রবিবার (৩১ মে) সকালে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এই চিত্র দেখা গেছে। সকালে ফকিরাপুল মোড়ে গিয়ে দেখা গেছে, একের পর এক সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের স্টাফ বাস আসছে। বাসগুলোর অধিকাংশেই ছিল না সামাজিক দূরত্ব। পাশাপাশি দুটি করে আসন দেখা গেলেও প্রতিটি আসনেই যাত্রী বসানো হয়েছে। গাড়ির প্রবেশ মুখে হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও জীবাণুনাশক রাখার কথা থাকলেও তা দেখা যায়নি।
এই সময় জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের ১১-০৩০৬ নম্বর গাড়িটিতে দেখা গেছে প্রতিটি আসনেই যাত্রী রয়েছে। কোনও আসন ফাঁকা রাখা হয়নি। একই সময় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের একটি স্টাফ বাসেও একই চিত্র দেখা যায়। আবার ব্যতিক্রমও দেখা গেছে কিছু গাড়িতে। তবে তাতে শুধু আসন ফাঁকা ছাড়া অন্য স্বাস্থ্যবিধির উপস্থিতি ছিল না।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ঢাকা দক্ষিণের পরিবহন বিভাগের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘তাদের গাড়িগুলোর অধিকাংশই লিজের মাধ্যমে নেওয়া। আর গাড়ির আসনগুলো একেক কর্মকর্তা-কর্মচারীর নামে বরাদ্দ। তাই কেউ তার আসন ফাঁকা রাখতে চায় না। সবাই উঠে বসে যায়। স্বাস্থ্যবিধির বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বিষয়টি বিবেচনা করবেন।’
বিলকিছ আক্তার নামে একজন সরকারি কর্মচারী বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আজ অফিস খুলেছে। সচিবালয়ে যাবো। বাসগুলোতে আসন ফাঁকা পাওয়া যাচ্ছে না। রিকশায় ভাড়া অনেক। লেগুনাতে তো পা রাখারও জায়গা নেই। স্বাস্থ্যবিধি বলতে একটা যে বিধান রয়েছে তা যেন কেউ জানেও না। সরকারের তদারকিও নেই।’
এদিকে সকাল ১০টা পর্যন্ত নগরীর সড়কে গণপরিবহন সংখ্যা ছিল খুবই কম। গণপরিবহনে সামাজিক দূরত্বের বিষয়টি চিন্তা করে কর্মজীবী মানুষের অনেককেই রিকশা ও সিএনজিতে অফিসে যেতে দেখা গেছে। তাদের দাবি বাসে মানুষের উপস্থিতি বেশি। রিকশায় সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত হয়। তবে জীবাণুনাশক না থাকায় হতাশা প্রকাশ করেছেন অনেকেই। তারা নগরীর বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে সরকারের পক্ষ থেকে জীবনাণুনাশক রাখার দাবি জানিয়েছেন। যাতে রিকশা সিএনজিগুলো স্প্রে করা হয়।
গিয়াস উদ্দিন নামে একজন বেসরকারি অফিসের কর্মকর্তা বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘বাসে অনেক গাদাগাদি হয়। রিকশায় সেটা একটু মুক্ত থাকে। কিন্তু আমার আগে যিনি এটি ব্যবহার করে গেছেন তিনি সুস্থ ছিলেন নাকি করোনায় আক্রান্ত ছিলেন, সেটা তো আর আমি বলতে পারছি না। তাই উচিত প্রতিবারই রিকশা, সিএনজিসহ অন্যান্য পরিবহন জীবাণুনাশক দিয়ে স্প্রে করা।’
বাসাবো এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে কর্মজীবীরা পরিবহনের জন্য রাস্তায় অপেক্ষা করছেন। এই এলাকাটি থেকে শহরের রাজারবাগ, ফকিরাপুল, দৈনিক বাংলা ও গুলিস্তান রুটে ছোট লেগুনা চলাচল করে। এই গাড়িগুলোতে কোনও জায়গা ফাঁকা নেই। যাত্রীরা গাদাগাদি করে বসেছেন। স্বাস্থ্যবিধি মেনে আসন ফাঁকা রেখে অর্ধেক যাত্রী নেওয়ার বিধান থাকলেও তা মানা হচ্ছে না। ভাড়াও আদায় করা হচ্ছে আগের থেকে দ্বিগুণ।