পথেই তাদের ঈদ বোনাস

যাত্রীদের কাছ থেকে চেয়ে ১০-২০ টাকা নিয়েই ঈদের বোনাসের হিসাব মেলান তারা। আর এই বোনাসের আশায় ঈদের দিনও স্টিয়ারিং হাতে তারা নেমে পড়েন রাস্তায়। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে রিকশা, সিএনজি অটোরিকশা ও বাস-শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেলো তাদের বোনাস-বৃত্তান্ত।

রিকশাচালক সুমন জানান, গতকাল (৩ মে) ঈদে হাজার টাকার ট্রিপে বোনাস পেয়েছেন ২০০ টাকা।

তিনি বলেন, ‘ঈদের জন্য কিছু টাকা বেশি চাই। অনেকে দেয়। অনেকে দেয় না। অনেককে আবার বলতেও হয় না।'

রিকশাচালক মতলব খাঁ বলেন, ‘আমাকে কয়েকজন তরুণ ৫০০ টাকা বকশিশ দিয়েছে। এবার ঈদে দুই হাজার টাকার মতো শুধু বকশিশই পেয়েছি।'

গৃহশ্রমিকরা আরও বেশি বোনাস পান মন্তব্য করে মতলব খাঁ জানালেন, তার স্ত্রী তিন বাড়িতে কাজ করেই ১০ হাজার টাকা বকশিশ পেয়েছে। সঙ্গে দুটি শাড়িও।

সিএনজি অটোরিকশা চালকদের সঙ্গে কথা বলে বোঝা গেলো, বোনাসের দৌড়ে তারা বেশ পিছিয়ে। বকশিশ তো দূরে থাক, ভাড়া নিয়েই বিস্তর অভিযোগ তাদের।

সিএনজি অটোচালক আবদুর রহমান বললেন, ‘বোনাস দেবে কি! রাস্তা ফাঁকা থাকার কথা বলে ভাড়াও কম দিতে চায়। মহাখালী থেকে বনানী কবরস্থান ১৫০ টাকা ঠিক করে পরে ১২০ টাকা দিয়েছে।’

দুই-একজন ছাড়া আর কেউ বকশিশ দেয়নি বলে জানান আবদুর রহমান।

বাসের চালক-হেলপাররা ঈদ বকশিশ নেওয়া শুরু করেছেন ঈদের দুই দিন আগ থেকেই। ভাড়া থেকে ৫-১০ টাকা বেশি চেয়ে নিয়েছেন তারা। এ নিয়ে বেশিরভাগ যাত্রীর অভিযোগ ছিল না বলেও জানান তারা।

IMG_20220504_133027

‘ইতিহাস’ বাসের সহকারী মাসুদ রানা বলেন, করোনায় এমনিতে সবার অনেক ক্ষতি হয়েছে। তাই যারা দেওয়ার দিয়েছে, যারা দেয়নি, তাদের কাছে চাইনি।

‘অছিম’ বাসের সহকারী নাজমুল বলেন, ‘এবার যাত্রী তিন ভাগের একভাগও নাই। সবাই মনে হয় ঢাকা ছাড়ছে।’

বকশিশ প্রশ্নে বাসযাত্রী মুয়াজ বলেন, ‘ঈদ বকশিশ একজন আরেকজনকে দেয় মন থেকে। বাসগুলোতে বকশিশের ভার রীতিমতো চাপিয়ে দেওয়া হয়। আমরা তো দিনে একটা বাসে উঠি না। প্রত্যেক বাসেই একই কাহিনি। রিকশাতেও তাই। কয়জনকে দেওয়া যায়?’