২০২১ সালে খালেদা জিয়ার দোয়া অনুষ্ঠানে যাওয়ার উদ্দেশে রওনা হলে বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর হামলার ঘটনায় বিমানবন্দর থানার হত্যাচেষ্টা মামলায় ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ই-অরেঞ্জ বিডির নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ও যুবলীগ নেতা আমান উল্লাহ চৌধুরীর দুদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
শনিবার (২৮ জুন) ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জিয়া উদ্দিন আহমেদ শুনানি শেষে এ আদেশ দেন। এর আগে তাকে আদালতে হাজির করে মামলায় তদন্ত কর্মকর্তা বিমান বন্দর থানার উপ-পরিদর্শক (নিরস্ত্র) মাজেদুল ইসলাম ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। আসামি পক্ষের আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন। শুনানি শেষে বিচারক দুদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
শুক্রবার (২৭ জুন) বিকালে রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
রিমান্ড আবেদন থেকে জানা গেছে, ২০২১ সালের ১৫ আগস্ট বিএনপির নয়া পল্টনের পার্টি অফিসে বেগম খালেদা জিয়ার রোগ মুক্তি উপলক্ষে দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়। সেই অনুষ্ঠানে যোগদানের জন্য মামলার ভিকটিমসহ নেতা-কর্মীরা বিমানবন্দর থেকে পল্টনের উদ্দেশে রওনা হওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। এসময় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা দেশীয় অস্ত্রসহ অতর্কিত আক্রমণ করে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে এলোপাতাড়ি আঘাত করতে থাকে। মামলার ১৪নং আসামির হাতে থাকা লোহার রড দিয়ে ভিকটিমকে হত্যার উদ্দেশে মাথায় আঘাত করলে মাথা ফেটে যায়।
এসময় মামলার সাক্ষীরা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার সময় বিমানবন্দরের কাছে ফুট ওভার ব্রিজের নিচে জ্যামে দাঁড়িয়ে থাকে। সেসময় ৩৪ ও ৩৫নং আসামি সিএনজি আটকে ভিকটিমসহ সাক্ষীদের জোর করে সিএনজি থেকে বের করে এজাহারনামীয় ৬১-১০৮ আসামীরা। এরপর অজ্ঞাতনামা আসামিরা সাক্ষী ও ভিকটিমকে মারধর করে। টহলে থাকা পুলিশ সদস্যরা ভিকটিম ও সাক্ষীদের উদ্ধার করে সিএনজিতে তুলে দেয়। পরে হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে সুস্থ হন ভিকটিম। মামলার তদন্তের স্বার্থে আসামিকে ১০ দিনের রিমান্ডে নেওয়া প্রয়োজন।
এঘটনায় চলতি বছরের ২০ জুন বিমানবন্দর থানায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১০৮ জনের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টা মামলা করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সাদ্দাম। মামলায় আমান উল্যাহ ৮৩ নাম্বার এজাহারনামীয় আসামি।
উল্লেখ্য, ই-অরেঞ্জের প্রতারণার মামলায় ২০২১ সালে ১৮ আগস্ট গুলশান থানা পুলিশ আমান উল্লাহকে গ্রেফতার করে। তখন ই-অরেঞ্জের মালিক গুলশান থানার তৎকালীন পরিদর্শক (তদন্ত) সোহেল রানা ভারতে পালিয়ে যান। সেসময় সোহেল রানার বোন সোনিয়া মেহজাবিন ও তার স্বামী মাসুকুর রহমানসহ পাঁচ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিলেন আদালত। সেই সময় সোনিয়া মেহজাবিন ও মাসুকুর রহমানের বিরুদ্ধে ই কমার্সের নামে ১ হাজার ১০০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে এক গ্রাহক মামলা করেন। ওই মামলায় পুলিশ তাদের গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠায়। সেই মামলারও আসামি আমান উল্লাহ। এছাড়া তার বিরুদ্ধে মোট ২৩টি মামলা রয়েছে।