বেনিনে শহীদ ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে স্মরণ

জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশন সমাপ্ত করে দেশে ফেরার পথে ২০০৩ সালের ২৫ ডিসেম্বর পশ্চিম আফ্রিকার বেনিন সাগর উপকূলে বিমান দুর্ঘটনায় শহীদ বাংলাদেশি ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে স্মরণ করা হয়েছে।

শনিবার (২৫ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বেনিন শহীদ শান্তিসেনা দিবসের ১৮তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে স্মরণ সমাবেশটি আয়োজন করা হয়। সভাটি আয়োজন করে কোয়ালিশন অব লোকাল এনজিও'স, বাংলাদেশ (সিএলএনএনবি)।

বক্তারা বলেন, বিশ্বের সংঘাতময় অঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশের শান্তিসেনাদের আত্মত্যাগ বিশ্বে সর্বজনস্বীকৃত। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক সামরিক ও পুলিশ সদস্য প্রেরণকারী দেশ বাংলাদেশ। বাংলাদেশের প্রায় সাড়ে সাত হাজার শান্তিরক্ষী জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে দায়িত্ব পালন করছেন। এই বছরের জুন মাস পর্যন্ত বিশ্বের ৪০টি দেশে প্রায় পৌনে দুই লাখ বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমানে বিশ্বের প্রায় ১১টি দেশে বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীরা দায়িত্ব পালন করছেন।

বক্তারা আরও বলেন, “এ পর্যন্ত সংঘাতময় দেশে শান্তি স্থাপন করতে গিয়ে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী ও বাংলাদেশ পুলিশের ১৫৯ জনকে প্রাণ বিসর্জন দিতে হয়েছে। আমরা এই শান্তিরক্ষী সেনাসহ শান্তিরক্ষা মিশনে নিহত-মৃত্যুবরণকারী দেশের সকল শান্তি সেনা ও মুক্তিযুদ্ধের সকল শহীদদের রুহের মাগফেরাত কামনা করছি।"

তারা বলেন, আজ বেনিন শহীদ শান্তিসেনা দিবসের ১৮তম বর্ষপূর্তি। ২০০৩ সালের ২৫ ডিসেম্বর পশ্চিম আফ্রিকার দেশ লাইবেরিয়া ও সিয়েরালিওন থেকে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশন সমাপ্ত করে দেশে ফেরার পথে বেনিন সাগর উপকূলে এক মর্মান্তিক বিমান দুর্ঘটনায় শহীদ হন বাংলাদেশের ১৫ সেনা কর্মকর্তা। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে কর্মরত অবস্থায় বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনী ও বাংলাদেশ পুলিশের আত্মদানের স্বীকৃতি স্বরূপ বাংলাদেশের শান্তি রক্ষা মিশন দ্যাগ হেমারশোল্ড জাতিসংঘ শান্তি পুরস্কার লাভ করেছে।

'আমরা আশা করি, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে অবদানের জন্য বাংলাদেশ একদিন নোবেল শান্তি পুরস্কার অর্জন করবে।'

স্মরণসভায় হারুনুর রশিদের সঞ্চালনায় সভাপতিত্ব করেন সিএলএনবি'র নির্বাহী চেয়ারম্যান উন্নয়নকর্মী নাজমা আক্তার। এসময় বক্তব্য রাখেন সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী কে. এম. জাবির, কর্নেল (অব.) আশরাফ উদ্দিন, নাগরিক পরিষদের আহ্বায়ক মোহাম্মদ শামসুদ্দিন, শ্রমিক নেতা এ.এ.এম ফয়েজ হোসেন, বজলুর রহমান বাবলু, শ্রমিক নেত্রী কামরুননাহার, গ্রাম পুলিশ কর্মচারী ইউনিয়ন সভাপতি কমান্ডার মোস্তফা, গ্রাম পুলিশ নেত্রী মৌসুমি প্রমুখ।

প্রসঙ্গত, বেনিনে দুর্ঘটনায় নিহত সেনা কর্মকর্তারা হলেন লে. কর্নেল আরেফিন, মেজর রওনক, মেজর রহিম, মেজর মুস্তাফিজ, মেজর মোশাররফ, মেজর ইমতিয়াজ, মেজর বাতেন, ক্যাপ্টেন আব্দুল মাবুদ, ক্যাপ্টেন রাকিব, ক্যাপ্টেন আরিফ, ক্যাপ্টেন রফিক, ক্যাপ্টেন ফরিদ, ক্যাপ্টেন জাহিদ, ক্যাপ্টেন আলাউদ্দিন ও সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার শফিক।