উদীচীর অনুষ্ঠানে বোমা হামলা: ২২ বছর পরও বিচারের দাবিতে সমাবেশ!

১৯৯৯ সালের ৬ই মার্চ যশোরে উদীচীর দ্বাদশ জাতীয় সম্মেলনে বোমা হামলা ও হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবিতে প্রতিবাদী সাংস্কৃতিক সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পী গোষ্ঠী।

শনিবার (৬ মার্চ) বিকাল ৪টায় শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে এই সমাবেশ করেন তারা। সমাবেশের শুরুতে সেদিনের হামলায় নিহতদের প্রতি ফুলেল শ্রদ্ধা নিবেদন করেন উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদ, উদীচী ঢাকা মহানগর সংসদ, বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টিসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ।

সমাবেশে সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক জামশেদ আনোয়ার তপন বলেন, ''ওই অন্ধাকারের শক্তি উদীচীকে টার্গেট করেছে। উদীচীর প্রতিটি কর্মী, প্রতিটি শিল্পী হচ্ছে জনগণের বন্ধু, দেশের বন্ধু, বিশ্বমানবতার বন্ধু। তাদের টার্গেট করে ওই অন্ধাকারের শক্তি হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। শুধু যশোরেই নয়, সারা দেশে উদীচীর ওপর হামলা হয়েছে। সরকার উদীচীর কখনও নিরাপত্তা দেয় না। স্বৈরাচারী এরশাদের সময় কবিতা লেখা হয়েছিল, 'উদ্ভট উটের পিঠে চলছে স্বদেশ।' সেই এরশাদও ওই কবিকে গ্রেফতার করার সাহস করে নাই। আজ কবিতা গান লেখার জন্যে ও লেখক শিল্পীদের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেফতার করা হচ্ছে। তাই আমাদের দাবি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সংস্কার নয়,পরিপূর্ণভাবে বাতিল করতে হবে এবং এই আইনে আটককৃতদের নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে।''

তিনি আরও বলেন, 'যশোরে বোমা হামলার পুনঃতদন্ত করতে হবে এবং দোষীদের বিচার নিশ্চিত করতে হবে। যদি তা অতি দ্রূত না করা হয়, তাহলে উদীচী শিল্পী গোষ্ঠী তার সাড়ে তিন শতাধিক শাখা সংগঠনের মাধ্যমে আন্দোলন ঘোষণা করবে।'

সভাপতির বক্তব্যে শিবানী ভট্টাচার্য বলেন, 'উদীচী এমনই একটি সংগঠন যা কাউকে ভয় পাই না। উদীচী তার পথে আছে, চলছে এবং আজীবন চলবে। আমরা প্রগতিশীল সাংস্কৃতিক সংগঠন। তারা কী মনে করেছে উদীচীর ওপর হামলা করলে সাংস্কৃতিক কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যাবে? কোনও দিনও না। উদীচী সামাজিক পরিবর্তন আনতে সারা জীবন তার সাংস্কৃতিক আন্দোলন বজায় রাখবে।'

সমাবেশে সঞ্চালনা করেন সৈয়েদা তানজিনা ইমাম ও সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ উদীচী শিল্পী গোষ্ঠীর শিবানী ভট্টাচার্য। সমাবেশ শেষে সেদিনের নিহতদের স্মরণে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করা হয়।