মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক বিভিন্ন অভিযোগের ব্যাখ্যা দিলো আটাব

আসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশের (আটাব) বিরুদ্ধে রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা, নির্বাচনি অনিয়ম, সিন্ডিকেট গঠন, অর্থপাচারসহ নানা অভিযোগ ‘সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং বিভ্রান্তিকর’ দাবি করে ব্যাখ্যা দিয়েছে সংগঠনের বর্তমান কার্যনির্বাহী কমিটি। সোমবার (৫ মে) এক বিবৃতিতে আটাব সভাপতি আব্দুস সালাম আরেফ ও মহাসচিব আফসিয়া জান্নাত এ প্রতিক্রিয়া জানান।

আটাব বলছে, সংগঠনের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ এবং নির্বাচিত কমিটিকে বিতর্কিত করতেই রাজনৈতিক প্ররোচনায় কিছু মহল একতরফাভাবে এমন অভিযোগ তুলছে। এদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের কথাও বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

সংগঠনটি দাবি করেছে, ১৯৭৬ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে সংগঠনটি দেশের প্রায় ৪ হাজার ট্রাভেল এজেন্সিকে প্রতিনিধিত্ব করে আসছে এবং বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন নীতিনির্ধারক সংস্থার সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করে আসছে।

গত ২৭ এপ্রিল গণমাধ্যমে ও ২৬ এপ্রিল বিকালে একটি সরকারি সংস্থা থেকে ই-মেইলে প্রাপ্ত এক চিঠির প্রসঙ্গে সংগঠনটি জানায়, অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই চিঠিটি যথাযথ প্রেরণপদ্ধতি অনুসরণ না করে প্রেরণ করায় সংগঠনের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে জবাব দেওয়ার সুযোগ পাওয়া যায়নি।

রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ প্রত্যাখ্যান

বিবৃতিতে বলা হয়, আটাব-এর বর্তমান সভাপতি ও মহাসচিব কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত নন। বরং ট্রাভেল ট্রেড সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রীয় সংস্থাগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করাই তাদের দায়িত্বের অংশ।

সভাপতির বিরুদ্ধে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর সভায় উপস্থিত থাকার অভিযোগ প্রসঙ্গে বলা হয়, তিনি হাজারো ব্যবসায়ীর সঙ্গে ওই সভায় অংশ নিয়েছিলেন এফবিসিসিআইয়ের চাপে। তবে কোনও বক্তব্য দেননি এবং সেখানে তার কোনও ভূমিকা ছিল না।

নির্বাচনি অনিয়মের অভিযোগের পাল্টা যুক্তি

২০২৪ সালের ৫ মার্চ অনুষ্ঠিত নির্বাচনে তিনটি প্যানেল অংশ নেয় এবং সর্বোচ্চ ভোটে বিজয়ী হয়ে বর্তমান কমিটি দায়িত্ব নেয়। নির্বাচন কমিশনের অধীনে অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে বলে জানায় আটাব। এতে কোনও অনিয়ম হয়নি, নির্বাচন সিডিউল মোতাবেক কোনও পক্ষের বা প্রার্থীর বা সমর্থকদের কোনও অভিযোগ করেনি। নির্বাচন শেষ হয়ে কমিটির বয়স ১৪ মাস হওয়ার সময়ে এমন উদ্ভট অভিযোগ হাস্যকর ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।

অর্থপাচার ও সিন্ডিকেট অভিযোগ ভিত্তিহীন

‘ফেম ট্রিপ’ এর নামে অর্থপাচারের অভিযোগের বিষয়ে সংগঠনটি জানায়, এটি ছিল সদস্যদের জন্য একটি স্বেচ্ছাসেবী ভ্রমণ, সদস্যদের যার যার টাকায় ভ্রমণ করেন। এ জাতীয় খরচ অডিটের বাইরে নয়। যা প্রতি বছর অডিটের মাধ্যমে বার্ষিক সাধারণ সভায় উপস্থাপন ও অনুমোদন দেওয়া হয়। একইভাবে কুয়েত ভিসা প্রসেসিংয়ে সিন্ডিকেট গঠনের অভিযোগও নাকচ করে সংগঠনটি জানায়, সংশ্লিষ্ট কোম্পানি ‘মডার্ন ওভারসিজ’ আটাব-এর সদস্যই নয়, বরং বিদেশি দূতাবাস নিজস্ব প্রক্রিয়ায় এজেন্সি নির্ধারণ করে।

সংস্কার পরিষদ অবৈধ ও বিভ্রান্তিকর

আটাব-এর বক্তব্য অনুযায়ী, অভিযোগকারীরা ‘আটাব সংস্কার পরিষদ’ নামে একটি অবৈধ, অনিবন্ধিত ও অগঠনতান্ত্রিক গোষ্ঠী গঠন করে বিভিন্ন সময়ে সংগঠনের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করতে সচেষ্ট হয়েছে। এই গোষ্ঠীর অন্যতম মুখপাত্র গোফরান চৌধুরী অন্যের ভাড়া করা একটি অফিসে একাধিক মালিকের প্রতিষ্ঠান ও এজেন্সির লাইসেন্স রয়েছে; যা একটি বড় অনিয়ম। তিনি রাজনৈতিক সংযোগকে হাতিয়ার করে সংগঠনকে জিম্মি করতে চাইছেন। তার বিরুদ্ধে সংগঠনের বিরুদ্ধে উসকানিমূলক মন্তব্য ও বিভ্রান্তি ছড়ানোর অভিযোগও তোলা হয়েছে।

সংগঠনটির নেতৃবৃন্দের বক্তব্য, আমরা বিশ্বাস করি, বিভ্রান্তিকর অভিযোগের পরিবর্তে সংশ্লিষ্ট মহলকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। আটাব তার সদস্যদের স্বার্থ, দেশের ভাবমূর্তি ও বৈধ ট্রাভেল ট্রেডের বিকাশে সচেষ্ট থাকবে।