গ্যাসে চলা বাসও নিচ্ছে বাড়তি ভাড়া

জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর পর পরিবহন ধর্মঘটের মুখে গণপরিবহনের ভাড়া বাড়িয়েছে সরকার। সরকার শুধু ডিজেলচালিত বাসের ভাড়া বাড়ালেও রাজধানীতে সিএনজিচালিত বাসগুলোও নিচ্ছে বাড়তি ভাড়া। বাড়তি ভাড়া নিতে যাত্রীদের সঙ্গে বিতণ্ডা করছেন পরিবহন শ্রমিকরা।

জানা গেছে, ঢাকায় মাত্র ৫ শতাংশ বাস ডিজেলে চলে, বাকি বাস চলে সিএনজিতে। যদিও ডিজেল ও কেরোসিনের দাম বাড়ানোর প্রতিবাদে এসব বাসগুলোও ধর্মঘটে বন্ধ থাকে। সরকার সিএনজিচালিত বাসের ভাড়া না বাড়ালেও তারা অতিরিক্ত ভাড়া নিচ্ছে। সরকার ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরে ভাড়া কিলোমিটার প্রতি এক টাকা ৭০ পয়সা থেকে বাড়িয়ে দুই টাকা ১৫ পয়সা করা হয়েছে। মহানগরে চলা মিনিবাসের ভাড়া এক টাকা ৬০ পয়সা থেকে বাড়িয়ে দুই টাকা পাঁচ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে। সর্বনিম্ন ভাড়া ৭ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১০ টাকা করা হয়েছে। ফলে যাত্রীকে এক কিলিমিটার পথ গেলেও বাসে উঠলেই ১০ টাকা ভাড়া দিতে হবে। আর মিনিবাসের ন্যূনতম ভাড়া ৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৮ টাকা করা হয়েছে।

সজীব চৌধুরী বলেন, ‘বিমানবন্দর থেকে নতুন বাজারের দূরত্ব প্রায় ৭ কিলোমিটার। কিন্তু ভাড়া নিচ্ছে ৩৫ টাকা। এটা কোনোভাবেই যৌক্তিক নয়।’

বাসগুলো ইচ্ছা মতো ভাড়া নিচ্ছে। কিলোমিটার প্রতি হিসাব করে ভাড়া নিচ্ছে না। যাত্রী অরূপ চৌধুরী বলেন, ‘রাইদা বাসে যাত্রাবাড়ী থেকে উত্তরার ভাড়া ছিল ৫০ টাকা। ভাড়া ২৭ শতাংশ বাড়ালে হয় ৬৩.৫ টাকা। কিন্তু ৭০ টাকা ভাড়া নিচ্ছে। বাসের কন্ট্রাক্টর বলছে, সরকার আর কোম্পানি ভাড়া বাড়িয়েছে। কারও কোনও নজিরদারি না থাকায় এমন পরিস্থিতি হয়েছে। শুধু তাই নয় কোনও প্রশ্ন করলে খারাপ ব্যবহার করছে বাসের কন্ট্রাক্টরা।’

মালিকপক্ষ যেভাবে ভাড়া আদায় করতে বলছে, সেভাবে ভাড়া নেওয়া হচ্ছে বলে জানালেন পরিবহন শ্রমিকরা। কয়েকটি বাসের কন্ট্রাক্টর বলেন, ‘আমরা মালিকের চাকরি করি, যেভাবে ভাড়া নিতে বলবেন, আমাদের তো সেভাবেই নিতে হবে। কিন্তু যাত্রীদের সঙ্গে আমাদের ঝামেলা হচ্ছে।’

হাতিরঝিল চক্রাকার বাস সার্ভিস  ৫০ শতাংশ ভাড়া বৃদ্ধি করেছে বলে অভিযোগ যাত্রীদের। রফিকুল ইসলাম নামে এক যাত্রী বলেন, ‘গতকাল দুপুরে রামপুরা থেকে ১০ টাকা দিয়ে বউবাজার আসছিলাম। আজ সকালে ১৫ টাকা দিয়ে আসতে বাধ্য হয়েছি। মানে ৫০ ভাড়া বাড়লো। যে যেমন পারছে, সুযোগ নিচ্ছে।’

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, ‘সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে পরিবহন ধর্মঘট হয়েছে। আর সেই পরিবহন মালিকদের কথা মতো ভাড়া বাড়লো। এই মালিকরা তাদের ইচ্ছে মতো চলেন। যখন সরকার গ্যাসের দাম বাড়ায়, তখন সব বাস গ্যাসে চলে। ডিজেলের দাম বাড়ানো হয়েছে, এখন বাস মালিকরা দাবি করছে, সব বাস ডিজেলচালিত। মূলত ঢাকায় ৯৫ শতাংশ বাস গ্যাসে চলে।’