১০ বছরে পাট রফতানিতে কত আয়, সংসদে জানালেন মন্ত্রী

পাট রফতানি করে ২০১৩-১৪ থেকে ২০২২-২৩ অর্থবছর পর্যন্ত ১০ বছরে ১০ হাজার ৪৫৪ কোটি ১৬ লাখ টাকা আয় হয়েছে বলে জানিয়েছেন বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক। বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) জাতীয় সংসদে নোয়াখালী-২ আসনের সরকার দলীয় এমপি মোরশেদ আলমের প্রশ্নের জবাবে এ তথ্য জানান পাটমন্ত্রী।

১০ বছরে বাংলাদেশ থেকে কাঁচাপাট ১৯ দশমিক শূন্য ৭ লাখ মেট্রিক টন রফতানি হয়েছে উল্লেখ করে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী জানান— ভারত, পাকিস্তান, চীন, নেপাল, ব্রাজিল, ইউকে, জিবুতি, ভিয়েতনাম, অস্ট্রিয়া, ইউএসএ, স্পেন, জার্মানি, মেক্সিকো, ফ্রান্স, মালয়েশিয়া, জাপান, কোরিয়া, তুর্কি, ইন্দোনেশিয়া, বেলজিয়াম, তিউনিশিয়া, কেনিয়া, উগান্ডা, সিঙ্গাপুরসহ ১৩৫টি দেশে রফতানি করা হয়েছে। এ সময়ে পাট রফতানি বাবদ ১০ হাজার ৪৫৪ কোটি ১৬ লাখ টাকা আয় হয়েছে।

ঢাকা-৮ আসনের সরকার দলীয় এমপি আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিমের প্রশ্নের জবাবে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী বলেন, উন্নত প্রযুক্তিনির্ভর পাট ও পাটবীজ উৎপাদন এবং সম্প্রসারণ প্রকল্পের আওতায় ২০১৮ সাল হতে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত ১২ লাখ ৯ হাজার ২৬ মেট্রিক টন কাঁচাপাট এবং দুই হাজার ১৬৪ দশমিক ১২১ মেট্রিক টন পাটবীজ উৎপাদন করা হয়েছে।

স্বতন্ত্র এমপি সাদ্দাম হোসেন পাভেলের প্রশ্নের জবাবে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে দেশের স্থানীয় বাজারে বস্ত্রের চাহিদার পরিমাণ প্রায় সাত বিলিয়ন মিটার। দেশের স্থানীয় বাজারে বস্ত্রের চাহিদার ঘাটতি নেই। চাহিদা অনুযায়ী পুরোটাই দেশে উৎপাদিত হয়। তৈরি পোশাক রফতানির ক্ষেত্রে ওভেন এবং ডেনিম বস্ত্রের চাহিদা প্রায় ৮ বিলিয়ন মিটার। এর মধ্যে প্রায় ৪ বিলিয়ন মিটার দেশে উৎপাদিত হয় এবং প্রায় ৪ বিলিয়ন মিটার আমদানি করা হয়। তবে তৈরি পোশাক রফতানির ক্ষেত্রে নিট সুতার চাহিদা প্রায় ১৬ লাখ মেট্রিক টন। এর মধ্যে প্রায় ১২ লাখ মেট্রিক টন সুতা দেশে উৎপাদিত হয় এবং প্রায় চার লাখ মেট্রিক টন ঘাটতি রয়েছে, যা আমদানি করা হয়। ঘাটতি (ওভেন ও ডেনিম বস্ত্রের) পূরণের জন্য প্রধানত চীন ও ভারত থেকে আমদানি করা হয়।

তিনি বলেন, শিল্প উদ্যোক্তারা দেশে নতুন নতুন বস্ত্র ও সুতা উৎপাদনকারী শিল্প প্রতিষ্ঠান স্থাপন করছেন। ফলে তৈরি পোশাক রফতানির জন্য ওভেন ও ডেনিম বস্ত্রের ঘাটতি ক্রমান্বয়ে কমে আসবে।

স্বতন্ত্র এমপি পংকজ নাথের প্রশ্নের জবাবে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী বলেন, সরকারি সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে ২০২০ সালের ১ জুলাই হতে বিজেএমসির ২৫টি মিলের উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ করা হয়। উৎপাদনকৃত ২০টি মিল ইজারার ভিত্তিতে বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় পুনরায় চালুর সরকারি সিদ্ধান্তে ১৪টি মিলের লিজ চুক্তি স্বাক্ষরিক হয়েছে। এর মধ্যে সাতটি মিল ইতোমধ্যে পাটজাত পণ্য উৎপাদন কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এগুলোর মধ্যে ‍কিছু কিছু ‍মিল তাদের পাটজাত পণ্য বিদেশে রফতানি করছে।

আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য আলী আজমের অপর এক প্রশ্নের উত্তরে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশ হতে পাটজাত পণ্য হেসিয়ান, সেকিং, সিবিসি এবং ইয়ার্ণ টুয়াইন রফতানি করা হচ্ছে। এছাড়া ২৮২ ধরনের বহুমুখী পাটজাত পণ্য রফতানি করা হচ্ছে। পাটের ব্যাগ ব্যবহারের লক্ষ্যে ‘পণ্যে পাটজাত মোড়কের বাধ্যতামূলক ব্যবহার আইন’ প্রণীত হয়েছে। এই  আইনের অধীনে ধান, চাল, গম, ভুট্টা, সার, চিনি, মরিচ, হলুদ, পেঁয়াজ, আদা, রসুন, ডাল, ধনিয়া, আলু, আটা, ময়দা, তুষ-খুদ-কুড়া, পোল্ট্রি ও ফিস ফিড মোড়কীকরণে পাটজাত মোড়কের ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।