আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি সেবা কার্যক্রমের অচলাবস্থা কাটাতে নিজের তত্ত্বাবধানে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) কার্যক্রম চালিয়ে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন বিএনপি নেতা ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন।
সোমবার (১৬ জুন) দুপুরে নগর ভবনে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে বৈঠক শেষে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে মশক নিধন, জন্ম সনদসহ বিভিন্ন নাগরিক সেবা নিজেদের তত্ত্বাবধানে চালু রাখার কথা জানান ইশরাক হোসেন। এ সময় আদালতের রায় মেনে মেয়র পদে শপথের বিষয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে প্রধান উপদেষ্টার প্রতি অনুরোধ জানান তিনি।
ইশরাক হোসেন বলেন, বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালতের রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে বর্তমানে ডিএসসিসিতে মেয়র হিসেবে আমাকে ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু সরকার আমাকে মেয়র পদে বসানোর বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি। তাই আমরা বিরতিহীন অবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা করেছি। কিন্তু দীর্ঘদিন আন্দোলন চলাকালীন সময়ে বিভিন্ন ধরনের নাগরিক সেবার বিষয়টি আমাদের মাথায় রাখতে হচ্ছে। আন্দোলন চলার সময় সব জরুরি সেবা কিন্তু চলমান ছিল। আমরাই সেটা নিশ্চিত করেছি। আমরা বলেছি, আমাদের আন্দোলনের জন্য যাতে জনগণের দুর্ভোগ না বাড়ে।
ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাবের বিষয়ে তিনি বলেন, ঢাকা শহরে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব বেড়েছে। আমরা রাজধানীতে মশক নিধন কর্মসূচিকে বেগবান করার জন্য এবং সেটি যাতে চলমান থাকে তা নিশ্চিত করতে আজ থেকে ধারাবাহিকভাবে বিভিন্ন দফতরের কর্মচারীদের সঙ্গে বৈঠক শুরু করছি।
তিনি আরও বলেন, আমরা ৭০টি ওয়ার্ডের পরিচ্ছন্নতা পরিদর্শকদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলাম। তাদের আমরা উৎসাহ দিয়েছি। আমরা নিশ্চিত করেছি, ভবিষ্যৎতে তাদের সমস্যাগুলো আমরা দেখবো। আগামীকাল আমাদের ৭০টির বেশি ওয়ার্ড সচিবের সঙ্গে বৈঠকের কথা রয়েছে। দৈনন্দিন যে সেবা সেগুলো চলবে, কিন্তু আমাদের আন্দোলন চলমান থাকবে। প্রতিটি ওয়ার্ড সচিবের কার্যালয়ে জন্ম-মৃত্যু সার্টিফিকেট, নাগরিক সার্টিফিকেট, ওয়ারিশ সার্টিফিকেটগুলো ওয়ার্ড সচিবদের মাধ্যমে জমা নেওয়া হবে। যাতে আন্দোলন চলাকালীন অবস্থায় নগরবাসীর দুর্ভোগ কমিয়ে আনতে পারি।
ইশরাক হোসেন বলেন, আগামী পরশুদিন স্বাস্থ্য বিভাগের সব কর্মকর্তার সঙ্গে আমরা বৈঠক করবো। যাতে ডেঙ্গুর বিষয়টি কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে পারি। প্রতিটি ওয়ার্ডে আমরা মনিটরিং টিম করবো।
সরকারকে আহ্বান জানিয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, সরকার যেন আর জনদুর্ভোগ না বাড়ায়, একটা মিনিটও কালক্ষেপণ না করে আদালতের রায় বাস্তবায়নে। অচলাবস্থা যাতে কেটে যায়, সে জন্য সরকারকে আহ্বান করছি।
তিনি বলেন, আমরা বারবার বলেছি আমাদের আন্দোলনটি শান্তিপূর্ণ। ভোটাররা স্বতস্ফূর্তভাবে এখানে আসছে এবং তাদের দাবি জানাচ্ছে। সরকার যদি তাদের নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে চায়, আগামী নির্বাচন পর্যন্ত তারা যদি দায়িত্ব পালন করতে চায় এবং সেটি তারা জনগণকে বিশ্বাস করাতে চায়, তাহলে যেন অতি দ্রুত শপথ পড়ানোর আয়োজন বাস্তবায়ন করে। না হলে এই আন্দোলন আমরা চালিয়ে যাবো।