‘একটা মানুষ কতটা অসহায় হ‌লে এমন কাজ কর‌তে পা‌রে’

রাজধানীর বাড্ডা লিংক রোড এলাকায় রাইড শেয়ারিং অ্যাপ পাঠাওয়ের এক মোটরসাইকেলচালক ট্রাফিক পুলিশের উপর ক্ষুব্ধ হয়ে নিজের মোটরসাইকেলে নিজেই আগুন দিয়েছেন। ঘটনাটি এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল। লোকজন বিভিন্নভাবে পোস্ট করে নিজেদের অভিজ্ঞতা জানাচ্ছে। এ বিষয়ে বাংলা ট্রিবিউনের একটি প্রতিবেদনের মতামত অপশনে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন পাঠকরা।

সেখানে একজন লিখেছেন, “ওইখানে দাঁড়াবে না কেন? এটা কোন ধরনের প্রটোকল? কাগজপত্র নিয়ে তার কাছ থেকে পাঁচ -আট মিটার দূরে চলে গেছে সার্জেন্ট। কোথায় দেখতে চাইলো? আর আপনাদের ব্যবহার কতটা ভালো এদেশের জনগণের কাছে নতুন নয়।‌’

রহিদুল খান নামের একজন পাঠক লিখেছেন, ‘একটা মানুষ কতটা অসহায় হ‌লে এমন কাজ কর‌তে পা‌রে- সেটা ভাবার বিষয়। পু‌লিশ ভাই‌য়েরা যত সহ‌জে কথাটা বল‌ছেন ব‌্যাপারটা তত সহজ না। পু‌লি‌শের সাম‌নে দি‌য়ে ভাং‌ড়ি বাস, ট্রাক সব চ‌লে যায় মামলা খায় কেবল মটরসাই‌কেল চালকরা। ম‌নে হয় দে‌শে মোটরসাই‌কেল ছাড়া আর কোনও অপরা‌ধী নেই!”

আরেকজন লিখেছেন, ‘ট্রাফিক সদস্যদের বলা ছিল- কোনও মোটরসাইকেল সকালবেলা সেখানে দাঁড়াবে না’... তাহলে তার কাগজপত্র চেক করার দরকার কি ছিল...? তাকে মৌখিকভাবে নিষেধ করলেই হতো...’

আরেকজন লিখেছেন, ‘কতটুকু জুলুমের শিকার হলে নিজের গাড়িতে নিজে আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেয় বুঝতে হবে। তাও আবার রাইড শেয়ারিং-এর চালক। অধিকাংশই যারা পেটের দায়ে রাইড শেয়ারিং এর কাজ করে। দায়ী পুলিশদের বিরুদ্ধে কঠোর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’

ফাহাদ মাহরেজ নামে একজন বাংলা ট্রিবিউনের ফেসবুক পেজের মতামত-এ লিখেছেন, ‘দুই মাস আগে লকডাউন চলাকালীন সময়ে একটা জরুরি কাজে ঘর থেকে বের হয়েছিলাম, গাড়ি পার্ক করে কাজটা সারতে পারিনি সার্জেন্ট এসে চাবি খোঁজা শুরু করছে। গাড়ির কাগজ, হেলমেট, লাইসেন্স সবকিছু থাকা সত্ত্বেও ‘Government order violence’ লিখে ৩ হাজার টাকার মামলা দেয় আমাকে। একে তো লকডাউনে ব্যবসা-বাণিজ্য কিছুই নাই, অনেক রিকোয়েস্ট করলাম যে- ভাই, জরুরি কাজে বেরিয়েছি, এক্ষুনি বাসায় চলে যাবো। তাও মামলা দিল, এই লকডাউনে ৩ হাজার টাকা দিয়ে মামলা ওঠাতে কলিজায় লাগছিল, সারা মাসে ইনকাম হয় না ১০ হাজার টাকা আর এরা ৫ মিনিটেই পকেট ফাঁকা করে দেয়। সেদিনই প্রতিজ্ঞা করেছিলাম, এই দেশ থেকে যেদিন বেরিয়ে যাবো সেদিন হবে এই দেশটাকে শেষবারের মতো দেখা, আর কোনোদিন এদেশে ফিরে আসবো না।...’

ভিডিওচিত্রে দেখা যায়, ওই মোটরসাইকেল চালক ট্রাফিক সংক্রান্ত কোনও মামলার বিষয় নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছেন। ওই প্রতিক্রিয়ার এক পর্যায়ে তিনি নিজের মোটরসাইকেলে পেট্রোল ছড়িয়ে আগুন ধরিয়ে দেন। আশেপাশে থাকা লোকজন মোটরসাইকেলে পানি ঢেলে আগুন নেভানোর চেষ্টা করলে এতে ওই চালক বাধা দেন। তিনি আরও পেট্রোল ঢেলে দিলে মোটরসাইকেলটিতে দাউ-দাউ করে আগুন জ্বলতে দেখা যায়।

এ বিষয়ে বাড্ডা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদ বলেন, ওই ব্যক্তি রাজধানীর লিংক রোড এলাকায় ট্রাফিক আইন অমান্য করায় দায়িত্বরত একজন ট্রাফিক সার্জেন্ট তার কাগজপত্র দেখতে চান। এর পরিপ্রেক্ষিতে সে ক্ষুব্ধ হয়ে নিজের মোটরসাইকেল আগুন ধরিয়ে দেয়। পরে পুলিশ তাকে থামিয়ে মোটরসাইকেলটির আগুন নেভায়।