দেশীয় এয়ারলাইনস সংস্থা নভোএয়ারের ফ্লাইট চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। আজ শুক্রবার (২ মে) থেকে সংস্থাটির ফ্লাইট চলাচল বন্ধ রয়েছে। তবে এয়ারলাইনসটি একেবারে বন্ধ হয়ে যাওয়ার গুঞ্জণ রয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে নভোএয়ারের এক কর্মকর্তা বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘সাময়িকভাবে ফ্লাইট চলাচল বন্ধ করা হয়েছে। সংস্থাটি তাদের বহরে থাকা পাঁচটি এটিআর বিমান বিক্রির প্রক্রিয়া শুরু করেছে। প্রক্রিয়াটি চলতি মাসেই সম্পন্ন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আজ শুক্রবার থেকে উড়োজাহাজ বিক্রির ইনসপেকশন শুরু হয়েছে।’
তবে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মঞ্জুর কবির ভূঁইয়া বলেন, নভোএয়ারের ফ্লাইট চলছে না। এ বিষয়ে তাদের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা হয়েছে। তারা বলছে, অর্থনৈতিক কারণে বন্ধ রাখা হয়েছে। দুই সপ্তাহ পর আবার অপারেশনে আসবে। অর্থনৈতিক সমাধান না হলে কি হবে বলা যাচ্ছে না।’
সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, গত ২০ এপ্রিল থেকে তারা টিকেট বিক্রি বন্ধ করে দেয়। এ খবর প্রচার হওয়ার পর তারা আবারও টিকিট বিক্রি শুরু করে। তবে আজ শুক্রবার থেকে আবারও ফ্লাইট চলাচল বন্ধ রয়েছে। অনলাইনে টিকেট কেনার অপশনটিও বন্ধ রয়েছে সংস্থাটির।
এর আগে আন্তর্জাতিক রুটে ফ্লাইট পরিচালনার জন্য তাদের বহরে থাকা উড়োজাহাজগুলো বিক্রি করে এয়ারবাসসহ নতুন উড়োজাহাজ কেনার কথা জানিয়েছিল নভোএয়ার। তবে বর্তমানে তারা অর্থ সংকটে ভুগছে। এখনও নতুন বিনিয়োগকারীও নিশ্চিত করতে পারেনি। এ নিয়ে চলছে আলোচনা।
বর্তমানে নভোএয়ার ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, সিলেট, যশোর, সৈয়দপুর ও রাজশাহীতে প্রতিদিন অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট পরিচালনা করে। যাত্রী সংকটের কারণে গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে তাদের একমাত্র আন্তর্জাতিক রুটে কলকাতার ফ্লাইট স্থগিত করা হয়েছে।
সংস্থাটি বলছে, নভোএয়ার তার পরিকল্পনা অনুযায়ী এগোতে পারছে না। বিমানবহর ও আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণের পরিকল্পনা থাকলে বিশ্বে লিজ নেওয়ার জন্য বিমানের ঘাটতি রয়েছে। এছাড়া বড় বড় উড়োজাহাজ সংস্থাগুলোর প্রতিযোগিতার কারণে উড়োজাহাজ কেনাও কঠিন হচ্ছে।
এর আগে, নভোএয়ারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মফিজুর রহমান গণমাধ্যমে বলেছেন, খুব শিগগিরই নভোএয়ারের বোর্ডে একজন বিনিয়োগকারী যুক্ত হবেন। তার সঙ্গে আলোচনা চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।
তিনি বলেন, যদি আমরা নতুন বিনিয়োগ পাই, তাহলে আমরা বিদেশি ক্রেতাদের কাছে আমাদের উড়োজাহাজ বিক্রি করবো না। সেক্ষেত্রে, আমাদের ফ্লাইট বন্ধ হবে না। অন্যথায়, আমাদের তিন মাসের জন্য ফ্লাইট কার্যক্রম বন্ধ রাখতে হবে। তবে, সংস্থার কর্মী এবং কর্মকর্তারা এই তিন মাসে স্বাভাবিক বেতন পাবেন।
পরিচালক বলেন, ২০১৩ সালের ৯ জানুয়ারি প্রতিষ্ঠার পর থেকে, নভোএয়ার উড়োজাহাজ অধিগ্রহণে ৫০ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি এবং অবকাঠামো ও সহায়ক সরঞ্জামে অতিরিক্ত ১০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে। ২০১৮-১০১৯ অর্থবছর ছাড়া বিমান সংস্থাটি প্রতি বছরই লোকসান করেছে। মহামারির কারণে বিমান সংস্থাটির উল্লেখযোগ্য ক্ষতি হয়েছে এবং ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে দাম বেড়ে যাওয়ায় ব্যবসায় বিরুপ প্রভাব পড়েছে। এছাড়া, সঙ্কুচিত অভ্যন্তরীণ বাজার এবং চাহিদা হ্রাস চ্যালেঞ্জ আরও বাড়িয়ে তুলেছে।