স্বজনদের কান্নায় ভারী হয়ে উঠেছে বুড়িগঙ্গার তীর

স্বজনরা নোঙর করা লঞ্চে অপেক্ষমানলঞ্চডুবির সাত ঘণ্টা পরও স্বজনদের খোঁজ না পেয়ে পাড়ে অপেক্ষা করছেন অর্ধশত মানুষ। তাদের কান্নায় ভারী হয়ে উঠেছে শ্যামবাজার বুড়িগঙ্গা নদীপাড়ের এলাকা। কোনও এক আশায় নিজ নিজ স্বজনের ফোন নম্বরে একটু পরপর কল করছেন তারা। ফোন বন্ধ, তারপরও চেষ্টা অব্যাহত।
সোমবার (২৯ জুন) বুড়িগঙ্গায় মুন্সীগঞ্জ থেকে আসা ‘মর্নিং বার্ড’ নামের একটি যাত্রীবাহী লঞ্চডুবির ঘটনা ঘটেছে। লঞ্চে ৫০ যাত্রী ছিল বলে জানা গেছে। তবে স্থানীয়দের দাবি, লঞ্চে শতাধিক যাত্রী ছিল। দুটি লঞ্চের সংঘর্ষের পর এ দুর্ঘটনা ঘটে। এখন পর্যন্ত অন্তত ৩০টি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আরও অনেকে এখনও নিখোঁজ আছেন। তাদের সন্ধানে উদ্ধার তৎপরতা চালাচ্ছেন ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিট, নৌ-বাহিনীর ডুবুরি দলের সদস্য ও স্থানীয়রা।

নাসিমা আক্তার ছুটে এসেছের শ্যামবাজারে। তার ভাই শাকিল আহমেদ (২৫) সকাল থেকেই নিখোঁজ। তাদের গ্রামের বাড়ি ভোলা। তিনি জানান, বন্ধুর সঙ্গে বেড়াতে শাকিল তিনদিন আগে মুন্সীগঞ্জ গিয়েছিল। তিনি কেরানীগঞ্জ বোনের সঙ্গে থাকতেন। নাসিমা বলেন, রবিবার রাতে মুন্সীগঞ্জ থেকে রওয়ানা দেয়। আমি সকালে জানতে পারলাম টিভিতে লঞ্চটি ডুবে গেছে। আমি ভাইকে ফোন দিলাম। দেখি নম্বর বন্ধ। আমার কলিজাটা কেঁপে উঠলো। ভাইয়ের খোঁজে বুড়িগঙ্গার তীরে তীরে তিনি আহাজারি করে ছুটছেন। যাকেই পাচ্ছেন ভাইয়ের কথা জিজ্ঞাস করছেন।

স্বজনরা নোঙর করা লঞ্চে অপেক্ষমান

সিদ্দিক নামে এক যুবক নৌকা নিয়ে বুড়িগঙ্গায় তার মামা মিলনকে খুঁজছেন। তার মামাও এই লঞ্চে ছিল। এখনও তার খোঁজ মেলেনি। সিদ্দিক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, আমার মামা এই লঞ্চে ছিল তার কোনও খোঁজ পাচ্ছি না।

এরকম অর্ধশত মানুষ ঘটনাস্থলে এসে ভিড় করেছেন। তারা বিভিন্ন লঞ্চে অবস্থান নিয়েছেন। কোনও লাশ উদ্ধার হয়ে পাড়ে আসছে কিনা অধীর আগ্রহে নদীর দিকে চোখ।

সোমবার (২৯ জুন) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে বুড়িগঙ্গার শ্যামবাজার এলাকায় লঞ্চডুবির ঘটনা ঘটে। কোস্ট গার্ড সদর দফতরের মিডিয়া কর্মকর্তা লে. কমান্ডার হায়াৎ ইবনে সিদ্দিক বলেন, ফায়ার সার্ভিস ও কোস্ট গার্ডের উদ্ধার অভিযান চলমান। এখনও অনেকে নিখোঁজ রয়েছেন।

স্বজনরা নোঙর করা লঞ্চে অপেক্ষমান