ঢাকায় শুরু হলো রোহিঙ্গাদের শিল্প ও সংস্কৃতি বিষয়ক প্রদর্শনী

রোহিঙ্গাদের স্মৃতি, অভিজ্ঞতা এবং প্রত্যাশার প্রতিনিধিত্বকারী ১০০ সাংস্কৃতিক পণ্য এবং শিল্পকর্ম নিয়ে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটিতে শুরু হলো সপ্তাহব্যাপী প্রদর্শনী। আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) এবং সেন্টার ফর পিস স্টাডিজ (সিপিএস) অব দ্য সাউথ এশিয়ান ইনস্টিটিউট অব পলিসি অ্যান্ড গভর্নেন্স (এসআইপিজি) অব নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি (এনএসইউ) -এর আয়োজনে রবিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) শুরু হওয়া প্রদর্শনীটি চলবে ২৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত।

আইওএম’র রোহিঙ্গা কালচারাল মেমরি সেন্টার (আরসিএমসি)-এর সঙ্গে যুক্ত রোহিঙ্গা কারিগরেরা হাতে তৈরি এসব প্রদর্শনীপণ্য প্রস্তুত করেছেন নেদারল্যান্ড দূতাবাসের সহায়তায়। প্রদর্শনীটি রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ঐতিহ্যকে বৃহৎ পরিসরে সংরক্ষণে আরসিএমসি’র চলমান উদ্যোগের অংশ।

আইওএম বাংলাদেশের মিশন প্রধান গিওরগি গিগাওরি বলেন, ‘এই প্রদর্শনীটির লক্ষ্য হচ্ছে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ঐতিহ্যের সৌন্দর্য এবং এর বিভিন্ন দিক প্রদর্শনের মাধ্যমে সম্প্রদায়কে ক্ষমতায়িত করা। এর সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য যেন পরবর্তী প্রজন্মের মধ্যেও চলমান থাকে তা নিশ্চিত করা। আরসিএমসি প্লাটফর্মটি রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর গল্প বিশ্বব্যাপী মানুষের কাছে তুলে ধরতে এবং অভিবাসীদের সঙ্গে যুক্ত করতে সহযোগিতা করছে।‘

আয়োজকরা জানান, প্রদর্শনীর সংগ্রহের মধ্যে ‘মিয়ানমার লাইফ’, ‘ক্যাম্প লাইফ’ এবং ‘ফিউচার লাইফ’ শিরোনামের চিত্রকর্মগুলো রোহিঙ্গাদের অতীত, বর্তমান এবং ভবিষ্যতকে চিত্রিত করে। ঐতিহ্যবাহী ঘর, নৌকা এবং আসবাবপত্রের স্কেল মডেলগুলো আরাকানের (বর্তমান রাখাইন) দৈনন্দিন জীবনকে তুলে ধরে। কৃষিকাজ, মাছধরা, এবং গৃহস্থালী কর্মের বিভিন্ন যন্ত্র তাদের ঐতিহ্যগত জীবিকা এবং কারুশিল্পের দক্ষতা নির্দেশ করে। এছাড়া ক্যাম্পের ভিডিওগুলো রোহিঙ্গা কারিগরদের গল্প বলে। 

বাংলাদেশে জাতিসংঘের রেসিডেন্ট কো-অর্ডিনেটর ‍মিয়া সেপ্পো বলেন, রোহিঙ্গা কালচালার মেমরি সেন্টার এবং এ জাতীয় যত প্রয়াস আছে সেসবের চূড়ান্ত লক্ষ্য হচ্ছে বস্তুগত এবং অধরা ঐতিহ্যকে সংরক্ষণ করা যা রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর শিশু-কিশোরদের সাংস্কৃতিক পরিচয় নিশ্চিত করবে এবং মাতৃভূমির সঙ্গে তাদের বন্ধন দৃঢ় করবে।

প্রদর্শনীটি নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফটো গ্যালারিতে প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে। এই প্রদর্শনীটির পরে শিল্পকর্মগুলো নেদারল্যান্ডে নিয়ে যাওয়া হবে ইউনিভার্সিটি অব আমস্টারডামে আরেকটি প্রদর্শনীর জন্য। সীমিত আকারের একটি সংস্করণ নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকবে তাদের গবেষণা কর্মসূচির জন্য।

প্রসঙ্গত, বর্তমানে প্রায় দশ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থী কক্সবাজারের বিভিন্ন ক্যাম্পে বসবাস করছে। আরসিএমসি রোহিঙ্গাদের আর্ট থেরাপি দেওয়ার মধ্য দিয়ে তাদের সুরক্ষা এবং দক্ষতা বিকাশে সহায়তা করছে। পেশাদার মানসিক স্বাস্থ্যকর্মীদের দ্বারা এই কাজটি করে প্রতিষ্ঠানটি।