আন্দোলনরত ‘তথ্য আপা’ প্রকল্পের কর্মীরা সরকারকে ‘ব্ল্যাকমেইল’ করছেন বলে মন্তব্য করেছিলেন মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমিন এস মুরশিদ। গত বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) করা উপদেষ্টার এই মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে ‘তথ্য আপা’ প্রকল্পের অনশন আন্দোলন কমিটির সভাপতি সংগীতা সরকার বলেছেন, সরকারকে 'ব্ল্যাকমেইল' করছে না তথ্য আপারা।
সোমবার (২৩ জুন) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে নিজেদের দুই দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে পালিত লাগাতার অবস্থান কর্মসূচিতে তিনি এই কথা বলেন।
সংগীতা সরকার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘গত বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) আমরা উপদেষ্টার সঙ্গে মিটিং করতে গিয়েছিলাম। দুই জন মা তার বাচ্চাকে নিয়ে এখানে (মিটিংয়ে) এসেছিল, সেটাকে ধরে উপদেষ্টা এই কথা বলেছেন। এখন একজন কর্মজীবী মা, যার কোলে বাচ্চা আছে, তার বাচ্চাটা রেখে আসার অবস্থা নাই। তাই সে বাচ্চাকে এখানে নিয়ে আসে। তারচেয়েও বড় কথা কথা হচ্ছে আমরা যারা পড়াশোনা করে এখানে আসছি তারা তো সার্টিফিকেটটা কাজে লাগাতে চাইবো; তাই না? আমি কেন চাকরি করবো না, আমি কেন ঘরে বসে থাকবো? এখন তার বিয়ে হয়েছে, বাচ্চা হয়েছে, সে তার বাচ্চা নিয়ে আসতে পারবে না? এখানে সরকারকে ব্ল্যাকমেইল করার কী হলো?’
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) রাজধানীর বেইলি রোডে জাতীয় মহিলা সংস্থার সম্মেলন কক্ষে তথ্য আপা প্রকল্পের আন্দোলনকারীদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনাকালে তথ্য আপাদের উদ্দেশে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমিন এস মুরশিদ বলেন, ‘তোমরা যে সরকারের থেকে এত সাহায্য চাইছো সেই সরকারকে বিব্রত করা থেকে শুরু করে, কোণঠাসা করা, ব্ল্যাকমেইল করা– সবই করছো। এটাকে বলে ব্ল্যাকমেইল।’
এদিকে আজ সংগীতা সরকার বলেন, ‘বাংলাদেশের একমাত্র ডিপার্টমেন্টই আমরা; যেখানে সব কর্মকর্তা-কর্মচারী নারী এবং কাজ করছে নারীদের নিয়ে। এতগুলো নারীকে যখন সরকার কোনও কারণ ছাড়াই স্যাক করবে তখন কিন্তু গ্রাম-গঞ্জের যে নারীরা আমাদের আইডল মনে করে তারা কাজে আসতে চাইবে না, ডিমোটিভেট হয়ে যাবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা ১৯ জুন উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলাম আমাদের দুইটি দাবি নিয়ে। তিনি আমাদের একটি দাবি শুনে পরের দাবি আর শুনলেনই না। সেখানে অন্যান্য সচিবরাও ছিলেন। তবে আমরা বলতে চাই, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এখানেই আছি। আমাদের অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাবো।’
তাদের দুই দফা দাবি হলো-পদ সৃজনপূর্বক কর্মরত সব জনবলকে রাজস্বখাতে স্থানান্তর করা এবং কর্তনকৃত বেতন ও অন্যান্য ভাতাগুলো ফেরত দেওয়া।
উল্লেখ্য, দুই দফা দাবি আদায়ে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে গত ২৭ মে থেকে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে ‘তথ্য আপা’ প্রকল্পের কর্মীরা।