ঢাকা এখন ফাঁকা

করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে সরকার ঘোষিত ‘কঠোর লকডাউন’ চলমান রয়েছে। শহরের মধ্যে গণপরিবহন চালছে। তবে শুধু চলছে না দূরপাল্লার বাস। এরমধ্যেই চলে এসেছে ঈদ। ঈদকে সামনে রেখে বিকল্প বাহন যোগে এরই মধ্যে কয়েক লাখ মানুষ ঢাকা ছেড়েছেন। নগরীর ব্যস্ততম সড়কগুলোতে এখন সুনসান নীরবতা বিরাজ করছে। যে যানজটের কারণে ঢাকার খ্যাতি বিশ্বজোড়া, যানের সেই জট এখন নগরী হতে উধাও। ফলে ঢাকা এখন ফাঁকা।

সকালে নগরীর কোথাও তেমন একটা যানবাহন দেখা যায়নি। কোথাও নেই যানজট, যান্ত্রিক শব্দ, রাস্তাঘাটে মানুষের উপচে পড়া ভিড়। মাঝে মধ্যে দুই একটি বাহন দেখা গেলেও তাতে যাত্রী নেই। ডাকাডাকি করেও বাসের হেলপাররা যাত্রী পাচ্ছে না। যানবাহন স্বল্পতায় কমে গেছে শব্দ ও বায়ু দূষণ। নগরীর মতিঝিল, গুলিস্তান, পল্টন, আরামবাগ, ফকিরাপুল, সায়েদাবাদ, কাকরাইল, শাহবাগ, বাংলামটর, কারওয়ান বাজার, পান্থপথ, ধানমন্ডি-৩২, ধানমন্ডি-২৭, শ্যামলী, মিরপুর রোড, ফার্মগেট, মানিক মিয়া অ্যাভিনিউর মতো বিভিন্ন জনবহুল এলাকা এখন ফাঁকা। রাস্তাঘাটে মানুষ কম থাকায় নগরীর সড়কে চলা বাসের সংখ্যাও ছিল কম।

ঢাকা এখন ফাঁকা

করওয়ান বাজার সার্ক ফোয়ারা মোড়ে দেখা গেছে, হুড়োহুড়ি করে ছুটে বাসে উঠার সেই দৃশ্য নেই। দুই তিন মিনিট পরপর দুই একটি বাস আসছে। তবে বাসগুলোতে যাত্রী নেই বললেই চলে। দুই চারজন যাত্রী দেখা গেলেও তাদের অনেকেই শ্রমজীবী। ডাকাডাকি করে যাত্রী তোলার চেষ্টা করছেন পরিবহনের চালক-হেলপাররা।

জানতে চাইলে মঞ্জিল এক্সপ্রেসের চালক নাজিম উদ্দিন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, রাস্তাঘাটে মানুষ নেই। অধিকাংশ মানুষ গ্রামের বাড়িতে চলে গেছে। তাই যাত্রী পাওয়া যাচ্ছে না। সকাল থেকে মাত্র ২৭০ টাকার যাত্রী পরিবহন করেছি। মালিককে কী দেবো, আর আমরা কী পাবো জানি না।

ঢাকা এখন ফাঁকা

মৎস্য ভবনও ফাঁকা অবস্থা দেখা যায়। সেখানেও কোনও মানুষ দেখা যায়নি। বাসে উঠার জন্য চিরচেনা সেই ভিড় নেই। অথচ প্রায় প্রতিদিনই এই পথে ব্যাপক যানজটের শিকার হতে হতো যাত্রীদের।

সকালে পুরান ঢাকার বাংলা বাজার থেকে বাড্ডায় এসেছেন গণমাধ্যমকর্মী মুসা আহমেদ। তিনি বলেন, অন্যদিন কমপক্ষে এক ঘণ্টার মতো সময় লাগতো। আজ মনে হচ্ছে ১৫ মিনিটের মধ্যে অফিসে পৌঁছে গেছি। রাস্তাঘাটে কোনও বাস নেই, মানুষও নেই। কোনও রকম ঝক্কি-ঝামেলা ছাড়া অফিসে চলে এসেছি।