লকডাউনে মানুষের সেবায় ১২০ স্বেচ্ছাসেবী

103757641_297205715018179_337846188370519356_nরাজধানীর পূর্ব রাজাবাজারের লকডাউন এলাকায় করোনার ভয়কে জয় করে সতর্কতা মেনে কাজ করছেন ১২০ জন স্বেচ্ছাসেবী। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাইরেও এলাকাবাসীর যেকোনও ধরনের সমস্যার সমাধানে প্রথম ভরসা তারাই। লকডাউনের শুরু থেকে সেবা দেওয়া সব সেচ্ছাসেবীরা সুস্থ আছেন বলে জানিয়েছেন এলাকার কাউন্সিলর ফরিদুর রহমান খান ইরান।

শুক্রবার (১৯ জুন) সরেজমিনে গিয়ে জানা গেল, প্রতি শিফটে ৪০ জন করে তিন শিফটে ২৪ ঘণ্টা কাজ করেন স্বেচ্ছাসেবীরা। ভাগ করা দায়িত্ব নিয়ে পুরো এলাকায় ছড়িয়ে থাকেন তারা। জরুরি যেকোনও সমস্যায় দ্রুত তাদের সহযোগিতা মিলে। তাদের মুখে মাস্ক, হাতে গ্লাভস থাকে সবসময়ই।

লকডাউন এলাকার বাসিন্দা তৃপ্তি ইলিমা বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এলাকার স্বেচ্ছাসেবকরা খুবই সহযোগিতা পূর্ণ মনোভাব নিয়ে কাজ করে। কোনও দরকারে ফোন দিলেই দ্রুত চলে আসে। সামাজিক দুরত্ব ও স্বাস্থ্যসুরক্ষা মেনেই চলতে দেখেছি। প্রথমদিকে কাজের পরিকল্পনা নিয়ে একটু অসুবিধা হলেও এখন সবাই বিষয়টা বুঝে গেছে।’

ওই এলাকার মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘বাইরে না গিয়ে ওষুধসহ প্রয়োজনীয় জিনিস আনতে সব সময়ই তাদের কাছে পাচ্ছি। কেউ অসুস্থ হলে তাদের টিম দ্রুত চলে আসতে দেখেছি। প্রতিটি ক্ষেত্রেই তারা সামাজিক দুরত্ব মানছেন। মাস্ক ও গ্লাভস ব্যবহার করতে দেখেছি। মনে হচ্ছে তারা যথাযথ ভাবেই কাজটি করছেন।’

104360218_709630966265006_3566440384178485841_nস্বেচ্ছাসেবক গোলাম রব্বানী বলেন, ‘আমরা প্রতি সিফটে ৪০ জন স্বেচ্ছাসেবক কাজ করি। প্রত্যেকেই মাস্ক, হ্যান্ড গ্লাভস, স্যানিটাইজার ব্যবহার করি এবং সামাজিক দুরত্ব মেনে চলছি। সব সুরক্ষা সামগ্রী কাউন্সিলরের কন্ট্রোল রুম থেকেই দেওয়া এবং তদারকি করা হয়। নিজেরা সুস্থ থেকে যেনও এলাকাবাসীকে সহযোগিতা করতে পারি, সেভাবেই চলছি।’

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ২৭ নম্বর এই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ফরিদুর রহমান খান ইরান বলেন, ‘কন্ট্রোল রুমের সামনে অটো স্যানিটাইজার রাখা হয়েছে। সেখান  স্বেচ্ছাসেবকরা দিনে কমপক্ষে চার থেকে পাঁচ বার নিজের পুরো শরীর স্যানিটাইজ করেন। তারা বাইরে চলাচলের সময় মাস্ক, হ্যান্ড গ্লাভস ব্যবহার করেন। এই বিষয়গুলোর মধ্যে কোনও লুকোচুরি নেই। কারণ, তাদের জীবন আগে বাঁচাতে হবে, তারপরে তারা অন্যের সেবায় নিয়োজিত থাকবে। আর সকল সুরক্ষা সামগ্রী সিটি করপোরেশন থেকে দেওয়া হয়।’

লকডাউন এলাকাটির সার্ভিস গেইটে থাকা কর্তব্যরত শেরেবাংলানগর থানার সাব-ইন্সপেক্টর আব্দুর রশিদ সরকার বলেন, ‘কিছু লোক লকডাউনের বিষয়টি বুঝতে চাচ্ছে না। তারা পান থেকে শুরু করে আদা কেনার কারণ দেখিয়ে বাইরে বের হওয়ার চেষ্টা করছেন। তাদের চাহিদাগুলো দেখে অবাক হয়েছি। সরকারের নির্দেশনার বাইরে কাউকে ঢুকতে বা প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। এলাকার স্বেচ্ছাসেবক ছেলেরা খুব ভালোভাবে কাজ করছে। তারা প্রয়োজনীয় সবকিছু মেনে মানুষকে সহায়তা করছে।’