‘ডিএসসিসির রাজস্ব বেড়েছে, এখন আর প্রকল্প নির্ভর থাকতে হয় না’

দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস বলেছেন, রাজস্ব আয় বেড়ে যাওয়ায় ঢাকা দক্ষিণ সিটিকে এখন আর উন্নয়ন কার্যক্রম বাস্তবায়নে প্রকল্প নির্ভর থাকতে হয় না। গত চার বছরে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নিজস্ব অর্থায়নে ১২৭৫ কোটি টাকার বেশি অবকাঠামো নির্মাণ, উন্নয়ন ও সংস্কার কাজ বাস্তবায়ন করেছে। 

বুধবার (৩১ জুলাই) নগর ভবনের মেয়র মোহাম্মদ হানিফ মিলনায়তনে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণার সময় মেয়র ব্যারিস্টার তাপস একথা বলেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন করপোরেশনের বিভাগীয় প্রধান, আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও কাউন্সিলররা।

তাপস বলেন, দায়িত্বভার গ্রহণের প্রথম দিন থেকেই করপোরেশনের সব স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের গাফিলতি, অনিয়ম, দুর্নীতি দূর করার মাধ্যমে সুশাসন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে আমি শূন্য সহনশীলতা নীতি গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করে চলেছি। প্রশাসনিক সংস্কারের আওতায় এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া। দায়িত্ব পালনে অবহেলা, গাফিলতি ও দুর্নীতির দায়ে বিগত ৪ বছরে বিভিন্ন স্তরের ৩৯ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।

তিনি বলেন, একইসঙ্গে করপোরেশনের প্রাত্যহিক কার্যক্রম সম্পাদনে জনবলের যে তীব্র সংকট ছিল, তা উত্তরণে গত ৪ বছরে ভারী গাড়ির ১৪০ জন চালক, ৬৬ জন উপ-সহকারী প্রকৌশলী, ৮৫ জন হিসাব সহকারী, ২৭ জন রেভিনিউ সুপারভাইজার, ৫৮ জন পরিচ্ছন্ন পরিদর্শক, ২০ জন স্প্রেম্যান সুপারভাইজারসহ বিভিন্ন বিভাগে মোট ১০৬৩ জন জনবল নিয়োগ দেওয়া হয়েছে এবং ১২৫ জনের নিয়োগ কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

মেয়র আরও বলেন, কয়েকটি ব্যতিক্রম বাদে বিগত ৩ দশকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের কোনও কর্মকর্তা-কর্মচারীকে পদোন্নতি দেওয়া হয়নি। অতিরিক্ত দায়িত্ব, চলতি দায়িত্ব দিয়ে করপোরেশনের প্রাত্যহিক কার্যক্রম সম্পাদন করা হতো। এমন অনেকেই আছেন, যারা চাকরিতে যে পদে যোগদান করেছিলেন, সে পদ থেকেই পিআরএল-এ গিয়েছেন। আমরা যোগ্যতার যথাযথ মূল্যায়ন করতে চাই। সেজন্য এই পদোন্নতি জট খুলে বিগত ৪ বছরে আমরা ২০৯ জন যোগ্য প্রার্থীকে পদোন্নতি দিয়েছি।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে এক সময় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতাদি ও তাদের জিপিএফ-সিপিএফ এর লভ্যাংশ, ঠিকাদারদের বকেয়া, ডিপিডিসি-ওয়াসা-তিতাস গ্যাসসহ সেবা সংস্থাগুলোর বকেয়া পাওনা দীর্ঘদিন পরিশোধ করতে পারেনি। সুশাসন নিশ্চিত করার মাধ্যমে সবার সহযোগিতায় এবং আমাদের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আন্তরিক ও দায়িত্বশীল ভূমিকার ফলে আমরা আগের প্রায় সব বকেয়াসহ প্রাত্যহিক পাওনা পরিশোধ করেছি। একইসঙ্গে করপোশনের প্রায় সব গাড়ির নিবন্ধন সম্পন্ন করা হয়েছে। পরিশোধ করা হয়েছে দীর্ঘ ৫০ বছরের ভূমি উন্নয়ন করসহ অন্যান্য পুঞ্জীভূত বকেয়া পাওনাদিও।

ফলে যেমন সুশাসন নিশ্চিত করা হয়েছে, তেমনই মাঠ পর্যায়সহ করপোরেশনের সব স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মাঝে কর্মোদ্যম সঞ্চারিত হয়েছে বিধায় দুর্নীতি কমেছে এবং রাজস্ব আয় বেড়েছে।