মন্ত্রণালয়ের বৈঠকেও শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধের সুরাহা হয়নি, আবারও আশ্বাসে আন্দোলন স্থগিত

শ্রম মন্ত্রণালয়ের বৈঠকেও গার্মেন্ট শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধের কোনও চূড়ান্ত সমাধান হয়নি। তবে আবারও আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে আন্দোলন স্থগিত করেছেন শ্রম ভবনের সামনে অবস্থানকারী শ্রমিকরা। অবশ্য বৈঠকে একটি কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়েছে এবং আগামী ২৯ জুন পরবর্তী বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন শ্রমিক নেতারা।

মঙ্গলবার (২৪ জুন) বিকেল ৩টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত শ্রম মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে মালিক–শ্রমিক ও প্রশাসনের ত্রিপক্ষীয় এই বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ফাহমিদা আখতার। তবে সিজন্স ড্রেসেস লিমিটেডের চার মালিকের মধ্যে কেবল হায়দার আহমেদ খান উপস্থিত ছিলেন। তিনি ২২ জুন থেকে শ্রম ভবনে শ্রমিকদের দ্বারা অবরুদ্ধ অবস্থায় ছিলেন। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামী বৈঠক পর্যন্ত তিনি পুলিশের হেফাজতে থাকবেন।

বৈঠকে কারখানাটির বন্ধকী ব্যাংক ন্যাশনাল ব্যাংকের কোনও প্রতিনিধিও উপস্থিত ছিলেন না। ফলে পূর্ব প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও বৈঠকে অনুপস্থিত থাকায় বাকি তিন মালিকের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়েরের আশ্বাস দিয়েছেন হায়দার আহমেদ খান।

বৈঠকে শ্রমিক প্রতিনিধিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন—বাংলাদেশ গার্মেন্টস অ্যান্ড শিল্প শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি রফিকুল ইসলাম সুজন, ট্রাস্ট গার্মেন্ট শ্রমিক ফেডারেশনের গাজীপুর জেলা সভাপতি দেলোয়ার সরকার, বাংলাদেশ পোশাক শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন ফেডারেশনের সাংগঠনিক সম্পাদক কবির আহমেদ ও গাজীপুর জেলা সভাপতি মাজহারুল ইসলাম, বিজিএমইএ প্রতিনিধি এবং কারখানার চার শ্রমিক।

আন্দোলনকারী শ্রমিকদের সূত্রে জানা গেছে, দুই মাসের বকেয়া বেতন এবং দুই ঈদের বোনাস পরিশোধের দাবিতে গত ১৫ ও ১৬ জুন থেকে তারা বিক্ষোভে নেমেছিলেন। মালিকপক্ষের কাছে প্রায় ১২০০ শ্রমিকের মোট পাওনা ৫ কোটি টাকার বেশি। আর যদি কারখানা চূড়ান্তভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়, তবে এই পরিমাণ বেড়ে দাঁড়াবে ২০ কোটি টাকারও বেশি।

পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী, ২২ জুন ত্রিপক্ষীয় বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ওইদিন শ্রমিক প্রতিনিধি ও সংশ্লিষ্টদের উপস্থিতি সত্ত্বেও সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অনুপস্থিত ছিলেন। মালিকদের মধ্যে শুধু একজন বৈঠকে যোগ দেন এবং মালিকপক্ষের একটি অংশ পরিশোধে অক্ষমতার কথা জানান। এ অবস্থায় শ্রমিকরা ক্ষুব্ধ হয়ে আন্দোলনে ফেরেন এবং হায়দার আহমেদ খানকে শ্রম ভবনে অবরুদ্ধ করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতেই মঙ্গলবারের এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

বাংলাদেশ গার্মেন্টস অ্যান্ড শিল্প শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মো. শফিউল আলম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আজকের বৈঠকেও পাওনা পরিশোধে কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। তাই ২৯ জুন আবারও মন্ত্রণালয়ে বৈঠক হবে। ততদিন মালিক হায়দার আহমেদ পুলিশ হেফাজতেই থাকবেন। এই সময়ের জন্য আন্দোলন সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে।’