নারী পাচার: ৫ এজেন্সি মালিক ও জনশক্তি ব্যুরোর ৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা

গৃহকর্মী পাঠানোর নামে মধ্যপ্রাচ্যে নারী পাচারের অভিযোগে জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) ৪ কর্মকর্তা-কর্মচারী ও ৫ এজেন্সির মালিকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) ঢাকার সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ মামলাটি দায়ের করেন দুদকের সহকারী পরিচালক স্বপন কুমার রায়।

দুদকের উপ-পরিচালক ও জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আকতারুল ইসলাম জানান, জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) কিছু অসাধু কর্মকর্তা ও বিভিন্ন এজেন্সির বিরুদ্ধে ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে নারীদের বিদেশে পাচারের অভিযোগ পায় দুদক। এরপর গত ২৯ মে বিএমইটি-তে অভিযান চালানো হয়।

অভিযানকালে দেখা যায়, বিভিন্ন এজেন্সি পরস্পর যোগসাজশে প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে গৃহকর্মী হিসেবে মধ্যপ্রাচ্যে গমনেচ্ছু নারীদেরকে ‘প্রত্যাগত’ হিসেবে দেখানোর জন্য ভুয়া পাসপোর্ট ব্যবহার করে। প্রকৃত আবেদনকারীর পরিবর্তে অন্য ব্যক্তির পাসপোর্ট নম্বর রেফারেন্স হিসেবে ব্যবহার করে আবেদন দাখিল করা হয়। এসব জাল পাসপোর্টকে আসল হিসেবে উপস্থাপন করে বিএমইটির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা তাদের সংরক্ষিত ডাটাবেজ যাচাই না করে, এজেন্সিগুলোর সঙ্গে যোগসাজশে, আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার অসৎ উদ্দেশ্যে ৯ জন জাল পাসপোর্টধারী নারীকে ছাড়পত্র দিতে অনুমোদনের জন্য নোট উপস্থাপন করেন।

এছাড়া, সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যে গৃহকর্মী পাঠানোর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য মন্ত্রণালয়ের পরিপত্র লঙ্ঘন করে ২৫ বছরের কম বয়সী ৪ জন অপ্রাপ্তবয়স্ক নারীকে ছাড়পত্র প্রদানে অনুমোদনের জন্য নোট উপস্থাপন করা হয়। এই কার্যকলাপে সংশ্লিষ্ট এজেন্সিগুলোকে জালিয়াতি ও নিয়মবহির্ভূতভাবে ছাড়পত্র গ্রহণে সহায়তা করা হয়। অভিযানকালে সংগৃহীত রেকর্ডপত্রের বিস্তারিত যাচাইয়ে দণ্ডবিধির সংশ্লিষ্ট ধারাসহ দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনে তারা শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।

পরে ওই এনফোর্সমেন্ট প্রতিবেদনের সুপারিশের ভিত্তিতে এবং কমিশনের অনুমোদনে ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়।

মামলায় যাদের আসামি করা হয়, তারা হলেন— বিএমইটি বহির্গমন বিভাগের উপ-পরিচালক মো. সাজ্জাদ হোসেন সরকার, সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ হোসেন উল্লাহ আকন্দ, জনশক্তি জরিপ কর্মকর্তা নিজামউদ্দিন পাটোয়ারি, অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর মো. আজাদ হোসেন, এইচ. এ. ইন্টারন্যাশনালের ম্যানেজিং পার্টনার মো. আনোয়ার হোসেন, কে. এইচ. ওভারসিজের ম্যানেজিং পার্টনার মো.  সালাউদ্দিন, মক্কা ওভারসিজের স্বত্বাধিকারী জামাল হোসেন, তাসনিম ওভারসিজের ম্যানেজিং পার্টনার, মো. আনোয়ার হোসেন ভূঞা এবং এস এম ম্যানপাওয়ারের পার্টনার একরামুল হক।