কাওরান বাজারে মাস্ক পরছেন না বেশিরভাগ দোকানি

লকডাউনের মধ্যে জমজমাট রাজধানীর কাওরান বাজার। রাত দিন চলে এই বাজারের বেচাকেনা। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ক্রেতা সাধারণের ভিড়ে সরগরম থাকে শাকসবজিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের এ বাজারটি। কিন্তু করোনা মহামারির দ্বিতীয় ঢেউ আশঙ্কাজনক হারে বাড়লেও দোকানিদের মাস্ক ব্যবহারে চরম অনীহা দেখা গেছে। বেশিরভাগ দোকানির মুখে নেই মাস্ক। কেউ কেউ ব্যবহার করলেও তা থুতনিতে ঝুলতে দেখা গেছে। কেউবা আবার পরেছেন নাকের নিচে। এ নিয়ে কর্তৃপক্ষেরও কোনও নজর নেই।

শুক্রবার (২৩ এপ্রিল) সকালে কাওরান বাজারে গিয়ে দেখা গেছে, স্বাভাবিক সময়ের মতোই বিরাজ করছে সেখানকার পরিবেশ। মাস্কহীন ও সামাজিক দূরত্বের বিধি লঙ্ঘন করেই চলছে বেচাকেনা। চলাচলের পথে দোকান বসানোর ফলে রাস্তা সংকুচিত হয়ে গেছে। মানুষের ভিড়ে সরু গলিগুলোতে গাদাগাদি করেই চলাচল করতে হচ্ছে। ক্রেতাদের মুখে মাস্ক দেখা গেলেও বিক্রেতারা তা মানছেন না। মাস্কের কথা তুলতেই তারা গরমের অজুহাত দেন। এ যেন করোনাহীন ভিন্ন এক এলাকা!

বিক্রেতা-ক্রেতা কারও মুখে নেই মাস্কলকডাউনের শর্ত অনুযায়ী, কাঁচাবাজার, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দোকানপাট সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত উন্মুক্ত স্থানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরিচালিত হওয়ার কথা। কিন্তু ঘিঞ্জিপূর্ণ এই বাজারটি উন্মুক্ত স্থানে সরানো হয়নি। দূরত্ব বজায় রেখে কেনাবেচার ব্যবস্থাও করেনি সিটি করপোরেশন। নেই কোনও তদারকিও।

মুখে মাস্ক না থাকার বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে সবজি বিক্রেতা নাছির উদ্দিন বলেন, ‘মাস্ক আছে। মাস্ক পরলে কথা বলা যায় না। কাস্টমার কথা বুঝে না। তাই খুলে  রেখেছি। গরমের কারণে মুখ ঘেমে যায়। সে কারণে খুলে রেখেছি।’

আরেক সবজি বিক্রেতা আইয়ুব আলী বলেন, ‘কেউ তো মাস্ক পরে না। আমি একা পরলে কী হবে? আমি ক্রেতাদের থেকে তিন ফুট দূরে থাকি। সে কারণে মাস্ক না থাকলেও সমস্যা হবে না। আর কতক্ষণ মাস্ক পরে থাকা যায়? বেশি সময় পরে থাকলে অস্বস্তি লাগে।’

দোকানিদের মাস্ক ব্যবহারে অনীহা, শুক্রবার সকালে কাওরান বাজারের দৃশ্যবাজারের ভেতরের অবস্থা আরও খারাপ। মুরগির দোকানে কোনও বিক্রেতার মুখেই ছিল না মাস্ক। বিষয়টি নিয়ে কথা বলতেও রাজি নন তারা।

লেবু বিক্রেতা সামছুদ্দিন বলেন, ‘গরিবরে করোনায় ধরে না। যেভাবে আতঙ্ক ছড়ানো হচ্ছে, সেভাবে যদি হতো তাহলে অনেক আগেই আক্রান্ত হতাম। আমরা সাবধানে থাকি। সে কারণে কোনও ব্যবসায়ী আক্রান্ত হচ্ছে না। করোনা হলে মাস্ক পরলেও হবে, না পরলেও হবে।’