মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) বিকাল ৫টার দিকে রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক জিপি হাউজের সামনে এ ঘট্না ঘটে। এর আগে সকাল ১০টা থেকে ‘চাকরিচ্যুত ও অধিকার বঞ্চিত গ্রামীণফোন শ্রমিক ঐক্য পরিষদ’ এর ব্যানারে এই বিক্ষোভ শুরু হয়। প্রায় তিন শতাধিক চাকরিচ্যুত কর্মকর্তা-কর্মচারী এতে অংশ নেন।
বিক্ষোভকারীদের দাবি, অবৈধভাবে চাকরিচ্যুত কর্মীদের পুনর্বহাল এবং প্রতিষ্ঠানটির মুনাফার ৫ শতাংশ পাওনার বিলম্ব জরিমানা দিতে হবে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে ভাটারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মাজহারুল ইসলাম জানান, আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে জলকামান ব্যবহার এবং কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে। তবে তিনি আটক ব্যক্তিদের নির্দিষ্ট সংখ্যা জানাতে পারেননি।
গত এক মাস ধরে অবৈধভাবে চাকরিচ্যুত করার অভিযোগে এবং ছাঁটাই করা শ্রমিকদের কাজে পুনর্বহালের দাবিতে জিপি হাউজের সামনে বিক্ষোভ করছে বঞ্চিত গ্রামীণফোন শ্রমিক ঐক্য পরিষদ। বিক্ষোভে অংশ নেওয়া কর্মীরা অভিযোগ করেন, ২০১০ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত ৩ হাজার ৩৬০ জন কর্মচারীকে বিনা কারণে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।
এ সময় তাদের, ‘এক দফা এক দাবি, ৫ শতাংশ মুনাফা দিবি’, ‘জিপি ম্যানেজমেন্টের দোষী ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই’, ‘ম্যানেজমেন্টের দালালেরা, হুঁশিয়ার সাবধান’, ‘গ্রামীণফোনের দালালেরা, হুঁশিয়ার সাবধান’, ‘বকেয়া না দিলে, পিঠের চামড়া থাকবে না রে, ‘জাস্টিস জাস্টিস, উই ওয়ান্ট জাস্টিস’সহ বিভিন্ন স্লোগান দিতে দেখা যায়।
এদিকে, চাকরিচ্যুত কর্মচারীদের আন্দোলন সামাল দিতে জিপি হাউজের ভেতরে ও সামনে পুলিশের পাশাপাশি অন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।
এদিকে গ্রামীণ ফোন কর্তৃপক্ষ জানায়, গ্রামীণফোনের কিছু সাবেক কর্মী চাকরি সংক্রান্ত নানাবিধ দাবি-দাওয়া নিয়ে গত কয়েক মাস ধরে জিপি হাউজের সামনে সমবেত হচ্ছেন। আমাদের জানা মতে, তাদের বেশিরভাগ বেশ কয়েক বছর আগেই প্রতিষ্ঠান ছেড়ে যান এবং আইন অনুযায়ী তাদের প্রাপ্য গ্রহণ করেন। এছাড়া তারা যে দাবিগুলো তুলেছেন সেগুলো বর্তমানে আদালতে বিচারাধীন। বিচারিক ব্যবস্থার প্রতি গ্রামীণফোন শ্রদ্ধাশীল। তাই আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আদালতে এসব বিষয়ের নিষ্পত্তি হবে। গ্রামীণফোন শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অধিকারকে সম্মান করে। তবে যেসব ব্যক্তিরা জিপি প্রাঙ্গণের প্রবেশ ও বহির্গমনের পথ অবৈধভাবে ৪ ফেব্রুয়ারি থেকে বেশ কয়েকবার অবরূদ্ধ করে। ফলে গ্রামীণফোনের কর্মী, সরবরাহকারী ও গ্রাহকদের অবাধ চলাচল উল্লেখযোগ্যভাবে বাধাগ্রস্থ হয়। তারা সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত জিপি হাউজে আটকা পড়েন। এ পরিস্থিতিতে কেউ কেউ অসুস্থও হয়ে পড়েন। গ্রামীণফোন দেশের প্রচলিত আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং কর্মী ও গ্রাহকদের নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে থাকে। এমন পরিস্থিতিতে ব্যক্তি ও সম্পত্তির নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে জিপি হাউস সংলগ্ন এলাকায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অবস্থান নেয়।
সম্প্রতি আমরা আরও লক্ষ্য করছি, এসব ব্যক্তিরা গ্রামীণফোন সম্পর্কে গণমাধ্যম এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়াচ্ছেন।