মাসিক স্বাস্থ্যবিধি দিবস উদযাপন

নিরাপদ স্যানিটারি পণ্য উদ্ভাবন প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠিত

‘আসুন, সবাই একসাথে গড়ি মাসিকবান্ধব পৃথিবী’ প্রতিপাদ্যে বুধবার (২৮ মে) সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন মিলনায়তনে উদযাপিত হলো মাসিক স্বাস্থ্যবিধি দিবস-২০২৫। দিবসটি উপলক্ষে প্রতিবন্ধী নারীদের জন্য নিরাপদ ও সহজলভ্য স্যানিটারি পণ্য উদ্ভাবন প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠিত হয়।

ওয়াটারএইড বাংলাদেশ, কিম্বারলি ক্লার্ক এবং এমএইচএম প্ল্যাটফর্মের সহায়তায় আয়োজিত এই প্রতিযোগিতায় নির্বাচিত হয় সেরা ৫টি দল। প্রতিযোগিতার বিচারক প্যানেলে ছিলেন ৯ জন সম্মানিত ব্যক্তি, যাদের প্রত্যেককে অনুষ্ঠানে সম্মাননা ক্রেস্ট ও উপহার প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠানে তিনজন জুরি তাদের অনুভূতি ব্যক্ত করেন, যারা উদ্ভাবনের মান ও অন্তর্ভুক্তির গুরুত্বের ওপর আলোকপাত করেন।

অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বি-স্ক্যানের সাধারণ সম্পাদক সালমা মাহবুব। তিনি বলেন, “প্রতিবন্ধী নারীদের মাসিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনায় বাস্তব চ্যালেঞ্জগুলো এখনও অনেকের অজানা। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় উপযোগী স্যানিটারি পণ্যের অভাব রয়েছে, সেখান থেকেই এই প্রতিযোগিতার উদ্যোগ।”

শুভেচ্ছা বক্তব্যে বি-স্ক্যানের পরিচালক ইফতেখার মাহমুদ বলেন, “এই প্রতিযোগিতার মূল উদ্দেশ্য ছিল উদ্ভাবনী চিন্তার মাধ্যমে প্রতিবন্ধী নারীদের মাসিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনায় কার্যকর সমাধান খুঁজে বের করা। ২০১৬ সালে ওয়াটারএইড-এর সহায়তায় বি-স্ক্যান প্রথমবারের মতো এমএইচএম ডে উদযাপন শুরু করে এবং দশ বছর পর তারই ধারাবাহিকতায় এই প্রতিযোগিতা আয়োজন করা হলো।”

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন ডা. মাহবুবুর রহমান, লিড ও প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর (আইসিডিডিআর,বি)। তিনি বলেন, “স্বাস্থ্যসম্মত মাসিক ব্যবস্থাপনা নিয়ে কাজ করার অনেক ক্ষেত্র রয়েছে এবং এর জন্য প্রয়োজন পরিকল্পিত কর্মসূচি ও প্রান্তিক নারীদের জন্য অভিগম্য সাশ্রয়ী পণ্য সরবরাহ।”

এসময় ওয়াটারএইড বাংলাদেশের প্রোগ্রামস অ্যান্ড পলিসি অ্যাডভোকেসি পরিচালক পার্থ হেফাজ সেখ উদ্ভাবিত পণ্যের পেটেন্ট নেওয়ার প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন এবং ওয়াটারএইড-এর পক্ষ থেকে সিড মানি সংগ্রহে সহায়তার আশ্বাস দেন।

সমাজসেবা অধিদফতরের মহাপরিচালক মো. সাইদুর রহমান খান আয়োজকদের আহ্বান জানিয়ে বলেন, সমাজসেবা অধিদফতর অংশীদারত্বের ভিত্তিতে প্রকল্প বাস্তবায়নে আগ্রহী।

প্রতিযোগিতার সার্বিক পরিকল্পনা তুলে ধরেন মাহফুজুর রহমান রাকিভ, সহযোগী সমন্বয়কারী, বি-স্ক্যান। দোভাষীর দায়িত্ব পালন করেন আরিফুল ইসলাম।

অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী তিনজন প্রতিযোগী তাদের অভিজ্ঞতা ভাগ করে নেন। তারা বলেন, এমন একটি প্ল্যাটফর্মে অংশগ্রহণ করতে পেরে তারা গর্বিত এবং ভবিষ্যতে তাদের উদ্ভাবনী ধারণাকে বাস্তবে রূপ দিতে আগ্রহী।

অনুষ্ঠানের শেষাংশে ওয়াটারএইড বাংলাদেশ-এর পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন ফাইয়াজউদ্দিন আহমদ অ্যাডভোকেট, পলিসি অ্যান্ড অ্যাডভোকেসি লিড। তিনি বলেন, “বিজয়ীরা ওয়াটারএইড এবং বি-স্ক্যানের সহায়তায় তাদের উদ্ভাবনী ধারণাগুলো বাস্তবায়নের সুযোগ পাবেন। এটি প্রতিবন্ধী নারীদের মাসিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনায় অন্তর্ভুক্তি ও উদ্ভাবনের এক মাইলফলক।”