অ্যাম্বুলেন্সে রোগী সেজে ফেন্সিডিল পাচার

তেইশ বছরের এক তরুণ শুয়ে আছে অ্যাম্বুলেন্সে। তার হাতে চিকিৎসার কাগজপত্র। পাশে চিন্তিত বসে আছেন কয়েকজন। দুর্ঘটনায় পা ভাঙা ওই তরুণকে নেওয়া হচ্ছে ঢাকার একটি হাসপাতালে। পাশে রোগী ও স্বজনদের কাপড়ের ব্যাগ। যশোর থেকে ঢাকায় এসেছে সেই অ্যাম্বুলেন্স। কিন্তু পুরো কাহিনীটাই বানানো। আসলে রোগী সেজে সেই অ্যাম্বুলেন্সে পাচার করা হচ্ছিল ফেন্সিডিল।

এরকম ফেন্সিডিল পাচারের একটি চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ-ডিবির ডেমরা জোনাল টিম। উদ্ধার করা হয়েছে ২৫০ বোতল ফেন্সিডিল। জব্দ করা হয়েছে অ্যাম্বুলেন্সটিও।

গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানান, অ্যাম্বুলেন্সের মাধ্যমে যশোর থেকে ঢাকায় ফেন্সিডিল আনা হচ্ছে এমন একটি গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে রমনা থানাধীন হলি ফ্যামিলি হাসপাতালের সামনে ওঁত পেতে থাকে গোয়েন্দা পুলিশের ডেমরা জোনাল টিম। শনিবার (৮ মে) বিকেল সোয়া ৫টার দিকে একটি অ্যাম্বুলেন্স ওই হলি ফ্যামিলি হাসপাতালের সামনে আসলে সেটিতে তল্লাশি চালিয়ে পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলো- ইসমাইল হোসেন (৫০), দিপু রহমান (৩০), আনারুল ইসলাম (৩৪), ইকবাল হোসেন (৪৪) ও আব্দুল হাকিম (২৩)। তাদের কাছ থেকে আড়াইশ’ বোতল ফেন্সিডিল উদ্ধার করা হয়।

গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানান, গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে হাকিম বয়সে সবার ছোট হওয়ায় তাকে রোগী সাজিয়ে অ্যাম্বুলেন্সে শুইয়ে রাখা হয়েছিল। আর বাকিরা স্বজন বেশে পাশে বসেছিল। ইকবাল হলো এই অ্যাম্বুলেন্সের চালক। বাকিরা সবাই ফেন্সিডিলের ব্যবসা ও পাচারের সঙ্গে যুক্ত।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার আজহারুল ইসলাম মুকুল জানান, ঝিনাইদহের কালিগঞ্জ থানাধীন রশিদ মেম্বার নামে এক ব্যক্তি এই ফেন্সিডিলের চালানটি নিয়ে ঢাকায় আসছিল। কিন্তু গ্রেফতার অভিযানের বিষয়টি টের পেয়ে সে পালিয়ে গেছে। প্রত্যেককেই ৫ থেকে ১০ হাজার টাকার বিনিময়ে সে রোগী ও স্বজন বানিয়ে ফেন্সিডিল পাচার করছিল। রশিদ মেম্বারকে ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানান, রাজধানী ঢাকায় একটি ফেন্সিডিলের বোতল এখন ১৬শ’ থেকে ১৮শ’ টাকায় বিক্রি হয়। সীমান্তের ওপার থেকে এক থেকে দেড়শ’ টাকায় এসব ফেন্সিডিল কিনে মাদক ব্যবসায়ীরা বিপুল লাভের আশায় ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় বিক্রি করে থাকে।