ঢাবিতে আবার সিরাজ সিকদারের গ্রাফিতি অঙ্কন

গত ১৮ জানুয়ারি ছাত্র ইউনিয়নের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের সভাপতি মেঘমল্লার বসুর লাল সন্ত্রাস সংক্রান্ত একটি ফেসবুক পোস্টের জের ধরে একদল শিক্ষার্থী কর্তৃক মুছে ফেলা সিরাজ সিকদারের গ্রাফিতি আবার অঙ্কন করছে বিভিন্ন বাম ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীরা।

মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) রাত ৮ থেকে ‘কমরেড সিরাজ সিকদার, লও লও লও সালাম’ স্লোগান দিয়ে এই গ্রাফিতি অঙ্কন শুরু করে তারা। এ সময় গণতান্ত্রিক ছাত্রজোটের একাধিক বাম ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীদের পাশাপাশি সাধারণ শিক্ষার্থীরাও সেখানে উপস্থিত ছিলেন।

সিরাজ সিকদারের গ্রাফিতি প্রসঙ্গে বিপ্লবী ছাত্র-মৈত্রীর সাধারণ সম্পাদক জাবির আহমেদ জুবেল বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে শিক্ষার্থীদের সম্মিলিত উদ্যোগে সিরাজ সিকদারের গ্রাফিতি আঁকা হয়। সিরাজ সিকদার সবসময়ই পাকিস্তানি আধিপত্যবাদের বিরোধিতা করেছেন, পাশাপাশি ভারতীয় আধিপত্যবাদেরও বিরোধিতা করেছেন। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে সিরাজ সিকদারকে ক্রসফায়ার করে শেখ মুজিব হত্যা করে।’

তিনি বলেন, অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে এই দেয়ালটা শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ থেকে এখানে সিরাজ সিকদারের ছবি আঁকা হয়েছিল। কিন্তু একটি বিশেষ গ্রুপ বিক্ষোভের নাম করে এই ছবিটি মুছে ফেলে। কিন্তু এখন আবার সেই শিক্ষার্থীরা যারা আগে সিরাজ সিকদারের ছবিটি অঙ্কন করেছিল তারা আবার অঙ্কন করছে।

গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের সভাপতি নিশান আহমেদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন যেই গ্রুপটা সবচেয়ে বেশি সর্বহারা শ্রমজীবী মানুষের সাথে তাদের শ্রেণিকে রিপ্রেজেন্ট করে লড়াই করেছে তার নেতৃত্ব দিয়েছেন কমরেড সিরাজ সিকদার। কিন্তু স্বাধীনতার পর সর্বপ্রথম বিচারবহির্ভূত হত্যার শিকার হয়েছেন এই সিরাজ সিকদার।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ যতদিন শোষণমুক্ত না হবে ততদিন এদেশে সিরাজ সিকদারের লড়াই চলতে থাকবে। তার চেতনাকে বাঁচিয়ে রাখার জন্যই আমরা বিভিন্ন সময়ে তার গ্রাফিতিসহ স্মৃতি চিহ্ন সংরক্ষণ করে আসছি। কিন্তু কিছুদিন আগে একটি গোষ্ঠী যারা গণআন্দোলনকে নেতৃত্ব দিয়েছে দাবি করে কিন্তু গণআন্দোলনের আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করে না– তারা একজন ছাত্রনেতার একটা বক্তব্যের জের ধরে সিরাজ সিকদারের গ্রাফিতিটা মুছে দিলো। এটা শুধু ছবি মুছে দেওয়া না এটা সিরাজ সিকদারের চেতনাকে মুছে দেওয়ার একটি পরিকল্পনা। যারা এই চেতনাকে মুছে দেওয়ার চেষ্টা করবে তাদের বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই অব্যাহত থাকবে।

উল্লেখ্য, গত ১৮ জানুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি মেঘমল্লার বসুর একটি ফেসবুক পোস্ট নিয়ে মধ্যরাতে বিক্ষোভ করে শিক্ষার্থীরা। এক পর্যায়ে তারা ঢাবির কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের পাশের দেওয়ালে আঁকা সিরাজ সিকদারের চিত্রকর্মে জুতা নিক্ষেপ করে এবং সেই চিত্রকর্ম মুছে ফেলে।