মধ্যরাতে রাজধানীর জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন কেন্দ্রের (নিটোর বা পঙ্গু হাসপাতাল) সামনে জুলাই আন্দোলনে আহতরা স্বীকৃতি ও পুনর্বাসনের দাবিতে সড়ক অবরোধ করেছে।
শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ১০টার দিকে আগারগাঁও পঙ্গু হাসপাতাল এবং জাতীয় চক্ষু ইনস্টিটিউট হাসপাতালের সামনের সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন আহতরা। এতে সড়কের দুইপাশে যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
'যাদের জন্য জুলাই গণঅভ্যুত্থান হয়েছে। স্বৈরাচার মুক্ত স্বাধীন রাষ্ট্র হয়েছে। জনগণের সরকার হয়েছে। অথচ তাদেরকেই গত ছয়মাস ধরে অবহেলায় পাত্র বানিয়ে রাখা হয়েছে। এটা তো হওয়ার কথা ছিল না। এই সরকার আমাদের আগে মূল্যায়ন করা দরকার ছিল। তারাই যদি না করে তাহলে পরের সরকার কী করবে।' কথাগুলো বলছিলেন ৫ আগস্ট সাভার-আশুলিয়ায় চোখ হারানো মিজানুর রহমান।
সরেজমিনে দেখা যায়, পঙ্গু হাসপাতাল, নিউরো সায়েন্স হাসপাতাল ও চক্ষু বিজ্ঞান হাসপাতালসহ আশপাশের বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের শতাধিক আহতরা রাস্তায় নেমে অবরোধ করছে৷ তারা বিভিন্ন সাংবাদিক ও ব্যক্তিদের তাদের দুরবস্থার কথা বলছেন। তাদের কারও চোখ নেই, হাত নেই, পা নেই কিংবা কারও কারও শরীরের বিভিন্ন অঙ্গহানি হয়েছেন। অনেকে ক্রাচে ভর করে আন্দোলন করছেন।
তারা জানান, গত তিন মাস আগেও জুলাই আন্দোলনে আহতরা পঙ্গু হাসপাতালের সামনে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করেছেন। তখন মধ্যরাতে হাসপাতালের সামনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ও উপদেষ্টাসহ চারজন উপদেষ্টা তাদের দাবি-দাওয়া পূরণের আশ্বাস দিলে আন্দোলনকারীরা সরে যায়। পরে তাদের সঙ্গে একটি বৈঠকে পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে আহতদের স্বীকৃতি এবং পুনর্বাসন, চাকরির ব্যবস্থা, চিকিৎসা ও ভাতা ব্যবস্থার বাস্তবায়ন করার কথা ছিল। এরপর এতদিন তাদের কোনও একটি দাবিও সরকার পূরণ করেনি বলে আন্দোলনকারীরা দাবি করেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, মধ্যরাতেও সড়কের দুই লেনে অবস্থান নিয়ে জুলাই-আগস্ট বিপ্লবে আহতরা বিক্ষোভ করছেন। এতে আগারগাঁওগামী ও আগারগাঁও থেকে শিশুমেলা মোড় পর্যন্ত লিঙ্ক রোডে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। এ সড়কে প্রতিটি গাড়ি ঘুরিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
সড়ক অবরোধের বিষয়ে শের-ই-বাংলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. গোলাম আজম বলেন, রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি এবং ইটালি পাঠানোর দাবি জুলাইয়ে আহত কিছু আহতরা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন। তারা পঙ্গু হাসপাতালে সামনে এবং চক্ষু হাসপাতালের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের লোক আমাদের আছে।
. ছবি: আরমান ভূঁইয়া