পবিত্র রমজান মাসের দ্বিতীয় জুমা অনুষ্ঠিত হয়েছে শুক্রবার (১৬ এপ্রিল)। এ দিন দুপুরে রাজধানীর বড় থেকে ছোট, প্রায় সবগুলো মসজিদে মুসল্লিদের ব্যাপক উপস্থিতি ছিল। সড়কের পাশের মসজিদগুলোর মুসল্লিদের দেখা গেছে সড়কেও। তবে, আজকের জুমায় মুসল্লিদের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মেনে নামাজ আদায়ের বিষয়টি লক্ষ্য করা গেছে। কোথাও-কোথাও মসজিদের ভেতরে মুসল্লিদের সংকুলান না হওয়ায় মূল সড়কেও গেছে নামাজের কাতার। নামাজ শেষে বৈশাখের ভরদুপুরে কড়ারোদ মাথায় নিয়ে মুসুল্লিরা প্রার্থনা করেছেন সৃষ্টিকর্তার কাছে।
জুমার নামাজ আদায় করা মুসুল্লিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের পাশাপাশি রাজধানীর অনেক মসজিদেই আজ স্বাস্থ্যবিধি মেনে ইবাদত করেছেন মুসুল্লিরা। কোনও-কোনও মসজিদের কর্তৃপক্ষ স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে পর্যাপ্ত মুসুল্লি হওয়ার পর মসজিদের প্রবেশগেটে তালা দিয়েছে। এসব মসজিদের ভেতরেও দূরত্ব রেখে নামাজ পড়েছেন মুসুল্লিরা। সংক্রমণরোধে নামাজ আদায়ে সচেতন থাকলেও, নামাজশেষে গায়ে গা ঘেঁষে মসজিদ ছেড়েছেন মুসুল্লিরা।
তিনি আরও বলেন, ‘লক্ষ্মীবাজার শাহী মসজিদের ছোট একটি গেট খোলা থাকলেও মূলগেট বন্ধ রাখা হয়’।
ঢাকার মিরপুরের মসজিদগুলোতে জুমার জামাতে মুসুল্লিদের ব্যাপক অংশগ্রহণ ছিল। মসজিদের ভেতরে জায়গা না হওয়ায় অনেকেই রাস্তায় নামাজ আদায় করেছেন। তবে আগের চেয়ে মাস্ক পরা মুসল্লির সংখ্যা বেড়েছে। এই এলাকার মসজিদগুলোতে, জুমার বয়ানে যাকাতের গুরুত্ব, দান নিয়ে আলোচনা করেন ইমাম-খতিবরা। তারা যাকাতে গরিবের হক নিয়ে আলোচনা করেন। যাকাত আদায় করা মুসলমানের দায়িত্ব, বিষয়টিও তারা আলোচনায় উল্লেখ করেন। ইমাম ও খতিবরা আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য মুসল্লিদের যাকাত আদায়ের কথা বলেন। নামাজশেষে মোনাজাতে করোনা ভাইরাসের মহামারি থেকে মুক্তির জন্য প্রার্থনা করা হয় মসজিদগুলোতে।
স্বাস্থ্যবিধি মেনে নামাজ পড়তে দেখা গেছে সোবহানবাগ মসজিদেও। ভেতরে মুসুল্লিদের স্থান সংকুলান না হওয়ায় মিরপুর রোডের একপাশে সড়কের মধ্যেই নামাজ আদায় করেছেন আগ্রহী মুসুল্লিরা। তপ্তরোদ মাথায় নিয়ে তরুণ, কিশোরসহ মধ্যবয়স্ক মুসুল্লিরা অংশ নিয়েছেন নামাজে।
উল্লেখ্য, গত ১২ এপ্রিল ধর্ম মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মো. সাখাওয়াৎ হোসেন স্বাক্ষরিত নির্দেশনায় করোনা পরিস্থিতিতে সুরক্ষা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে মসজিদে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের প্রতি ওয়াক্তে সর্বোচ্চ ২০ জন মুসল্লি ও রমজানে তারাবির নামাজে খতিব, ইমাম, হাফেজ, মুয়াজ্জিন ও খাদিমসহ সর্বোচ্চ ২০ জন মুসল্লি অংশগ্রহণ করবেন। জুমার নামাজে সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে মুসল্লিরা অংশ নেবেন। মুসল্লিদের পবিত্র রমজানে তিলাওয়াত ও জিকিরের মাধ্যমে মহান আল্লাহর রহমত ও বিপদ মুক্তির জন্য দোয়া করার অনুরোধ করা হয় সেই নির্দেশনায়।
রাজধানীর বিভিন্ন মসজিদের জুমার নামাজের ছবি তুলেছেন: সাজ্জাদ হোসেন, শাহেদ শফিক, নাসিরুল ইসলাম ও সালমান তারেক শাকিল