হাজার ৩৯৮ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও তা নিজের ভোগ-দখলে রেখে এবং মিথ্যা তথ্য দিয়ে সম্পদ বিবরণী দাখিল করার অপরাধ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইনে আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তদন্ত কর্মকর্তা মো. মশিউর রহমান।

২০১৭ সালের ১৫ মে মোহাম্মদ মোসাদ্দেক আলী ফালুর বিরুদ্ধে দুদক আইনে মামলাটি দায়ের করা হয়েছিল। এর আগে তদন্ত শেষে মামলাটির চার্জশিট দেওয়া হলেও পরে আবার অধিকতর তদন্তের আদেশ দেন আদালত। আদালতের আদেশ অনুযায়ী দুদক উপ-পরিচালক মশিউর রহমানকে তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ করেন। অধিকতর তদন্ত শেষে তিনি চার্জশিট দাখিলের অনুমোদন চেয়ে কমিশনে প্রতিবেদন দাখিল করলে কমিশন চার্জশিট দাখিলের অনুমোদন দেন। বুধবার (১৫ মে) আদালতে এ চার্জশিট দাখিল করা হয়।