সচিবালয় অভিমুখে শিক্ষকদের পদযাত্রায় পুলিশের বাধা

বেসরকারি শিক্ষক হিসেবে চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩৫ বছর এবং ১৭তম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের নিয়োগ দিতে গণবিজ্ঞপ্তির দাবিতে ‘লংমার্চ টু সচিবালয়’ কর্মসূচিতে পুলিশের বাধার মুখে পড়েন নিয়োগপ্রত্যাশীরা।

বুধবার (২১ মে) সরেজমিন দেখা যায়, দুপুর ১টা ১০ মিনিটে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে থেকে শিক্ষকের একটি বিশাল মিছিল সচিবালয়ের দিকে রওনা হয়। তবে, প্রেস ক্লাব ও সচিবালয়ের (৫ নম্বর গেট সংলগ্ন) মধ্যবর্তী সড়কেই তাদের আটকে দেয় পুলিশ।

এ সময় শিক্ষকরা ব্যারিকেড সরিয়ে সচিবালয়ের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করলে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আরও বেশি সংখ্যক পুলিশ সদস্য ঘটনাস্থলে আসেন এবং শিক্ষকদের ঘিরে ফেলেন। তখন হাতে থাকা হ্যান্ডমাইক দিয়ে শিক্ষকদের মধ্য থেকে একজন পুলিশ সদস্যদের উদ্দেশে বলেন, ‘দয়া করে আমাদের মারবেন না। আমরা ন্যায্য দাবি নিয়ে সচিবালয়ে যাচ্ছি। প্রয়োজনে আপনারা আমাদের দাবিগুলো শুনুন। যদি মনে করেন আমাদের দাবি অযৌক্তিক, আমরা ফিরে যাবো। তবুও আমাদের গায়ে হাত তুলবেন না। এর আগে শিক্ষকদের সঙ্গে যে আচরণ করা হয়েছে, আজ যেন তার পুনরাবৃত্তি না ঘটে। যদি এমন হয়, তবে তা ভালো হবে না।’

প্রাথমিকভাবে পুলিশ শিক্ষকদের এলাকা ছাড়তে বললেও, শিক্ষকদের বক্তব্য শুনে তাদের কঠোরতা কিছুটা কমে আসে। তবে, ব্যারিকেড ধরে দাঁড়িয়ে থেকে শিক্ষকের সচিবালয় অভিমুখে যেতে বাধা দেয় পুলিশ এবং তাদের দাবি শুনতে থাকে। শিক্ষকরাও ব্যারিকেডের ওপাশে দাঁড়িয়ে নিজেদের দাবি আদায়ে স্লোগান দিতে থাকেন।

শিক্ষকদের পক্ষ থেকে এ সময় আইন মন্ত্রণালয়ের একটি চিঠির প্রসঙ্গ টানা হয়, যেখানে আসিফ নজরুল সই করেছেন। চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, শিক্ষকদের নিয়োগে কোনও আইনি জটিলতা নেই এবং তাদের নিয়োগ দেওয়া যেতে পারে। কারণ তারা উচ্চ শিক্ষাগত যোগ্যতা ও মেধাতালিকায় শীর্ষে অবস্থান করছেন।

এ সময় আরেক শিক্ষক বলেন, ‘আমরা পুলিশ ভাইদের বলতে চাই, হাইকোর্টের রায় আমাদের পক্ষে। আপনারা কি হাইকোর্টের রায় মানবেন না? যদি মেনে থাকেন, তাহলে আমাদের কথা শুনুন। আমরা শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও শিক্ষা উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করে আমাদের প্রস্তাবনা পেশ করতে চাই। এখন আপনারা কি আমাদের এভাবে যেতে দেবেন, নাকি কোনও ব্যবস্থা করে দেবেন – এটা আপনাদের সিদ্ধান্ত।’

প্রায় ২০ মিনিট ধরে শিক্ষকরা ব্যারিকেডের সামনে দাঁড়িয়ে স্লোগান দিতে থাকেন এবং পুলিশ দাঁড়িয়ে থাকে। তবে কোনও ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। একপর্যায়ে পুলিশ শিক্ষকদের প্রেস ক্লাবের সামনের সড়কে সরিয়ে দেয়। সেখানেও শিক্ষকরা স্লোগান অব্যাহত রাখেন। এরপর পুলিশের পক্ষ থেকে কয়েকজন শিক্ষক প্রতিনিধিকে সচিবালয়ের দিকে নিয়ে যাওয়া হয়।

নিয়োগপ্রত্যাশীদের দাবি

১. আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের বিচার শাখা-৫ এর মতামত বাস্তবায়ন করতে হবে।

২. আপিল বিভাগের রায় অনুযায়ী, সনদের মেয়াদ ৩ বছর থাকা সাপেক্ষে করোনাকালীন বিষয়াদি বিবেচনায় নিয়ে সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৩৫ নির্ধারিত করতে হবে।

৩. ১৭তম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ৪ বছর পর সনদ পাওয়ার পর একবারের জন্য ও গণবিজ্ঞপ্তিতে আবেদনের সুযোগ পায়নি তাই গণবিজ্ঞপ্তিতির মাধ্যমে আবেদনের সুযোগ চাই।

৪. ১৭তম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষা ২০২০ খ্রি: উত্তীর্ণ আবেদনের সুযোগ বঞ্চিতদের নিয়োগ না দিয়ে ষষ্ঠ গণবিজ্ঞপ্তি কোনোভাবেই জারি করা যাবে না।