বৃষ্টিতে পশুর বর্জ্য-রক্ত মিলেমিশে একাকার

রাজধানীতে কোরবানি শুরুর পর হঠাৎ করে বৃষ্টি হয়েছে। এতে পশুর বর্জ্য ও রক্ত একত্রিত হয়ে নোংরা পরিবেশ দেখা দিয়েছে। অধিকাংশ মানুষ রাস্তায় কোরবানি দেওয়ায় পুরো সড়ক বৃষ্টির পানির সঙ্গে মিশে রক্তবর্ণ ধারণ করেছে। এতে দুর্ভোগে পড়তে হয়েছে নগরবাসীকে। দুপুর পর্যন্ত সিটি করপোরেশনের জিবাণুনাশক বা ব্লিসিং পাউডারযুক্ত কোনও গাড়ি দেখা যায়নি। সকাল থেকে নগরীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

রাজারবাগ পুলিশ লাইনের সামনে মগবাজার মৌচাক প্লাইওভার এক্সিট প্রয়েন্টে বিপুল সংখ্যক মানুষকে রাস্তায় কোরবানি দিতে দেখা গেছে। এতে পুরো সড়কটি রক্তবর্ণ ধরণ করে। সাধারণত সামান্য বৃষ্টিপাত হলে ওই এলাকায় পানি জমে যায়। বুধবারের বৃষ্টি আর কোরবানি পশুর বর্জ্য ও রক্ত একত্রিত হয়ে পুরো সড়কটি রক্তবর্ণ ধারণ করে।

একই চিত্র দেখা গেছে সেগুনবাগিচা এলাকায়। ওই এলাকার কোরবানি দাতারা পশু জবাই দিয়েছেন বাড়ির সামনের রাস্তায়। এতে বৃষ্টির পানি আর কোরবানি পশুর বর্জ্য ও রক্ত একত্রিত হয়ে পুরো এলাকার পরিবেশ শ্রীহীন হয়ে পড়ে। রাস্তাগুলো দিয়ে চলাচল করতে দুর্ভোগে পড়তে হয়েছে সাধারণ মানুষকে। অনেকের পায়ের জুতার সঙ্গে বর্জ্য মিলে পিঠে ও জামাতে লেগে গেছে। তাতে বিরক্তি প্রকাশ করেছেন তারা।

একই চিত্র খিলগাঁও এলাকায়। এই এলাকার প্রতিটি সড়কে রক্তের কারণে চলাচল করা যাচ্ছে না।

পুরান ঢাকার চিত্রও একই। বৃষ্টির কারণে পুরো নগরীর বিভিন্ন সড়কে এমন অবস্থা দেখা গেছে।

এদিকে প্রতিবছর কোরবানি পশুর বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে নির্দিষ্ট ব্যাগ সরবরাহ করা হলেও এ বছর তা দেয়নি দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। সংস্থাটি বলছে, ব্যাগ সরবরাহ করলেও তা কেউ ব্যবহার করেন না। আর নগরবাসী বলছেন ব্যাগ দেওয়া হলে পশুর বর্জ্য ব্যাগে রাখা যেত।

আরামবাগের বাসিন্দা হাজী আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘কোরবানি দেওয়ার জন্য নির্দিষ্ট কোনও জায়গা নেই। ফলে রাস্তায় কোরবানি দিতে হয়েছে। বৃষ্টি আসার কারণে বর্জ্য আর রক্ত একাকার হয়ে পড়েছে। রাস্তায় হাঁটা যাচ্ছে না। সিটি করপোরেশন যদি দ্রুত ব্যবস্থা না নেয় তাহলে দুর্গন্ধ ছড়াবে।’

এদিকে সকালে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস নগরবাসীকে অনুরোধ করে বলেন, ‘আপনারা কোরবানির বর্জ্য আমাদের নির্ধারিত স্থান ও সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের হাতে দিন। যাতে করে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে শহর থেকে সব বর্জ্য অপসারণ করতে পারি।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের বিশাল জনবল আজ থেকে মাঠে কাজ করবে। আমরা একটি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন শহর যেন ঢাকাবাসীকে উপহার দিতে পারি।’

এদিকে দুপুর দুইটা থেকে এসব বর্জ্য অপসারণে মাঠে নামবে দুই সিটি করপোরেশনের প্রায় সাড়ে ২১ হাজার কর্মী। পাশাপাশি বর্জ্য ধুয়ে পরিষ্কার করার জন্য বেশ কিছু জিবাণুনাশক যুক্ত গাড়ি দিয়ে ধোয়া হবে।