মেয়র হিসেবে শপথ নেওয়ার দাবিকে কেন্দ্র করে ‘ঢাকাবাসীর’ ব্যানারে আন্দোলনকে স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ অপমান করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন। এ কারণে উপদেষ্টাকে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তরুণ এই নেতা। এর জবাবে ইশরাককে ‘কড়া বার্তা’ দিয়েছেন স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
বুধবার (২৫ জুন) নিজের ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে এই হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।
আসিফ মাহমুদ পোস্টে লেখেন, অকারণে আমার ছবিতে জুতা মারার জন্য কেউ ক্ষমা চেয়েছে? গুজবকে কেন্দ্র করে আমার পিতাকে ‘চালচোর’ বলে স্লোগান দেওয়ার জন্য কেউ ক্ষমা চেয়েছে? শুরুতেই সরকার পক্ষ থেকে সমাধান চেষ্টা যারা দম্ভভরে প্রত্যাখ্যান করে, ভোগান্তির জন্য দায়ী তারা ক্ষমা চেয়েছে? নগর ভবন বন্ধ করে এক কোটির বেশি নগরবাসীকে কষ্ট দেওয়ার জন্য কেউ ক্ষমা চেয়েছে? নগর ভবন দখলকে কেন্দ্র করে নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ এবং আহত হওয়ার ঘটনায় কেউ ক্ষমা চেয়েছে?
নিজের এবং পরিবারের প্রতি আক্রমণাত্মক স্লোগানের বিষয় তুলে ধরে তিনি লিখেছেন, ইশরাক হোসেনের বক্তব্য অনুযায়ী উপদেষ্টা পরিষদের সম্মিলিত সিদ্ধান্তের জন্য আমাকে বারবার ব্যক্তিগতভাবে আক্রমণ, আমার পরিবারকে আক্রমণ, জবাই করার স্লোগান দেওয়াসহ অব্যাহত মানহানির জন্য কেউ ক্ষমা চেয়েছে? কিন্তু আমাকে ক্ষমা চাইতে হবে, কারণ আমি বলেছি কয়েকজন নেতার প্ররোচনায় এই আন্দোলন হয়েছে। আমি সত্যি বলেছি এবং সত্যি যে বলেছি এটা তিনিও জানেন। তাকে যে ট্র্যাপে ফেলা হয়েছে, ফর অ্যা বেটার নেগোসিয়েশন ব্যবহার করা হয়েছে, তা তিনি ভালো করেই জানেন এবং আমার পরিচিত একাধিক ব্যক্তির কাছে স্বীকারও করেছেন।
আন্দোলন নিয়ে এত কিছুর পরও নিজে প্রতিক্রিয়া দেখাননি জানিয়ে আসিফ বলেন, এত নোংরামি করার পরও গত দেড় মাসে একবারের জন্যও ভদ্রতার লাইন ক্রস করিনি। একবারও ব্যক্তি আক্রমণ করা কিংবা ছোট করে কথা বলিনি। আমার লড়াই, রাজপথ, রাজনৈতিক পথচলা কিংবা পরিবার কেউই আমাকে এই শিক্ষা দেয়নি। আমি ধৈর্য ধরেছি, জবাব দিইনি বলে যে এসব অন্যায় জবাবহীন থেকে যাবে এমনটা না। ইতিহাস সবাইকে যার যার প্রাপ্য বুঝিয়ে দেয়।
বিএনপির তরুণ নেতা ইশরাক হোসেন এবং অন্তর্বর্তী সরকারের ছাত্র উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের মধ্যে বিরোধটা মূলত ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনকে কেন্দ্র করে। আদালতের রায় ঘোষণার পরও ইশরাক মেয়রের চেয়ারে বসতে না পারার জন্য স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদকে দায়ী করে আসছেন। তাকে শপথ পড়ানোর দাবিতে তার অনুসারীরা সিটি করপোরেশন অচল করে দিয়ে দিনের পর দিন আন্দোলনও করেছেন।
তবে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলছেন, এটা তার ব্যক্তিগত কোনও বিষয় নয়। ইশরাককে শপথ পড়াতে আইনি বাধা রয়েছে। এ জন্য স্থানীয় সরকার শপথের আয়োজন করতে পারছে না। তাছাড়া এ ব্যাপারে কোনও সিদ্ধান্ত একা তিনি নিতে পারেন না। এটা নিয়মতান্ত্রিক ও সম্মিলিতভাবে নেওয়া হয়ে থাকে। এ জন্য এককভাবে তার ওপর দায় চাপানো উচিত নয়।